ক্রাইম পেট্রোল ডট নিউজঃ ২৬ জুলাই, ২০২০ইং
পর্বঃ২
মোঃ জিল্লুর খান (সিনিয়র রিপোর্টার)
বাংলাদেশ থেকে একটি অসাধূচক্র দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে জাল সার্টিফিকেট ব্যবহার করে বেইজিংয়ে কাঁকড়া-কুচিয়া রপ্তানি করে। এতে এই শিল্পটি ধ্বংসের কবলে পরেছে। এ প্রসঙ্গে বেইজিং হতে বাংলাদেশ মৎস্য অধিদপ্তরে উক্ত জাল সার্টিফিকেট সহ প্রয়োজনীয় প্রমান পত্র প্রেরণ করে। মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোঃ রমজান আলীর নেতৃত্বে উপ-পরিচালক মোঃ ইউসুফ খান ভেটেনারি হাসপাতালে গিয়ে যাচাই-বাছাই করে দেখেন, যে স্বাক্ষর ও সিল ব্যবহার করে ভূয়া সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছিল ওই নামে আদৌ কোন অফিসার প্রতিষ্ঠানে নেই। ভুয়া সার্টিফিকেট দাখিল করে কাঁকড়া-কুচিয়া রপ্তানি করায় ইতিমধ্যে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের নামে মৎস্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ খান তুরাগ থানায় বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।মামলায় সুরমা সি ফুড, ইকো ফ্রেশ ইন্টারন্যাশনাল, তমা এন্টারপ্রাইজ, অর্কিড ট্রেডিং কর্পোরেশন ও গাজী’স ড্রিম কে মামলার আসামি করা হয়েছে। যার মামলা নম্বর – ০৮, তারিখ ১২/০৭/২০২০ ইং।
দুর্নীতি ও অনিয়ম করে দীর্ঘ ১৬/১৭ বছর কাঁকড়া-কুচিয়া রপ্তানি করে আসছে এ চক্রটি। চক্রটিকে সম্পূর্ণ সাপোর্ট দিয়ে আসছে “বাংলাদেশ লাইভ এন্ড চিল্ড ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে”র কয়েকজন কর্তাব্যক্তি। শুধু তাই নয় কাঁকড়া রপ্তানির জন্য বিমান কর্তৃপক্ষের কাছে স্পেস ভাড়া নিতে হয়। ব্যবসায়ীদের ১৫ টাকার স্পেস ভাড়া নিতে হয় ২৫ টাকায়। অনুসন্ধানে দেখা যায় সরকারিভাবে প্রায় ১৬৫ টি কোম্পানির লাইসেন্স দেয়া হলেও বাস্তবে কার্যক্রম আছে মাত্র ৬৫/৭০ টি। যে সমস্ত কোম্পানি গুলোর কোন কার্যক্রম নেই এগুলোর মালিকানা “বাংলাদেশ লাইভ এন্ড চিল্ড ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে”র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের নামে।
বাংলাদেশ থেকে যত মাছ, কাঁকড়া ও কুচিয়া বিদেশে রপ্তানি হবে নিয়মানুযায়ী মৎস্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। কিন্তু “বাংলাদেশ লাইভ এন্ড চিল্ড ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে”র চেয়ারম্যান ও সেক্রেটারি এ নিয়মের কোন তোয়াক্কাই করেনা। অনুসন্ধানে জানা গেছে অনিয়ম-দুর্নীতি জালিয়াতি ও ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সংগঠনটির সভাপতি ও সেক্রেটারী মোঃ কাজী মাহবুবুল আলম আজাদ।
গেল অর্থ বছরে তিন হাজার নয় শত পঁচাশি কোটি টাকার কাঁকড়া ও কুচিয়া মাছ বিদেশে রপ্তানি করা হয়েছে। অথচ জাল সার্টিফিকেট এর মাধ্যমে বেইজিংয়ে যে কাঁকড়া ও কুচিয়া রপ্তানি করা হয়েছিল তাতে বিষাক্ত জাতীয় একটি পদার্থ (মানবদেহের মারাত্মক ক্ষতিকর) পাওয়া গিয়েছে। এতে চীন বাংলাদেশ থেকে কাঁকড়া ও কুচিয়া মাছ নিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। ফলে কোটি কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। ধ্বংস হচ্ছে এ খাতটি।
“বাংলাদেশ লাইভ এন্ড চিল্ড ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে”র সেক্রেটারী জেনারেল মোঃ কাজী মাহবুবুল আলম আজাদ আওমালীগের নাম ভাঙ্গিয়ে এবং তার ভাই একজন সংসদ সদস্য এ পরিচয় দিয়ে এহেন কর্মকাণ্ড করে আসছে।
জানা গেছে, এ দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরূদ্ধে মামলা করায় ইতোমধ্যে বাংলাদেশ মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোঃ রমজান আলী ও উপ-পরিচালক মোঃ ইউসুফ খানের নামে উল্টো মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেছে “বাংলাদেশ লাইভ এন্ড চিল্ড ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে”র সেক্রেটারী জেনারেল মোঃ কাজী মাহবুবুল আলম আজাদ।
এ ব্যাপারে “বাংলাদেশ লাইভ এন্ড চিল্ড ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে”র সেক্রেটারী জেনারেল মোঃ কাজী মাহবুবুল আলম আজাদ কে মুঠোফোনে এসকল বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সমস্ত তথ্য মিথ্যে বলে ক্রাইম পেট্রোল ডট নিউজ কে জানান।