“শক্তি থাকলেই সেরা হওয়া যায়” শিরোনামে লিখতে গিয়ে আমি একটি গল্প দিয়ে শুরু করলাম। গল্পটি দুই বন্ধু এবং কসাইকে নিয়ে। দুই বন্ধু একজন হিন্দু আরেকজন মুসলিম। একদিন দুজনে একটি গাছের নিচে বিশ্রাম নিচ্ছিল। এমন সময় গাছের ডালে একটি পাখি কট কট কট করে ডাকছিল। মুসলিম বন্ধু হিন্দু বন্ধুকে জিজ্ঞেস করল- বলতো, পাখিটি কি বলে ডাকছে? হিন্দু বন্ধু জবাব দিল পাখিটি হিন্দু তাই রাম-ল²ন-সীতা বলে ডাকছে। মুসলিম বন্ধু বলল- পাখিটি মুসলিম তাই আল্লাহ-রাসুল-খোদা বলে ডাকছে। এ নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে ঝগড়ার এক পর্যায়ে এক কসাই এসে উপস্থিত। তিনি জিজ্ঞেস করলেন তোমরা ঝগড়া করছো কেন? তখন দুই বন্ধু তাদের কথা কসাইকে বলল। এবার কসাই বলল- তোমাদের দুজনের কথাই ভুল। পাখিটি পেয়াজ-রসুন-আদা বলে ডাকছে। তখন দুই বন্ধু কসাইয়ের উপর চড়াও হলে কসাই ব্যাগ থেকে চাপাতি বের করে বলল- বল, আমারটাই সত্য। তখন দুই বন্ধু কসাইয়ের চাপাতির ভয়ে বলল- পাখিটি পেয়াজ-রসুন-আদা বলে ডাকছে, তোমারটাই সত্য।
আমরা লক্ষ্য করছি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকা যুদ্ধবিধি লঙ্ঘন করে জাপানের হিরোশিমা শহরে বেসামরিক লোকের উপর মরনঘাতি বোমা নিক্ষেপ করে বহু প্রাণহানী ঘটায় এবং শহরটি ধ্বংসস্তুপে পরিণত করে। এতবড় একটি অমানবিক ঘটনায় বিশ্বের কোন দেশ কথা বলার সাহস পায় না। আমেরিকা সামরিক ঘাটিতে বোমাটি নিক্ষেপ না করে বেসামরিক লোকের উপর নিক্ষেপ করল কেন তা আমরা সহজে উপলব্ধি করতে পারি। আমেরিকা প্রমাণ করে দিল তারা বিশ্বশক্তিধর এবং বিশ্বসেরা। কে মরল কে বাঁচল তা তাদের মুখ্য বিষয় ছিল না। সেরা হওয়াই ছিল মুখ্য বিষয়।
বিশ্ব আজ মরনঘাতি করোনার থাবায় বিপর্যস্ত। আমেরিকসহ অনেক দেশ এ ব্যাপারে চীনকে দোষারোপ করে আসছে। জাপানের একজন ভাইরাস বিজ্ঞানী শতভাগ চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে চীনকেই এই ঘটনার জন্য দায়ী করেছে। তাহলে এ ভাইরাস চীন-আমেরিকার অর্থনৈতিক বাণিজ্য যুদ্ধের অংশ নয়তো? চীনকি বিশ্বসেরা হওয়ার জন্য এ কাজটি করেছে? কসাই যেমন তার চাপাতির শক্তি দেখিয়ে হিন্দু মুসলিম দুই বন্ধুর কথাকে মিথ্যা প্রমাণ করে নিজের কথাকে প্রতিষ্ঠিত করেছিল অর্থাৎ সেরা হয়েছিল, তদরূপ চীন কি সেরা হতে চায়? আমি বলব, সেরা হওয়ার প্রতিযোগিতায় আপনারা আমাদের ধ্বংস করবেন না। আপনাদের শক্তিধর দেশের রাজনীতি আমাদের যেন ক্ষতির কারণ না হয়। মূলত: শক্তি থাকলেই সেরা হওয়া যায়।