” সহিংসতা ও সংঘাত এড়াতে হলে নির্বাচনের আগে সরকারকে বিরোধী দলগুলোর দাবি মানতে হবে” ঃ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ক্রাইম পেট্রোল ক্রাইম পেট্রোল News প্রকাশিত: ১১:০১ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৯, ২০২৩ স্টাফ রিপোর্টার ঃ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “সহিংসতা ও সংঘাত এড়াতে হলে, আগামী সাধারণ নির্বাচনের আগে সরকারকে বিরোধী দলগুলোর দাবি মানতে হবে।” শনিবার (৮ এপ্রিল) রাজধানী ঢাকার গুলশানে, বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেনে বিএনপি মহাসচিব। “গণতন্ত্রের অনুপস্থিতিতে উন্নয়ন কখনোই সর্বজনীন হতে পারে না;” রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের এমন মন্তব্যের প্রশংসা করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, “সরকার যদি সংঘাত এড়াতে চায় এবং এগিয়ে যেতে চায়, তাহলে প্রথমেই বিরোধী দলগুলোর দাবি পূরণ করতে হবে। অন্য কথায়, পদত্যাগ করতে হবে, আলোচনার পথ প্রশস্ত করতে হবে।” বিএনপি মহাসচিব বলেন, “রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে বিএনপি সব কৌশল ব্যবহার করেছে; কিন্তু সরকারের সদিচ্ছা ছাড়া সমাধান সম্ভব নয়।” তিনি বলেন, “সরকারের প্রতিশ্রুতির প্রতি আস্থা রেখে বিএনপি ২০১৮ সালের নির্বাচনে যোগ দিয়েছিলো; পরে ভয়াবহ পরিণতির মুখোমুখি হয়েছে।” মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উল্লেখ করেন যে দেশে একটি বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করতে তাদের দল দীর্ঘদিন ধরে সরকারকে পদত্যাগ করতে এবং নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে আলোচনার জন্য পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়ে আসছে। এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের দল ক্ষমতা ছাড়ার ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত সরকারের সঙ্গে কোনো সংলাপে বসবে না। তিনি বলেন, “তাদের (সরকার) বিশ্বাস করার প্রশ্নই আসে না। প্রথমে তাদের পদত্যাগের ঘোষণা দিতে হবে এবং তারপর সংলাপের পদক্ষেপ নিতে হবে।” জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সংসদে দেয়া রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের স্মারক ভাষণের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে, বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা রাষ্ট্রপতিকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু সাংবিধানিকভাবে তার তেমন ক্ষমতা নেই। আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা সুখকর ছিলো না।” তিনি বলেন, “খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে তার বিএনপি যখন বিরোধী দল ছিলো, তখন রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তিনি আমাদের কোনো প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে পারেননি। তার সেই ক্ষমতা নেই।” মির্জা ফখরুল বলেন, “রাষ্ট্রপতি সংসদে সরকারের ঐতিহ্যগতভাবে লিখিত ভাষণ পড়ে শোনান। আমি বলি, ব্যক্তিগতভাবে আমি একটা বিষয় পছন্দ করি; তিনি বলেছিলেন যে গণতন্ত্র ছাড়া উন্নয়ন সর্বজনীন নয়।আরেকটি ভালো কথা তিনি বলেছেন; সংঘাত ও প্রতিহিংসার মাধ্যমে কখনো গণতন্ত্র চর্চা করা যায় না। এই শব্দগুলো ভাল।” আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রের চর্চা না করে ধ্বংসের চেষ্টা করছে বলে দুঃখ প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল। সহিংসতা এড়িয়ে আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতন্ত্র সুসংহত করার কোনো সুযোগ আছে কি না জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এটা সম্পূর্ণভাবে সরকারের ওপর নির্ভর করছে।” তিনি বলেন, “বর্তমান সংসদ সম্পূর্ণ অকার্যকর হয়ে পড়েছে এবং সেখানে গুরুত্বপূর্ণ জনসমস্যা নিয়ে আলোচনা হয় না। একজন ব্যক্তি সেখানে সর্বেসর্বা। এটি একটি অনির্বাচিত সংসদ।” জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ফরিদুজ্জামান ফরহাদ জানান, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীনে নির্বাচন, সরকারের পদত্যাগসহ তাদের ১০ দফা দাবি আদায়ে চলমান আন্দোলন জোরদার করার কৌশল নিয়ে তারা বিএনপি নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “নির্দলীয় নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীনে দেশে একটি বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করতে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।” SHARES রাজনীতি বিষয়: