তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস

প্রকাশিত: ৩:১৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১০, ২০২৩

১০ জানুয়ারি ২০২৩

নিজস্ব প্রতিনিধি

দেশের সর্বোত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে টানা চার দিনের মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পর সোমবার শুরু হয়েছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলায় সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি এই মৌসুমে সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এদিকে টানা চারদিন পর সোমবার দুপুরে ঝলমলে রোদের দেখা মিলেছে রাজধানীতে। শীতের তীব্রতাও কিছুটা কমেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এদিন ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস আর সর্বোচ্চ ২১ দশমিক দুই। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে শীতে মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়েছে।

পঞ্চগড় : শৈত্যপ্রবাহের পাশাপাশি ঘনকুয়াশায় আচ্ছন্ন পুরো জেলা। দুপুরে কিছুটা সূর্যের মুখ দেখা গেলেও উত্তাপ ছড়াতে পারেনি। কনকনে ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন ৭ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। রাস্তাঘাটে লোকজন ও যানবাহন চলাচল কম দেখা যায়। কনকনে ঠান্ডায় দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। পাশাপাশি স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও বিপাকে পড়েছে। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করেন অনেকে। দিনেও যানবাহনগুলো চলে হেডলাইট জ্বালিয়ে। সকালে আটোয়ারী উপজেলার সাইফুল ইসলাম বলেন, কাজের সন্ধানে সকালে শহরে এসেছি। শহরেও লোকজন কম। এখনো কাজ জুটেনি।

শেরপুর : টানা এগারো দিন ধরে সীমান্তবর্তী এ জেলার পাঁচ উপজেলায় শীতে জীবনযাত্রা ব্যাহত। রাতে ও ভোরে বৃষ্টির মতো শিশির ঝরে। কুয়াশার কারণে দৃশ্যমানতা কমে আসায় সড়ক ও মহাসড়কে যানবাহন চলছে ধীরগতিতে।

কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) : উপজেলার রেহানা চা বাগানের ষাটোর্ধ্ব নারী শ্রমিক রামবতি ভুমিজ, অমৃতা কর্মকার, প্রমিলা সাঁওতাল, সাবিত্রী রায়, জয়া রিকমনরা আগে ঘুমাতেন বস্তার ভেতরে খড় ঢুকিয়ে বানানো কাঁথা গায়ে দিয়ে। এখন তারা কম্বল গায়ে দেবেন। রোববার সন্ধ্যায় কুলাউড়ার ৩ সাংবাদিকের উদ্যোগে সরকারি ও বেসরকারিভাবে সংগৃহীত ৬৫টি কম্বল তাদের মাঝে বিতরণ করা হয়। কম্বল পেয়ে চা শ্রমিকরা যেন অনুভূতি হারিয়ে ফেলেন। কম্বলগুলো বিতরণ করেন কুলাউড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদি হাসান, কুলাউড়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও যুগান্তর প্রতিনিধি আজিজুল ইসলাম প্রমুখ।

মেহেরপুর : সোমবার সূর্যের দেখা মিললেও হিমেল হাওয়া ছিল। মাঠে কাজে গিয়ে শ্রমজীবীরা শীত সহ্য করতে না পেরে ফিরে আসেন। লোকজনকে শীত নিবারণে আগুন পোহাতে দেখা গেছে।

ধোবাউড়া (ময়মনসিংহ) : ভারতের মেঘালয় রাজ্য ঘেঁষে সীমান্তবর্তী পাহাড়ি জনপদ ময়মনসিংহের ধোবাউড়া। অগ্রহায়ণ মাসের শুরু থেকেই বইতে শুরু করেছে শীতল হাওয়া। গত কয়েক দিনে শীতের মাত্রা আরও চরম আকার ধারণ করেছে। ভোরে কুয়াশার চাদরে আচ্ছন্ন থাকে চারপাশ। দুপুরে খানিকটা সূর্যের দেখা মিললেও নিমিশেই আবার হারিয়ে যায়। ঘন কুয়াশা এবং ঠান্ডা বাতাসে জনজীবন অতিষ্ঠ। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হাসপাতালে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা।

দিনাজপুর : শীতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে জেলার প্রায় পৌনে ৮ লাখ নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। তীব্র শীতের কারণে ঠিকমতো কাজ করতে পারছেন না তারা। অনেকে জীবন ও জীবিকার তাগিদে কাজের সন্ধানে বের হয়েও কাজ না পেয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। সোমবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনাজপুরে এটিই এই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। জেলা প্রশাসনের হিসাব মতে জেলায় ৬ লাখ ৩৬ হাজার ১৯৪ জন কৃষি শ্রমিক, ৮২ হাজার ২১৭ জন শ্রমিক এবং ৫৫ হাজার ৩৬৪ জন পরিবহণ শ্রমিক। প্রতিদিন আয় করে জীবিকা নির্বাহ করতে হয় এসব শ্রমিকের।