পটুয়াখালীতে খেলাপী ঋণের মামলায় মহিলা লীগের নেত্রী জাকিয়া গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: ৮:৩৯ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১১, ২০২৪

পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীতে ৯ কোটি টাকা ঋণ খেলাপী হওয়ায় আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানায় জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকা জাকিয়া সুলতানা বেবীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (১০ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে শহরের ফায়ার সার্ভিস রোড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সদর থানা পুলিশ।
সোনালী ব্যাংকের প্রায় ৯ কোটি টাকা ঋণ বকেয়া থাকার মামলায় আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জসীম।
সোনালী ব্যাংক পটুয়াখালী শাখার ব্যবস্থাপক মো. জিল্লুর রহমান জানান, ১৯৮৫ সালে পটুয়াখালী বিসিকে স্থাপিত একটি টেক্সটাইল কোম্পানির নামে ২ কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার টাকা ঋণ নেয় জাকিয়া সুলনাতা বেবীর স্বামী মো. সিরাজুল ইসলাম। এ প্রতিষ্ঠানটির ৭৫ ভাগ শেয়ার স্বামী সিরাজুল এবং ২৫ ভাগ শেয়ার স্ত্রী জাকিয়ার নামে দেখানো হয়। সিরাজুল ইসলামের মৃত্যুর পর এ প্রতিষ্ঠানটির শতভাগ শেয়ার (মালিকানা) হয় জাকিয়া সুলতানা বেবী। টেক্সটাইলটি মাস দুয়েক চালু থাকার পর পরবর্তীতে বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত ব্যাংকের বকেয়া দাঁডায় ৮ কোটি ৩৮ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এরপর ঋণের অর্থ পরিশোধ না করায় ব্যাংক ম্যানেজার বাদী হয়ে ২০০৪ সালে পটুয়াখালী অর্থ ঋণ আদালতে জাকিয়া সুলতানা বেবীকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
জানা যায়, ব্যাংকের মূল টাকা আদায়ের জন্য ১৯৯৪ সালের ৯ এপ্রিল, ২০১১ সালোর ২৭ জুলাই এবং ২০২২ সালের ১২ জানুয়ারি শতভাগ সুদ মওকুফ অনুমোদন দিয়েছিল ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ।
এতে সর্বশেষ মওকুফ সুবিধায় ৩ কোটি ১৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পরিশোধযোগ্য ধার্য করে এবং ৬ বছরে ৭২টি কিস্তির সুবিধা দেওয়া হয় তাকে। কিন্তু জাকিয়া সুলতানা বেবী এ সুবিধা গ্রহণ না করে উল্টো ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেন এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা সত্তেও তিনি ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের প্রভাব খাটিয়ে বীরদর্পে ঘুরে বেড়াতেন।
ব্যাংক ম্যানেজার জিল্লুর রহমান আরো জানান, ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত সুদে-আসলে বর্তমান লেজার স্থিতি অনুযায়ী এ পর্যন্ত সুদ মওকুফের পর জাকিয়া সুলতানা বেবির আবেদনের প্রেক্ষিতে তাঁর কাছে ব্যাংকের বকেয়া পাওনা হয়েছে প্রায় ৯ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের ২১ নভেম্বর ঋণ গ্রহিতার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। গত মে মাসে জাকিয়া সুলতানা বেবি ১৯ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দিয়েছিলেন। ২০২২ সালের ১২ জানুয়ারি সোনালী ব্যাংক কেন্দ্রীয় পরিচালনা পর্ষদের কাছে সুদ মওকুফের আবেদনের প্রেক্ষিতে বোর্ড সভায় ৩ কোটি ১৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত দেয়। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত না মেনে বেবি প্রতিনিয়ত খেলাপি ঋণের তালিকার শীর্ষ ওঠেন। পরবর্তীতে ব্যাংকের হস্তক্ষেপে বুধবার (১০ জুলাই) জাকিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পটুয়াখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জসীম বলেন,‘অর্থ ঋণ আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানায় জাকিয়া সুলতানা বেবীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।