তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি সমর্থন না করতে সাবেক ইইউ কমিশনারের আহবান।

প্রকাশিত: ৭:৩৫ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১৬, ২০২৩

বিশেষ প্রতিনিধি :: বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবিকে সমর্থন না জানাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সংস্থাটির সাবেক কমিশনার ও ধর্মীয় বিশ্বাসের স্বাধীনতাবিষয়ক সাবেক বিশেষ দূত ইয়ান ফিজেল।

বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসভিত্তিক ‘ইইউঅবজারভারডটকম’ নামের একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এই পরামর্শ দেন ইইউর সাবেক এই কর্মকর্তা।

থাইল্যান্ডে ৯ বছর আগে ক্ষমতায় আসা অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে সংকল্পে অটল থাকতে ইইউ ও পশ্চিমাদের ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে ফিজেল লিখেছেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন সময় হয়েছে বাংলাদেশের দিকে নজর দেয়ার।

তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল পার্টি (বিএনপি) এবং ইসলামী দল জামায়াত-ই-ইসলামী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পরবর্তী নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে এবং তা না হলে নির্বাচন বয়কটের হুমকি দিয়েছে।

তবে গত ১৫ বছর ধরে শাসনক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনির্বাচিত সংস্থার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এই দাবি স্রেফ প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছেন।

নিবন্ধে বলা হয়, বাংলাদেশের সর্বশেষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারটি ছিল সেনাসমর্থিত একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ৯০ দিনের মেয়াদকে দীর্ঘায়িত করে তারা টানা দুই বছর নির্বাচন স্থগিত রেখেছিলো।

ফিজেল লিখেছেন, এরপর প্রায় সবগুলো রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিভিন্ন অভিযোগে কারাগারে পাঠানো হয়- জান্তাদের একটি সাধারণ অভ্যাস যা জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতাদের ভবিষ্যতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল।

বিএনপির বর্তমান নেত্রী খালেদা জিয়া এবং তার ছেলে তারেক রহমান উভয়ই সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় করা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কারণে আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেয়ার অযোগ্য।

ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও ওই সময় কারাগারে বন্দী করা হয়েছিল- যা তার বিরোধীদের দাবি সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করার ক্ষেত্রে একটি বড় কারণ হতে পারে।

ফিজেল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি অনন্য ব্যবস্থা, যা বিশ্বের অন্য কোনো দেশে নেই। ২০১১ সালে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থাকে অসাংবিধানিক বলে রায় দেয়।

বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কোনো আইনি ভিত্তি না থাকায় আগের নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন ছিল বলে যুক্তি দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ইসি গঠনের জন্য একটি নতুন আইন পাস করে বাংলাদেশ সরকার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার জন্য আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানিয়েছেন বলে নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে। গাজীপুরে সাম্প্রতিক নির্বাচনের উদাহরণ টেনে ফিজেল লিখেছেন, শান্তিপূর্ণভাবে এবং কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ছাড়া নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে অল্প ব্যবধানে হেরে যান। তবে বিএনপি এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি- যা আসন্ন পরিস্থিতি সম্পর্কে বার্তা দিয়েছে।