ফেনীর পরশুরামে ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজ

প্রকাশিত: ৩:৪৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৯, ২০২৪

শিবব্রত (বিশেষ প্রতিনিধি)
*****************************************
পরশুরাম থেকে সুবার বাজার এবং মির্জানগর ইউনিয়ন সহ পরশুরামের উত্তরাঞ্চলে যেতে মুহুরী নদীর ওপর নির্মিত বেইলি ব্রিজ টি বেহাল অবস্থায় রয়েছে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে এই সেতু দিয়েই যান চলাচল করছে। এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন শত শত হালকা ও ভারী যানবাহন চলাচল করে। স্থানীয় বাসিন্দা ও গাড়িচালকরা বলছেন, সেতুটি সংস্কার অথবা নতুন গার্ডার সেতু করা না হলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
সরেজমিন দেখা যায়, ব্রিজটির মধ্যে লাগানো অনেক স্লাব ফাঁকা হয়ে গেছে, অনেক স্থানে স্লাব ভেঙে গেছে। এ ছাড়া সেতুর পিলার নড়বড়ে হয়ে গেছে। সেতুটি দুর্বল হয়ে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নিয়ম থাকলেও টানানো নেই সেতুর মুখে ৫টনের অধিক ভারী যানবাহন চলাচলে সর্তকমুলক নিষেধাজ্ঞার সাইনবোর্ড । ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও এই সেতু দিয়েই চলাচল করছে শত শত পরিবহন। যার ফলে সেতুর ওপরে উঠলে কাঁপতে শুরু করে এবং বিকট শব্দে আতঙ্কিত হতে হয়। যদিও মাঝেমধ্যে উঠে যাওয়া স্লাব বা নাটবল্টু মেরামত করে দিচ্ছে সড়ক বিভাগ। তবে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আবারও সেতুটি পুরোনো রূপে ফিরে আসে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় চরম ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহনসহ সাধারণ মানুষকে।
পরশুরাম উপজেলা বাজারের উত্তর পশ্চিমে মুহুরী নদীর ওপর ১৯৯২ সালে নির্মাণ করা হয় এই বেইলি সেতু। এ সেতু দিয়ে সাহেব নগর,কাউতলী, জঙ্গলঘোনা,সুবারবাজারসহ পরশুরাম উপজেলারধীন উত্তরাঞ্চলের যাতায়াতের একমাত্র পথ। এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ ফেনী সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহন চলাচল করে।
সিএনজি চালক আজমীর বলেন, ‘আমি প্রতিদিনই কালিকাপুর ও পরশুরাম সড়কে সিএনজি চালাই। সেতুতে একত্রে কয়েকটি যানবাহন উঠলেই কাঁপতে শুরু করে।’ আলম নামে অন্য এক চালক বলেন, ‘সেতুটির কিছু কিছু অংশে স্লাব ঢিলে হয়ে যাওয়ায় অনেক সময় গাড়ির চাকা আটকে যায়।’ ট্রাকচালক আমিন বলেন, ‘আমরা ট্রাক দিয়ে মালামাল আনা-নেওয়া করি, কিন্তু বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়েই ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতু দিয়ে ট্রাক চালাই।’
পরশুরাম সুশীলসমাজের প্রতিনিধি সবীর আহমেদ ফোরকান বলেন, ‘পরশুরাম উপজেলার মুহুরী নদীর ওপর নির্মিত বেইলি সেতু দিয়ে পণ্য পরিবহন যাতায়াতের ফলে এটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।’ অনেক পুরোনো এই সেতুটি ভেঙে আরসিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।
পরশুরাম উপজেলা মোটর মালিক সংগঠন সুত্র জানায়, পরশুরাম-সুবার বাজার সড়কসহ অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন রুটে আমাদের পরিবহন চলাচল করে। প্রতিদিনই কয়েক হাজার পরিবহন চলাচলের ফলে এই বেইলি সেতুর অবস্থা অনেকটা খারাপ হয়ে যায়। সেজন্য অনেক সময় দুর্ঘটনা ও ঘটে। ঝুঁকি ও দুর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত এই সেতু ভেঙে আরসিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ করা প্রয়োজন।’
পরশুরাম এলজিইডি’র উপজেলা প্রকৌশলী শাহ আলম ভূঁইয়া বলেন এই ব্রিজটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। এটা পুনঃনির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে ।ফেনী জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুত্র জানায়, ‘ঝুঁকির পাশাপাশি এসব বেইলি সেতু রক্ষণাবেক্ষণে প্রতি বছর বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয় হচ্ছে। তবে শুধু এটি নয় যেসকল সেতু ঝুঁকিপূর্ণ সবকটি সেতু সংস্কার বা পুনঃনির্মাণের জন্য অবিলম্বে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে ।ওই সুত্র আরও জানায যেসব ‘বেইলি সেতু দিয়ে ৫ টনের অধিক ওজনের যানবাহন চলাচলে সক্ষম নয়। সেইসব প্রতিটি সেতুর প্রবেশমুখে ৫ টনের অধিক পরিবহন চলাচল নিষেধ দিয়ে সাইনবোর্ড টানানোর জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’