গত অর্থবছরে দেশে শুল্ক অব্যাহতি বেড়েছে ১৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ : জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

প্রকাশিত: ১০:৫৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৫, ২০২৩

বিশেষ প্রতিনিধি : জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, অভ্যন্তরীণ বাজারে পণ্যের দাম কমার কারণে, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ৬১ হাজার ৩২ কোটি টাকা শুল্ক অব্যাহতি পেয়েছে। শুল্ক অব্যাহতি, অর্থবছর ২১-২২-এর তুলনায় অর্থবছর ২২-২৩-এ এসে ৯ হাজার ১৫২ কোটি টাকা বা ১৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেড়েছে। আগের বছর শুল্ক অব্যাহতি দেয়া হয় ৫১ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা।

ভোক্তা অধিকার সংগঠনের নেতারা বলছেন, যেসব ক্ষেত্রে শুল্ক অব্যাহতি রয়েছে, ব্যবসায়ীরা প্রকৃতপক্ষে তাদের পণ্য অভ্যন্তরীণ বাজারে উচ্চ মূল্যে বিক্রি করেন এবং মোটা অঙ্কের মুনাফা করেন। এনবিআর প্রজ্ঞাপন ও বিশেষ বিধিবদ্ধ নিয়ন্ত্রণ আদেশের (এসআরও) মাধ্যমে আমদানি শুল্কে এসব অব্যাহতি দিয়েছে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, “শুল্ক অব্যাহতি পেলেও, ব্যবসায়ীরা স্থানীয় বাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম কমাননি।” এমন পরিস্থিতি-কে তিনি সরকারের বাজার মনিটরিং ব্যবস্থার ব্যর্থতাকে দায়ী করেন। আর, ভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যবসার সিন্ডিকেশন বলে অভিহিত করেন।

অংশীজনদের মত, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং স্থানীয় ব্যবসার সুরক্ষার জন্য অব্যাহতি বৃদ্ধি বাজারে বড় ইতিবাচক প্রভাব ফেলেনি। শুল্ক অব্যাহতির একটি বড় অংশ দেয়া হয়েছে মূলধনী সরঞ্জাম আমদানিতে। এ খাতে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে ৯ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। এরপর ডিফেন্স স্টোরের জন্য ৫ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা অব্যাহতি পান ব্যবসায়ীরা।

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে মোট রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। আমদানি-রপ্তানি পর্যায়ে শুল্ক আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা। অর্থবছর শেষে, কর আদায় হয়েছে ৯২ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা।

গত ২২-২৩ অর্থবছরে; মূলধনী সরঞ্জাম আমদানিতে ৯ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা, ভোজ্যতেল আমদানিকারকরা ৩ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা, কাঁচামাল আমদানিকারকরা ১ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকা, মোবাইল প্রস্তুতকারক-গণ ২ হাজার ২৪১ কোটি টাকা এবং ডিফেন্স স্টোর-এ সরবরাহকারীরা ৫ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা শুল্ক অব্যাহতি পেয়েছে।

এ ছাড়া, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি ৮২৭ কোটি টাকা, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প ৪ হাজার ৪১ কোটি টাকা, বিভিন্ন খাতে ৯ হাজার ৫০ কোটি টাকা (বিশেষ), ত্রাণ পণ্যে ৪০৫ কোটি টাকা, বিভিন্ন সময়ে ৫ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা শুল্ক রেয়াত হিসেবে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে শুল্ক অব্যাহতির পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা। এই খাতে ২০২২ অর্থবছরে অব্যাহতির পরিমাণ ছিলো ২ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা।