বিদ্যুৎ খাতের ‘বিশেষ বিধান আইন’ অবিলম্বে বাতিল চায় ক্যাব ক্রাইম পেট্রোল ক্রাইম পেট্রোল News প্রকাশিত: ১১:২১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৯, ২০২৩ প্রেস ক্লাবে ক্যাব আয়োজিত ‘জ্বালানি রূপান্তরে সুবিচার চাই’ শীর্ষক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। নিজস্ব প্রতিবেদক দ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বিশেষ বিধান আইন (ইনডেমনিটি আইন) অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। একই সঙ্গে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) আইন সংশোধনী বাতিল করে গণশুনানির ভিত্তিতে সকল পর্যায়ের বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্যহার নির্ধারণের একক এখতিয়ার বিইআরসিকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিও জানায় সংগঠনটি। আজ বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ক্যাব আয়োজিত ‘জ্বালানি রূপান্তরে সুবিচার চাই’ শীর্ষক আলোচনাসভায় বক্তারা এসব দাবি জানিয়েছেন। সভাপতির বক্তব্যে ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহের জন্য আইনটি প্রথম দুই বছরের জন্য করা হয়। এরপর দুই বছর করে মেয়াদ বাড়ানো হয়, সর্বশেষ পাঁচ বছরের জন্য বাড়ানো হয়, এই কাজটি উচিত হয়নি। অবিলম্বে আইনটি বাতিল করা উচিত। ক্যাবের সিনিয়র সহসভাপতি ও জ্বালানি বিষয়ক উপদষ্টো ড. এম শামসুল আলম বলেন, ‘২০২৪ সালে জ্বালানি খাতের কী অবস্থা হবে তা নিয়ে আমরা শঙ্কায় আছি। যদি আমরা ন্যূনতম ব্যয়ে এবং সমতার ভিত্তিতে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারতাম, তাহলে আজ এ সংকট তৈরি হতো না। আমাদের যদি রপ্তানি চলমান থাকত, তাহলে আরো গ্যাস-কয়লা উত্তোলন হতো। কিন্তু তখন তা চেয়ে দেখা ছাড়া উপায় ছিল না। তবে জ্বালানি থাকার সুবিধাটাও আমরা পেলাম না, আমদানির পরিবেশ তৈরি করে একটা উন্নয়নের কাহিনি তৈরি করলাম। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও ভূতাত্ত্বিক অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, ‘জ্বালানি সংকটের মৌলিক জায়গায় নজর দিলে সমস্যাটা থাকে না। এই সংকটের মূল কারণ হচ্ছে অতি উচ্চমূলে এলএনজি, কয়লা আমদানি। এর বিকল্প যা ছিল সেদিকে নজর দেওয়া হয়নি। আমাদের যে ভূ-কাঠামো অনুযায়ী অনেক গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেউ বলছে ৩২ টিসিএফ, কেউ বলছে ৪২ টিসিএফ গ্যাস পাওয়ার যাবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য যেসব দেশে গ্যাসের সম্ভাবনা আমাদের মতো, তারা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। কারণ তারা আমাদের মতো মাটির নিচে সম্পদ রেখে আমদানিতে ঝুঁকে যায়নি। সাগরের তলদেশে জ্বালানির সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আমরা তার যথাযথ ব্যবহার করতে পারছি না। কিন্তু অতীত থেকে বর্তমান কোনো সরকারই বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে নেয়নি। বাংলাদেশে গ্যাসকূপ অনুসন্ধানের হার প্রতিবছরে একটা। এটা খুবই নিম্নমানের। এটা কোনো জোরালো অনুসন্ধানের ধারেকাছেও নেই। প্রতিবছর যদি পাঁচ থেকে ছয়টা করে গ্যাসের অনুসন্ধান চালানো হয়, তাহলে আমার মতে পাঁচ বছরের মধ্যে দেশে গ্যাস সম্পদের অভাব থাকবে না।’ অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ইনডেমনিটি আইন করা হয়েছে যাতে চ্যালেঞ্জ করা না যায়। এই আইনটি বাতিল করতে হবে। বিইআরসিকে পুনর্বহাল করতে হবে। বিইআরসি সচল থাকলে এলিট দুর্নীতিবাজরা আটকে যায়, যে কারণে বিইআরসিকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা যে চুক্তিগুলো করছি এগুলো কি প্রতিযোগিতামূলক হচ্ছে? প্রতিযোগিতামূলক না হলে স্বচ্ছতা থাকে না। সরকারকে সৌরবিদ্যুতে মনোযোগ বাড়াতে হবে। বেসরকারি খাত দিয়ে সম্ভব না। নো প্রফিট নো লস ফর্মুলায় সৌরবিদ্যুৎ হতে হবে।’ এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনাকালে সাংবাদিক ও জ্বালানি বিষয়ক গবেষক আরিফুজ্জামান তুহিন বলেন, প্যারামাউন্ট গ্রুপের ১০০ মেগাওয়াট (পাবনা), বেক্সিমকো গ্রুপের ২০০ মেগাওয়াট (গাইবান্ধা) ও ইন্ট্রাকো পাওয়ার লিমিটেডের ৩০ মেগাওয়াট (লালমনিরহাট) বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওপর গবেষণা করা হয়। গবেষণায় দেখানো হয়, পাবনায় জমি কেনার আগেই জোর করে দখল নিয়ে সশস্ত্র পাহারা বসানো হয়। প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও ৩০ শতাংশ মালিক ক্ষতিপূরণ পাননি। পুলিশ দিয়ে জোর করে জমি থেকে কৃষকদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। কৃষকদের নামে ভুয়া চাঁদাবাজির মামলা করে এলাকাছাড়া করা হয়েছে। গাইবান্ধায় ২০০ মেগাওয়াট প্রকল্পের জন্য তিনফসলি কৃষিজমি ধ্বংস করা হয়েছে। প্রকল্পের জন্য অপরিকল্পিত রাস্তা নির্মাণের কারণে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে লালমনিরহাটে। SHARES অর্থনৈতিক বিষয়: বিদ্যুৎ খাতবিশেষ বিধান আইন
দ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বিশেষ বিধান আইন (ইনডেমনিটি আইন) অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। একই সঙ্গে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) আইন সংশোধনী বাতিল করে গণশুনানির ভিত্তিতে সকল পর্যায়ের বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্যহার নির্ধারণের একক এখতিয়ার বিইআরসিকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিও জানায় সংগঠনটি। আজ বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ক্যাব আয়োজিত ‘জ্বালানি রূপান্তরে সুবিচার চাই’ শীর্ষক আলোচনাসভায় বক্তারা এসব দাবি জানিয়েছেন। সভাপতির বক্তব্যে ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহের জন্য আইনটি প্রথম দুই বছরের জন্য করা হয়।
এরপর দুই বছর করে মেয়াদ বাড়ানো হয়, সর্বশেষ পাঁচ বছরের জন্য বাড়ানো হয়, এই কাজটি উচিত হয়নি। অবিলম্বে আইনটি বাতিল করা উচিত। ক্যাবের সিনিয়র সহসভাপতি ও জ্বালানি বিষয়ক উপদষ্টো ড. এম শামসুল আলম বলেন, ‘২০২৪ সালে জ্বালানি খাতের কী অবস্থা হবে তা নিয়ে আমরা শঙ্কায় আছি। যদি আমরা ন্যূনতম ব্যয়ে এবং সমতার ভিত্তিতে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারতাম, তাহলে আজ এ সংকট তৈরি হতো না।
আমাদের যদি রপ্তানি চলমান থাকত, তাহলে আরো গ্যাস-কয়লা উত্তোলন হতো। কিন্তু তখন তা চেয়ে দেখা ছাড়া উপায় ছিল না। তবে জ্বালানি থাকার সুবিধাটাও আমরা পেলাম না, আমদানির পরিবেশ তৈরি করে একটা উন্নয়নের কাহিনি তৈরি করলাম। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও ভূতাত্ত্বিক অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, ‘জ্বালানি সংকটের মৌলিক জায়গায় নজর দিলে সমস্যাটা থাকে না। এই সংকটের মূল কারণ হচ্ছে অতি উচ্চমূলে এলএনজি, কয়লা আমদানি। এর বিকল্প যা ছিল সেদিকে নজর দেওয়া হয়নি। আমাদের যে ভূ-কাঠামো অনুযায়ী অনেক গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেউ বলছে ৩২ টিসিএফ, কেউ বলছে ৪২ টিসিএফ গ্যাস পাওয়ার যাবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য যেসব দেশে গ্যাসের সম্ভাবনা আমাদের মতো, তারা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। কারণ তারা আমাদের মতো মাটির নিচে সম্পদ রেখে আমদানিতে ঝুঁকে যায়নি। সাগরের তলদেশে জ্বালানির সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আমরা তার যথাযথ ব্যবহার করতে পারছি না। কিন্তু অতীত থেকে বর্তমান কোনো সরকারই বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে নেয়নি। বাংলাদেশে গ্যাসকূপ অনুসন্ধানের হার প্রতিবছরে একটা। এটা খুবই নিম্নমানের। এটা কোনো জোরালো অনুসন্ধানের ধারেকাছেও নেই। প্রতিবছর যদি পাঁচ থেকে ছয়টা করে গ্যাসের অনুসন্ধান চালানো হয়, তাহলে আমার মতে পাঁচ বছরের মধ্যে দেশে গ্যাস সম্পদের অভাব থাকবে না।’ অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ইনডেমনিটি আইন করা হয়েছে যাতে চ্যালেঞ্জ করা না যায়। এই আইনটি বাতিল করতে হবে। বিইআরসিকে পুনর্বহাল করতে হবে। বিইআরসি সচল থাকলে এলিট দুর্নীতিবাজরা আটকে যায়, যে কারণে বিইআরসিকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা যে চুক্তিগুলো করছি এগুলো কি প্রতিযোগিতামূলক হচ্ছে? প্রতিযোগিতামূলক না হলে স্বচ্ছতা থাকে না। সরকারকে সৌরবিদ্যুতে মনোযোগ বাড়াতে হবে। বেসরকারি খাত দিয়ে সম্ভব না। নো প্রফিট নো লস ফর্মুলায় সৌরবিদ্যুৎ হতে হবে।’ এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনাকালে সাংবাদিক ও জ্বালানি বিষয়ক গবেষক আরিফুজ্জামান তুহিন বলেন, প্যারামাউন্ট গ্রুপের ১০০ মেগাওয়াট (পাবনা), বেক্সিমকো গ্রুপের ২০০ মেগাওয়াট (গাইবান্ধা) ও ইন্ট্রাকো পাওয়ার লিমিটেডের ৩০ মেগাওয়াট (লালমনিরহাট) বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওপর গবেষণা করা হয়। গবেষণায় দেখানো হয়, পাবনায় জমি কেনার আগেই জোর করে দখল নিয়ে সশস্ত্র পাহারা বসানো হয়। প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও ৩০ শতাংশ মালিক ক্ষতিপূরণ পাননি। পুলিশ দিয়ে জোর করে জমি থেকে কৃষকদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। কৃষকদের নামে ভুয়া চাঁদাবাজির মামলা করে এলাকাছাড়া করা হয়েছে। গাইবান্ধায় ২০০ মেগাওয়াট প্রকল্পের জন্য তিনফসলি কৃষিজমি ধ্বংস করা হয়েছে। প্রকল্পের জন্য অপরিকল্পিত রাস্তা নির্মাণের কারণে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে লালমনিরহাটে।