৪৮ বছর জেল খাটার পর নির্দোষ প্রমাণ

প্রকাশিত: ১১:৫৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২১, ২০২৩
গ্লিন সিমন্স। ছবি : বিবিসি

নিজস্ব প্রতিনিধি

বিচারে দোষী সাব্যস্ত হয়ে ৪৮ বছর ধরে কারাভোগ করার পর অবশেষে আদালত তাঁকে নির্দোষ ঘোষণা করলেন। যুক্তরাষ্ট্রের গ্লিন সিমন্স ১৯৭৪ সালে একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। ওকলাহোমার একজন বিচারক স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার তাঁকে নির্দোষ ঘোষণা করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে অন্যায়ভাবে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি তিনি।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৭০ বছর বয়সী গ্লিন সিমন্সকে চলতি বছরের জুলাই মাসে একটি জেলা আদালত তাঁর সাজা বাতিল করে দেন। রায়ে বলা হয়, প্রসিকিউটররা বিবাদীপক্ষের আইনজীবীদের কাছে এই মামলার সব প্রমাণ তুলে দেননি। গত সোমবার একজন কাউন্টি জেলা অ্যাটর্নি বলেন, নতুন বিচারের জন্য পর্যাপ্ত প্রমাণ নেই। অবশেষে মঙ্গলবার এক আদেশে বিচারক অ্যামি পালুম্বো সিমন্সকে নির্দোষ ঘোষণা করেন।

ওকলাহোমার বিচারক পালুম্বো তার রায়ে বলেছেন, ‘এই আদালত সুস্পষ্ট এবং বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ খুঁজে পেয়েছে যে সিমন্সকে যে অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল এবং কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল… সিমন্স সেই অপরাধ করেনি।’ এই ঘোষণার পর সিমন্স সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘এটা  সহনশীলতা এবং দৃঢ়তার শিক্ষা ছিল।’ তিনি আরো বলেন, ‘কাউকে বলতে দিবেন না যে এমন ঘটবে না, কারণ সেটা সত্যিই ঘটতে পারে।’

সিমন্স মোট ৪৮ বছর এক মাস ১৮ দিন কারাগারে কাটিয়েছেন।

তখন ১৯৭৪ সালে সিমন্সের বয়স ছিল ২২ বছর। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ওকলাহোমা সিটির উপকণ্ঠে একটি মদের দোকানে ডাকাতি করার সময় তিনি এবং তাঁর আরেক সহযোগী ক্যারোলিন সু রজার্স নামে এক নারীকে হত্যা করেন। ডাকাতির সময় তিনি মাথার পেছনে গুলি খেয়েছিলেন। 

সিমন্স ও ডন রবার্টসের শাস্তি হয়েছিল এক অপ্রাপ্ত বয়স্ক সাক্ষীর সাক্ষ্যের ভিত্তিতে। সিমন্সকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও পরে বিচারে প্রথমে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট সাজা কমিয়ে আজীবন কারাদণ্ড দেন।

তবে সিমন্স এই অভিযোগ বরাবর অস্বীকার করে এসেছেন। তিনি দাবি করেছিলেন, তিনি হত্যাকাণ্ডের সময় তার নিজ রাজ্য লুইসিয়ানায় ছিলেন। অন্য অভিযুক্ত রবার্ট ২০০৮ সালে প্যারোলে মুক্তি পেয়েছিলেন। 

ভুল বিচারে কারাভোগ করায় ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা ক্ষতিপূরণ হিসেবে সর্বোচ্চ এক লাখ ৭৫ হাজার মার্কিন ডলার পান। সিমন্সও এখন এই ক্ষতিপূরণের দাবিদার। সিমন্স বর্তমানে লিভার ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করছেন।

সূত্র : বিবিসি