মুনাফায় এসেছে ইভ্যালি

১৫ দিনের মধ্যে দেনা পরিশোধ শুরু

প্রকাশিত: ১১:১৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৪, ২০২৪
সংগৃহীত ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি ইতিমধ্যে লাভের মুখ দেখতে পেয়েছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করা গ্রাহকদের টাকা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। তবে অন্যদের টাকা ফেরত দেওয়া শুরু হবে আগামী মে মাস থেকে।

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে অবস্থিত ইভ্যালির প্রধান কার্যালয় থেকে এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মাদ রাসেল।

সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মাদ রাসেল বলেন, ‘ডিসেম্বরের ২৯ তারিখ থেকে এখন পর্যন্ত আমরা ৪৯ লাখ টাকা মুনাফা করেছি। এর আগে আমরা আমাদের ১২০ জন কর্মচারীকে ঠিকমতো বেতনও দিতে পারিনি। এখন যেহেতু আমরা লাভে চলে এসেছি, তাই সবাইকে বেতন দেওয়া কোনো সমস্যা হবে না। ভোক্তা অধিদপ্তরে প্রায় সাত হাজার গ্রাহকের অভিযোগ রয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমরা বৈঠক করে ওই সব গ্রাহকের টাকা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করব। এ ছাড়া আগামী মে মাস থেকে চেকসহ পুরনো সব দেনার টাকা পরিশোধ করা শুরু হবে।’ 

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আগে বেশির ভাগ পণ্যই লোকসানে বিক্রি করা হতো। তবে এখন যে পণ্য বিক্রি করছি, সেগুলোর সর্বনিম্ন ২ থেকে ৮ শতাংশ পর্যন্ত লাভ রাখা হচ্ছে।

এই লাভের অর্থ দিয়ে কম্পানির মাসিক ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে। এ জন্য ইভ্যালিকে নতুন করে কোনো দেনায় পড়তে হবে না। এখন আমাদের এই মুনাফা থেকে পাওনা বা দেনা পরিশোধ করব। মুনাফা ছাড়া কোনো পণ্য আমরা বিক্রি করছি না। ব্যবসার যে ট্রেন্ড আছে, তাতে সব গ্রাহকের টাকা পরিশোধ করতে দুই-তিন বছর লাগতে পারে।
তবে কোনো বিনিয়োগ আসলে, তাতে দেনা পরিশোধের শর্ত দেওয়া হবে। তাতে করে ছয় মাসের মধ্যে সব গ্রাহকের টাকা শোধ হয়ে যেতে পারে। অর্ডারের ক্রমানুযায়ী সব গ্রাহকের মূল টাকা ধাপে ধাপে পরিশোধ করা হবে। খুব তাড়াতাড়ি গ্রাহকরা তাদের পুরনো ডাটা নতুন অ্যাপে দেখতে পারবেন।’ 

রাসেল বলেন, ‘এখন আমরা সব পণ্য সিওডিতে (ক্যাশ অন ডেলিভারি) দিচ্ছি। আগে গ্রাহকরা পণ্য পাওয়ার আগেই সরাসরি ইভ্যালিকে টাকা পরিশোধ করত। কিন্তু এবার ক্যাশ অন ডেলিভারি হওয়ায় গ্রাহকের কোনো ঝুঁকি নেই। এ ছাড়া গ্রাহকের পরিশোধ করা পণ্যের মূল্য এখন থেকে সরাসরি বিক্রেতার কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। ফলে বিক্রেতারও কোনো বাকি পড়ার ঝুঁকি নেই। মার্চেন্ট থেকে ই-কুরিয়ার সরাসরি পণ্য নিয়ে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। আগে গ্রাহক পণ্য হাতে বুঝে পাবে, এরপর মূল্য পরিশোধ করবে। এখানে অর্ডার নেওয়া ছাড়া কোনো কার্যক্রমে ইভ্যালি অংশ নিচ্ছে না। ফলে আমরা আরো স্বচ্ছতার সাথে গ্রাহকের কাছে দ্রুত পণ্য পৌঁছে দিতে পারছি।’

মোহাম্মাদ রাসেল বলেন, ‘ব্যবসা পরিচালনায় হয়তো কিছু ভুল ছিল, কিন্তু কোনো দুর্নীতি আমি করি নাই। আমি ব্যক্তিস্বার্থে কোনো অন্যায় করিনি। যা করেছি, ব্যবসার প্রসারে। এখন সকল গ্রাহকের পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার আগে আমি বা আমার পরিবারের কেউ এই প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো টাকা নেব না। আমাদের নিজস্ব সম্পদ থেকে পরিবারের খরচ পূরণ করবো।’

তিনি জানান, গ্রেপ্তার হওয়ার আগে গ্রাহকদের সাড়ে ৩০০ কোটি আর মার্চেন্ডদের ১৫০ কোটি টাকা দেনা রয়েছে। কিন্তু এখনকার হিসাবটা হাতে আসেনি। একই সঙ্গে পাসপোর্ট জমা দেওয়া ও মামলা করা গ্রাহকের অনাপত্তিতে আদালত ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন।