১৫৭ বিদেশি কারাবন্দি প্রত্যাবাসনের অপেক্ষায় ক্রাইম পেট্রোল ক্রাইম পেট্রোল News প্রকাশিত: ২:২৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০২৪ নিজস্ব প্রতিনিধি সাজা খাটার পর প্রত্যাবাসনের অপেক্ষায় থাকা ১৫৭ জন বিদেশি কারাবন্দি আছেন দেশের কারাগারগুলোতে। এর মধ্যে দেড় শ জনই প্রতিবেশী দেশ ভারতের নাগরিক। বাকি সাতজন মিয়ানমার, পাকিস্তান ও নেপালের। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন মিয়ানমারের। কারাবন্দি এই বিদেশি নাগরিকদের বেশির ভাগই অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে দ্য কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট, ১৯৫২, পাসপোর্ট আইন, ১৯৫২, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় দণ্ড ভোগ করেছেন। কারা অধিদপ্তরের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনটি হলফনামা করে উচ্চ আদালতে দাখিলের অপেক্ষায় রয়েছে। যে কারণে এ প্রতিবেদন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল দিয়ে অনুপ্রবেশের দায়ে ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কমলপুর থানার বাসিন্দা গোবিন্দ উড়িয়াকে (২৬) গ্রেপ্তার করেন বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) সদস্যরা। ওই দিনই আটক ব্যক্তিকে শ্রীমঙ্গল থানায় সোপর্দ করে তাঁর নামে মামলা করেন বিজিবির হাবিলদার মো. রশিদ প্রধান। তদন্তের পর ওই বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা শ্রীমঙ্গল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুল হাসান। ওই দিনই গোবিন্দ উড়িয়ার বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮-এর ২৪২ ধারা ও দ্য কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট, ১৯৫২ আইনের ৪ ধারায় অভিযোগ গঠন করে মামলার রায় দিয়ে দেন মৌলভীবাজারের চতুর্থ বিচারিক হাকিম এম মিজবাহ উর রহমান। দোষ স্বীকার এবং অতীতে অনুপ্রবেশের অভিযোগ না থাকায় আদালত গোবিন্দ উড়িয়াকে দুই মাস ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। রায়ে বলা হয়, সাজার মেয়াদের চেয়ে চার দিন বেশি সাজা ভোগ করে ফেলেছেন গোবিন্দ উড়িয়া। তাই তাঁর প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করতে মৌলভীবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপারকে নির্দেশ দেন আদালত। এ রায়ের পর দুই বছর কেটে গেলেও প্রত্যাবাসন হয়নি গোবিন্দ উড়িয়ার। ফলে কারামুক্তিও ঘটেনি। এ নিয়ে সম্প্রতি প্রতিবেদন করে একটি টেলিভিশন চ্যানেল। ওই প্রতিবেদনটি যুক্ত করে গত ১১ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিভূতি তরফদার। সাজা ভোগ করা কারাবন্দি গোবিন্দ উড়িয়ার কারামুক্তি ও তাঁর প্রত্যাবাসনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করা হয় রিটে। গত ১৫ জানুয়ারি এ রিটে প্রাথমিক শুনানির পর রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট।অন্তর্বর্তী আদেশে গোবিন্দ উড়িয়াকে কারামুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। আর দণ্ড বা সাজা ভোগ করার পরও প্রত্যাসানের ব্যবস্থা না করে কারাবন্দি রাখা হয়েছে, এমন বিদেশি নাগরিকদের তালিকা দিতে বলেন আদালত। কারা মহাপরিদর্শককে এ নির্দেশ দিয়ে আগামী ১০ মার্চ পরবর্তী আদেশের তারিখ রাখা হয়েছে বলে সেদিন কালের কণ্ঠকে জানান রিটকারী আইনজীবী বিভূতি তরফদার।তারই ধারাবাহিকতায় আদালতে দাখিলের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠায় কারা অধিদপ্তর। ১৫৭ কারাবন্দির মধ্যে নারী ১৯ জন ১৫৭ বিদেশি কারাবন্দির মধ্যে বেশির ভাগই অনুপ্রবেশের দায়ে আটক হয়েছেন। বন্দিদের মধ্যে ১৯ জন নারী। তাঁরা সবাই ভারতের নাগরিক। প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বন্দিদের মধ্যে মিয়ানমারের নাগরিক মো. হাসিম ১৯৯৯ সালের ১৪ নভেম্বর টেকনাফ সীমান্তে আটক হয়েছিলেন। ২০০১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার দায়রা জজ আদালতের রায়ে তাঁর জেল হয়। ২৪ বছর সাজা ভোগ করে গত বছর ১৭ অক্টোবর তাঁর মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায় এখনো তিনি কারাগারে। এ ছাড়া অনুপ্রবেশের দায়ে মিয়ানমারের নাগরিক চিওং রাখাইনকে (২৬) দুই হাজার টাকা ও মো. সাজ্জাদ হোসেনকে (৪৫) ৫০০ টাকা জরিমানা করেছিলেন আদালত। কিন্তু প্রত্যাবাশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায় দুই দশক ধরে তাঁরা কারাগারে আছেন। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২২ সালে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। এ বছর ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন সীমান্তে ৩৭ জন আটক হয়েছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আটক হয়েছেন ৩০ জন ২০১৯ সালে, ২০২১ সালে ২৫ জন। আর গেল বছর আটক করা হয়েছেন ১৫ জনকে। তাঁরা সবাই ভারতের নাগরিক। সবাই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছেন বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত। কালের কণ্ঠকে এই আইন কর্মকর্তা বলেন, ‘কারা অধিদপ্তরের প্রতিবেদনটি অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে এসেছে। এখন সেটি হলফনামা করে নির্ধারিত তারিখে আদালতে দাখিল করা হবে।’ সাজা ভোগ করার পরও কেন দেড় শতাধিক বিদেশি কারাবন্দির প্রত্যাবাসন হয়নি, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয় দুই দেশের সমন্বয়ে। অনেক বন্দির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সে প্রক্রিয়া শুরু করলেও সংশ্লিষ্ট দেশ সমন্বয় বা সহযোগিতা করছে না। অনেক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশ প্রত্যাবাসনে আগ্রহও দেখাচ্ছে না। এখন সাজা ভোগ করে ফেললেও যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হবে, তত দিন তারা বাংলাদেশে অবাধে ঘুরতে পারবে না। ফলে তাদের কারাবন্দি রাখা হয়েছে।’ এ জন্য ১৫৭ বিদেশি কারাবন্দির কারামুক্তি আটকে আছে বলে জানান তিনি। SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: #কারাবন্দি#বিদেশি
সাজা খাটার পর প্রত্যাবাসনের অপেক্ষায় থাকা ১৫৭ জন বিদেশি কারাবন্দি আছেন দেশের কারাগারগুলোতে। এর মধ্যে দেড় শ জনই প্রতিবেশী দেশ ভারতের নাগরিক। বাকি সাতজন মিয়ানমার, পাকিস্তান ও নেপালের। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন মিয়ানমারের।
সাজা খাটার পর প্রত্যাবাসনের অপেক্ষায় থাকা ১৫৭ জন বিদেশি কারাবন্দি আছেন দেশের কারাগারগুলোতে। এর মধ্যে দেড় শ জনই প্রতিবেশী দেশ ভারতের নাগরিক। বাকি সাতজন মিয়ানমার, পাকিস্তান ও নেপালের। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন মিয়ানমারের।
কারাবন্দি এই বিদেশি নাগরিকদের বেশির ভাগই অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে দ্য কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট, ১৯৫২, পাসপোর্ট আইন, ১৯৫২, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় দণ্ড ভোগ করেছেন। কারা অধিদপ্তরের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনটি হলফনামা করে উচ্চ আদালতে দাখিলের অপেক্ষায় রয়েছে। যে কারণে এ প্রতিবেদন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল দিয়ে অনুপ্রবেশের দায়ে ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কমলপুর থানার বাসিন্দা গোবিন্দ উড়িয়াকে (২৬) গ্রেপ্তার করেন বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) সদস্যরা।
যে কারণে এ প্রতিবেদন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল দিয়ে অনুপ্রবেশের দায়ে ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কমলপুর থানার বাসিন্দা গোবিন্দ উড়িয়াকে (২৬) গ্রেপ্তার করেন বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) সদস্যরা।
ওই দিনই আটক ব্যক্তিকে শ্রীমঙ্গল থানায় সোপর্দ করে তাঁর নামে মামলা করেন বিজিবির হাবিলদার মো. রশিদ প্রধান। তদন্তের পর ওই বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা শ্রীমঙ্গল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুল হাসান। ওই দিনই গোবিন্দ উড়িয়ার বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮-এর ২৪২ ধারা ও দ্য কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট, ১৯৫২ আইনের ৪ ধারায় অভিযোগ গঠন করে মামলার রায় দিয়ে দেন মৌলভীবাজারের চতুর্থ বিচারিক হাকিম এম মিজবাহ উর রহমান। দোষ স্বীকার এবং অতীতে অনুপ্রবেশের অভিযোগ না থাকায় আদালত গোবিন্দ উড়িয়াকে দুই মাস ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
রায়ে বলা হয়, সাজার মেয়াদের চেয়ে চার দিন বেশি সাজা ভোগ করে ফেলেছেন গোবিন্দ উড়িয়া। তাই তাঁর প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করতে মৌলভীবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপারকে নির্দেশ দেন আদালত। এ রায়ের পর দুই বছর কেটে গেলেও প্রত্যাবাসন হয়নি গোবিন্দ উড়িয়ার। ফলে কারামুক্তিও ঘটেনি। এ নিয়ে সম্প্রতি প্রতিবেদন করে একটি টেলিভিশন চ্যানেল।
ওই প্রতিবেদনটি যুক্ত করে গত ১১ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিভূতি তরফদার। সাজা ভোগ করা কারাবন্দি গোবিন্দ উড়িয়ার কারামুক্তি ও তাঁর প্রত্যাবাসনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করা হয় রিটে। গত ১৫ জানুয়ারি এ রিটে প্রাথমিক শুনানির পর রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট।অন্তর্বর্তী আদেশে গোবিন্দ উড়িয়াকে কারামুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। আর দণ্ড বা সাজা ভোগ করার পরও প্রত্যাসানের ব্যবস্থা না করে কারাবন্দি রাখা হয়েছে, এমন বিদেশি নাগরিকদের তালিকা দিতে বলেন আদালত। কারা মহাপরিদর্শককে এ নির্দেশ দিয়ে আগামী ১০ মার্চ পরবর্তী আদেশের তারিখ রাখা হয়েছে বলে সেদিন কালের কণ্ঠকে জানান রিটকারী আইনজীবী বিভূতি তরফদার।তারই ধারাবাহিকতায় আদালতে দাখিলের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠায় কারা অধিদপ্তর। ১৫৭ কারাবন্দির মধ্যে নারী ১৯ জন ১৫৭ বিদেশি কারাবন্দির মধ্যে বেশির ভাগই অনুপ্রবেশের দায়ে আটক হয়েছেন। বন্দিদের মধ্যে ১৯ জন নারী। তাঁরা সবাই ভারতের নাগরিক। প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বন্দিদের মধ্যে মিয়ানমারের নাগরিক মো. হাসিম ১৯৯৯ সালের ১৪ নভেম্বর টেকনাফ সীমান্তে আটক হয়েছিলেন। ২০০১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার দায়রা জজ আদালতের রায়ে তাঁর জেল হয়। ২৪ বছর সাজা ভোগ করে গত বছর ১৭ অক্টোবর তাঁর মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায় এখনো তিনি কারাগারে। এ ছাড়া অনুপ্রবেশের দায়ে মিয়ানমারের নাগরিক চিওং রাখাইনকে (২৬) দুই হাজার টাকা ও মো. সাজ্জাদ হোসেনকে (৪৫) ৫০০ টাকা জরিমানা করেছিলেন আদালত। কিন্তু প্রত্যাবাশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায় দুই দশক ধরে তাঁরা কারাগারে আছেন। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২২ সালে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। এ বছর ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন সীমান্তে ৩৭ জন আটক হয়েছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আটক হয়েছেন ৩০ জন ২০১৯ সালে, ২০২১ সালে ২৫ জন। আর গেল বছর আটক করা হয়েছেন ১৫ জনকে। তাঁরা সবাই ভারতের নাগরিক। সবাই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছেন বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত। কালের কণ্ঠকে এই আইন কর্মকর্তা বলেন, ‘কারা অধিদপ্তরের প্রতিবেদনটি অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে এসেছে। এখন সেটি হলফনামা করে নির্ধারিত তারিখে আদালতে দাখিল করা হবে।’ সাজা ভোগ করার পরও কেন দেড় শতাধিক বিদেশি কারাবন্দির প্রত্যাবাসন হয়নি, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয় দুই দেশের সমন্বয়ে। অনেক বন্দির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সে প্রক্রিয়া শুরু করলেও সংশ্লিষ্ট দেশ সমন্বয় বা সহযোগিতা করছে না। অনেক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশ প্রত্যাবাসনে আগ্রহও দেখাচ্ছে না। এখন সাজা ভোগ করে ফেললেও যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হবে, তত দিন তারা বাংলাদেশে অবাধে ঘুরতে পারবে না। ফলে তাদের কারাবন্দি রাখা হয়েছে।’ এ জন্য ১৫৭ বিদেশি কারাবন্দির কারামুক্তি আটকে আছে বলে জানান তিনি।
ওই প্রতিবেদনটি যুক্ত করে গত ১১ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিভূতি তরফদার। সাজা ভোগ করা কারাবন্দি গোবিন্দ উড়িয়ার কারামুক্তি ও তাঁর প্রত্যাবাসনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করা হয় রিটে। গত ১৫ জানুয়ারি এ রিটে প্রাথমিক শুনানির পর রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট।অন্তর্বর্তী আদেশে গোবিন্দ উড়িয়াকে কারামুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। আর দণ্ড বা সাজা ভোগ করার পরও প্রত্যাসানের ব্যবস্থা না করে কারাবন্দি রাখা হয়েছে, এমন বিদেশি নাগরিকদের তালিকা দিতে বলেন আদালত। কারা মহাপরিদর্শককে এ নির্দেশ দিয়ে আগামী ১০ মার্চ পরবর্তী আদেশের তারিখ রাখা হয়েছে বলে সেদিন কালের কণ্ঠকে জানান রিটকারী আইনজীবী বিভূতি তরফদার।তারই ধারাবাহিকতায় আদালতে দাখিলের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠায় কারা অধিদপ্তর। ১৫৭ কারাবন্দির মধ্যে নারী ১৯ জন ১৫৭ বিদেশি কারাবন্দির মধ্যে বেশির ভাগই অনুপ্রবেশের দায়ে আটক হয়েছেন। বন্দিদের মধ্যে ১৯ জন নারী। তাঁরা সবাই ভারতের নাগরিক। প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বন্দিদের মধ্যে মিয়ানমারের নাগরিক মো. হাসিম ১৯৯৯ সালের ১৪ নভেম্বর টেকনাফ সীমান্তে আটক হয়েছিলেন। ২০০১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার দায়রা জজ আদালতের রায়ে তাঁর জেল হয়। ২৪ বছর সাজা ভোগ করে গত বছর ১৭ অক্টোবর তাঁর মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায় এখনো তিনি কারাগারে। এ ছাড়া অনুপ্রবেশের দায়ে মিয়ানমারের নাগরিক চিওং রাখাইনকে (২৬) দুই হাজার টাকা ও মো. সাজ্জাদ হোসেনকে (৪৫) ৫০০ টাকা জরিমানা করেছিলেন আদালত। কিন্তু প্রত্যাবাশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায় দুই দশক ধরে তাঁরা কারাগারে আছেন। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২২ সালে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। এ বছর ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন সীমান্তে ৩৭ জন আটক হয়েছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আটক হয়েছেন ৩০ জন ২০১৯ সালে, ২০২১ সালে ২৫ জন। আর গেল বছর আটক করা হয়েছেন ১৫ জনকে। তাঁরা সবাই ভারতের নাগরিক। সবাই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছেন বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত। কালের কণ্ঠকে এই আইন কর্মকর্তা বলেন, ‘কারা অধিদপ্তরের প্রতিবেদনটি অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে এসেছে। এখন সেটি হলফনামা করে নির্ধারিত তারিখে আদালতে দাখিল করা হবে।’ সাজা ভোগ করার পরও কেন দেড় শতাধিক বিদেশি কারাবন্দির প্রত্যাবাসন হয়নি, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয় দুই দেশের সমন্বয়ে। অনেক বন্দির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সে প্রক্রিয়া শুরু করলেও সংশ্লিষ্ট দেশ সমন্বয় বা সহযোগিতা করছে না। অনেক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশ প্রত্যাবাসনে আগ্রহও দেখাচ্ছে না। এখন সাজা ভোগ করে ফেললেও যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হবে, তত দিন তারা বাংলাদেশে অবাধে ঘুরতে পারবে না। ফলে তাদের কারাবন্দি রাখা হয়েছে।’ এ জন্য ১৫৭ বিদেশি কারাবন্দির কারামুক্তি আটকে আছে বলে জানান তিনি।