হিজরি নববর্ষে পবিত্র কাবাঘরে নতুন গিলাফ

প্রকাশিত: ৭:২৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ৭, ২০২৪
হিজরি নববর্ষের প্রথম রাতে পবিত্র কাবাঘরে নতুন গিলাফ পরানো হয়েছে। গতকাল শনিবার (৬ জুলাই) মক্কায় পবিত্র মসজিদুল হারাম প্রাঙ্গণে গিলাফ পরিবর্তনের কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। পুরো কার্যক্রমটি তত্ত্বাবধান করে মক্কা ও মদিনার পবিত্র দুই মসজিদের সাধারণ কর্তৃপক্ষ।

সৌদি আরবে গতকাল শনিবার (৬ জুলাই) ছিল ১৪৪৫ হিজরির জিলহজ মাসের ৩০তম দিন।

আর সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় ১৪৪৬ হিজরির মহররম মাস। তাই হিজরি নববর্ষ উপলক্ষে গতকাল দিবাগত রাতে পবিত্র কাবাঘরের গিলাফ পরিবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। 

সৌদি বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, মক্কার বাদশাহ আবদুল আজিজ কমপ্লেক্সে পবিত্র কাবাঘরের কালো গিলাফ প্রস্তুত করা হয়। সেখানকার বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদের তত্ত্বাবধানে ১৫৯ দক্ষ কারিগর নতুন গিলাফ পরিবর্তনের কার্যক্রম সম্পন্ন করেন।

প্রথমে কাবাঘর থেকে পুরনো গিলাফ সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর নতুন গিলাফ কারখানা থেকে মসজিদ প্রাঙ্গণে এনে স্থাপন করা হয়।মূলত সোনার সুতা দিয়ে তৈরি গিলাফ বা কিসওয়ার ৫৩টি টুকরা রয়েছে। এরমধ্যে বেল্টের ১৬টি, বেল্টের নিচে সাতটি, কোণার টুকরো চারটি, ১৭টি লণ্ঠন, দরজার পর্দা পাঁচটি, রুকনে ইয়ামানির একটি ও হাজরে আসাওয়াদ বা কালো পাথরের একটি টুকরা রয়েছে।

পুরো গিলাফের পুরো কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ৬০ থেকে ১২০ দিন সময় লাগে।
 
ক্যারেটের ১২০ কেজি স্বর্ণ ও ১০০ কেজি রুপার সুতা দিয়ে সেই কাপড়ে লেখা হয় পবিত্র কোরআনের আয়াত ও আল্লাহর গুণবাচক নাম। গিলাফের সব কাজ শেষ করতে ছয় থেকে আট মাস সময় লাগে। সব মিলিয়ে ৮৫০ কেজি ওজনের এই গিলাফ তৈরিতে ব্যয় হয় ২৫ মিলিয়ন সৌদি রিয়াল বা সাড়ে ছয় মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই গিলাফকে বিশ্বের ব্যয়বহুল কাপড় বলে মনে করা হয়।
এর আগে গত ১৮ জুন সৌদি বাদশাহর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাবাঘরের সদ্যঃপ্রয়াত প্রধান রক্ষক শায়খ আবদুল মালিক আল-শায়বির কাছে নতুন গিলাফ হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে প্রধান রক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন শায়খ আবদুল ওয়াহাব বিন জয়নুল আবেদিন আল-শায়বি।

মূলত ইসলামের প্রথম যুগ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর ধরে জিলহজ মাসের ৯ তারিখ আরাফাত দিবসে কাবাঘরের গিলাফ পরিবর্তনের রীতি ছিল। ২০২২ সাল মোতাবেক ১৪৪৪ হিজরি থেকে কাবার গিলাফ পরিবর্তনের সময়সূচিতে পরিবর্তন করে সৌদি সরকার। তখন থেকে হিজরি নববর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতে মহররমের প্রথম রাতে গিলাফ পরিবর্তন করা হয়।