নোয়াখালীর পরশুরামে নদী দূষণ ও দখল।

প্রকাশিত: ১১:২৬ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩

পরশুরামে
নদী দূষণ ও দখল
***************************************
শিবব্রত(বিশেষ প্রতিনিধি)

পরশুরাম বাজারের উত্তর পাশে দিয়ে বয়ে যাওয়া মুহুরীর শাখা নদী কহুয়ার পানি এক সময়
এতটাই স্বচ্ছ ছিল যে, এ নদীতে মাছের উপস্থিতি স্পষ্ট দেখা যেত। আর এখন
যে স্থানে পরশুরাম কসাই খানা ও বাজারের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে, এর আশপাশের পানির রং বদলে গেছে। সারা বছর ধরে প্রতিদিন বাজার ও তৎসংলগ্ন এলাকার যে পরিমাণ বর্জ্য ও নোংরা এই নদীতে ফেলা হচ্ছে ফলে এই নদী বর্জ্যেরখালে রুপান্তরিত হয়েছে অনেক বছর আগে থেকেই। পৌর আইন মতে বর্জ্য নির্দিষ্ট জায়গায় সংরক্ষণ করার নির্দেশ থাকলেও মানা হয়না তা। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই বাজারের এইসব বর্জ্য সরাসরি ফেলা হচ্ছে কহুয়া নদীতে
বর্জ্য নদীতে ফেলার কারণে নদীর জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। আশপাশের লোকজন এই দূষিত পানি ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করলেও নদীর এই দূষণ এক জায়গায় স্থির থাকে না; প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এই দূষণ আমাদের খাদ্যচক্রেও প্রবেশ করছে।
কসাই খানা, বাজার সহ নদীর পাড়ে অবস্থিত পরিবার গুলোর সব ধরনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে তা পরিবেশ ও মানবদেহের জন্য কী ধরনের হুমকি সৃষ্টি করে তা বহুল আলোচিত। কাজেই বর্জ্যরে কারণে যাতে কহুয়া বা এর আশপাশের পরিবেশ কোনো ধরনের হুমকির মুখে না পড়ে, এটা নিশ্চিত করতে হবে।

কেবল কহুয়াই নয়, দখল-দূষণে পরশুরাম উপজেলার প্রধান নদী মুহুরী সহ সিলোনীয়া এবং দেশের অনেক নদ নদী স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য হারিয়েছে অনেক আগেই। এছাড়া অনেক বিল ও খালে অবৈধ দখলদারের তৎপরতা কতটা বেড়েছে তাও বহুল আলোচিত। বস্তুত কোনো কোনো ক্ষেত্রে দখলের মাত্রা এতটাই ভয়াবহ যে, অনেক নদী মরা খালে পরিণত হয়েছে। অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ এবং দূষণবিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখা হলেও এর সুফল কেন দৃশ্যমান নয়, এটা এক প্রশ্ন। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে দখলদারদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করে থাকে স্থানীয় প্রভাবশালীদের একটি অংশ।

দেশের বিভিন্ন স্থানে নদ-নদী, খাল-বিল অবৈধভাবে দখল হয়ে যাওয়ার কারণে পানিপ্রবাহের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে; নদ-নদী সংকীর্ণ হয়ে পড়ছে। এতে বর্ষাকালে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি অনেক স্থানে বৃষ্টির পানি জমে ফসল ও বাড়িঘর তলিয়ে যায়। নদ-নদী, খাল-বিল, প্রাকৃতিক জলাশয় আমাদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। এসব সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। নদী দখলদার ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে দেরি করা হলে যত অভিযানই পরিচালনা করা হোক না কেন, তাতে কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলবে কিনা এ বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।