ফেনীর পরশুরামে ট্রাক থেকে মাটি পড়ে সড়কে দূর্ঘটনার আশংকা।

প্রকাশিত: ৭:৫২ অপরাহ্ণ, মার্চ ৪, ২০২৩

শিবব্রত(বিশেষ প্রতিনিধি)
————————————————————

ফেনীর পরশুরামে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সরকারী রাস্তা নষ্ট হচ্ছে মাটিবাহী ট্রাক ও ট্রাক্টরের কারনে।একের পর এক রাস্তা নষ্ট হলেও প্রশাসন রয়েছে নিরব দর্শকের ভূমিকায়। সড়কের ঘাতক বলে পরিচিত ট্রাক ও ট্রাক্টরের দখলে রয়েছে পরশুরাম পৌর এলাকাসহ সীমান্তবর্তী সংযুক্ত রাস্তা গুলো।

ট্রাক ও ট্রাক্টরের কারনে প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে কাঁচা ও পাঁকারাস্তা গুলো। এছাড়াও এ সকল ট্রাক ও ট্রাক্টরের বেপরোয়া গতিতে চলাচলের কারনে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দূর্ঘটনা। গ্রামীন সড়কে চলাচলকারী এবং রাস্তার পাশে বসবাসরত জনসাধারণ অবৈধ ট্রাক ও
ট্রাক্টরের জুলুমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। উপজেলা এলাকায় মহাসড়ক ও গ্রামীন সড়কে অবাধে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নিষিদ্ধ ট্রাক ও ট্রাক্টর গুলো। তাছাড়া চাষাবাদের জন্য আমদানিকৃত ট্রাক্টর এখন অবৈধ ট্রাক বা পরিবহন হয়ে গ্রামীন জনপদে সর্বনাশ ঘটাতে শুরু করেছে। যা সড়কের বেহাল দশা সৃষ্টি করছে।

পরশুরাম উপজেলার পৌরসভা সহ ৩ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন নতুন নতুন
রাস্তায় মাটি বোঝাই অবৈধ ট্রাক
ও ট্রাক্টরের চলাচলের কারণে ধুলোর সৃস্টি হচ্ছে। ওইসব ট্রাক এবং ট্রাক্টরে করে মাটি পরিবহনের সময় রাস্তায় মাটি পড়ে থাকার কারণে একটু বৃষ্টি হলেই মরণ ফাঁদে পরিনত হবে। এই সব অবৈধ পরিবহনের বেপরোয়া চলাচলে শব্দ দূষনে আশপাশের গ্রামের রাস্তায় চলাচলকারী জনসাধারণ ও শিক্ষার্থীরা অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ইটভাটায় ইট,বালি,মাটি পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে এসকল ট্রাক ও ট্রাক্টর।

এসব অধিকাংশ ট্রাক ও ট্রাক্টরের নেই কোন রোডপারমিট। তাছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রয়োজন না হওয়ায় ১৫ থেকে২০ বছরের শিশু-কিশোররাও এসব ট্রাক ও ট্রাক্টর চালানোর সুযোগ পাচ্ছে। যার ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে সড়কে দূর্ঘটনা।অবৈধ এসব পরিবহন চলাচলের কারণে এলাকার স্থানীয়রা জানান,সরকারের কোটি কোটি টাকার রাস্তাঘাট ধ্বংস করছে মাটি পরিবহনকারী ট্রাক ও ট্রাক্টরগুলো।
এসব ট্রাক ও ট্রাক্টরের চাকায় ধ্বংস হচ্ছে মহাসড়ক সহ গ্রামের সদ্য নির্মিত কাঁচা,আধাপাকা ও পাকা সড়ক গুলো।

পরশুরাম উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) শাহ্ আলম বলেন,মাটি বোঝাই ট্রাক ও ট্রাক্টরের চলাচলের কারণে নব-নির্মিত পাকা রাস্তা গুলোর ক্ষতি হচ্ছে। তারপরও আমরা কিছু করতে পারছি না,কারণ মাটিবোঝাই ট্রাক ও ট্রাক্টর গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব আমাদের নয়। স্থানীয়দের অভিযোগ এসব যন্ত্রদানবের প্রতি স্থানীয় প্রশাসন একেবারেই উদাসীন। এলাকার প্রভাবশালীদের খুঁটির জোরে এ সকল ট্রাক ও ট্রাক্টর চলছে বহাল তবিয়তে।
স্থানীয়রা আরো জানান, ট্রাক ও ট্রাক্টরের বেপরোয়া চলাচলে রাস্তাঘাট ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। ওইসব মাটিবাহী পরিবহন থেকে পাকা রাস্তা গুলোতে মাটি পড়ে একাকার হয়ে গেছে।বোঝা যাচ্ছে না এই সড়কগুলো পাকা না কাঁচা।একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তা মরণ ফাঁদে পরিনত হবে । গত বছর ও এই সময়ে বৃষ্টি হওয়ার পর অনেক গাড়ী ও মোটরসাইকেল এক্সিডেন্ট হয়ে দূর্ঘটনা ঘটেছে। তারা আরো জানায়, প্রতিবছরই এই মৌসুমে এটা হচ্ছে। রোড পারমিট বিহীন ট্রাক্টর ও লাইসেন্স বিহীন চালকের কারণে দোকান পাট,রাস্তাঘাটে চলাচলকারী মানুষকে সার্বক্ষনিক উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার মধ্যে চলাচল করতে হচ্ছে।

বিকট শব্দে মাটি বোঝাই নিয়ে সাদা পাউডারের মত ধুলো উড়িয়ে দাপিয়ে চলছে এ সকল ট্রাক ও
ট্রাক্টরগুলো।
পরশুরাম উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নু চিংনু মার্মা জানান, আমি যোগদানের পর থেকে মাটি ও বালি উত্তোলনের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করেছি। তিনি আরও বলেন,মাটি ও বালি উত্তোলনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে মোবাইল কোটের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শমসাদ বেগম বলেন, কে কার জমি থেকে মাটি কাটছে আর কোথায় নিয়ে যাচ্ছে আমাকে জানালে আমি আইন গতভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।