“২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তের ভিত্তিতে করা হয়নি।” ঃঅর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

প্রকাশিত: ১১:০৫ অপরাহ্ণ, জুন ২, ২০২৩

বিশেষ প্রতিনিধি : অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, “২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তের ভিত্তিতে করা হয়নি।” শুক্রবার ( ২ জুন) রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, অর্থ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম বক্তব্য দেন।

অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, “বিভিন্ন দেশের মতো আইএমএফ বাংলাদেশে এসেছে এবং অর্থনীতিতে সহায়তা করার জন্য কিছু সুপারিশ করেছে। আমরা আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের প্রেসক্রিপশন নিয়েছি, কিন্তু বাজেট তৈরিতে সেগুলো অনুসরণ করিনি।” তিনি বলেন, “আইএমএফ শুধু অর্থ দিয়ে দেশগুলোকে সাহায্য করছে না, তারা অর্থনীতির ওপর নজরদারিও করছে। এটা অর্থনীতির জন্য ভালো।”

মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী বলেন, “মূল্যস্ফীতির ক্রমবর্ধমান প্রবণতা নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন। আমরা মূল্যস্ফীতি নিয়ে শঙ্কিত, কিন্তু এটা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে নয়। আমরা জনগণকে খাওয়ানো বন্ধ করতে পারি না।”

মুস্তফা কামাল বলেন, “সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নমনীয় উপায়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির মাধ্যমে সরকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে খাদ্য সরবরাহ করে আসছে। আমরা মুদ্রাস্ফীতির কারণ চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি এবং সেগুলোর সমাধান করার চেষ্টা করছি। আমাদের যদি কোনো ছাড় দিতে হয়, আমরা তা করবো।”

অর্থমন্ত্রী দাবি করেন, নতুন বাজেটে মূলত দরিদ্র জনগণের সুবিধার দিকে মনোনিবেশ করা হয়েছে। সবাইকে কর দিতে হবে উল্লেখ করে মুস্তফা কামাল বলেন, “আমরা আমাদের ট্যাক্স নেট প্রসারিত করেছি যাতে আরো কর সংগ্রহ করা যায়। আর, অতীতের বাজেটের মতো, এটিও আগামী নির্বাচন এবং জনগণ উভয়কেই লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়েছে। আমরা বাজেটের লক্ষ্য থেকে জনগণ বা নির্বাচনকে আলাদা করতে পারি না।”

বিগত বাজেটে করা সব প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, “এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে রেমিট্যান্স আয়ে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। নিম্নমুখী প্রবণতার পর, রেমিট্যান্স আয় আবার বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং রিজার্ভের মাধ্যমে আমরা পাঁচ মাসের আমদানি বিল মেটাতে পারি।” সরকারের কিছু পদক্ষেপের পর, ধীরে ধীরে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার, মূল্যস্ফীতি, রেমিট্যান্স এবং ব্যাংকিং খাত নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক ১৯ জুন তার মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে। সেখানে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রেমিট্যান্স এবং রিজার্ভ বৃদ্ধির পরিকল্পনা তৈরি করা হবে।”

আবদুর রউফ তালুকদার দাবি করেন, ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ বাড়লেও, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রির মাধ্যমে বাজার থেকে বেশি অর্থ উত্তোলন করায় মূল্যস্ফীতি বাড়বে না।