ইন্টারনেটের ধীরগতি, ক্ষতির মুখে বিপিও খাত

প্রকাশিত: ৭:৪৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৯, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকার মহাখালীতে খাজা টাওয়ারের আগুনে দুটি ডাটা সেন্টার, আইআইজি প্রতিষ্ঠান পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দেশের ইন্টারনেটে ধীরগতি ভর করেছে। এই অবস্থার মধ্যে সাবমেরিন কেবলের উন্নয়নকাজের কারণে ইন্টারনেটে ধীরগতির কারণে বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও) খাত ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছেন এই খাতের উদ্যোক্তারা।

গতকাল কারওয়ান বাজারে ভিশন-২১ টাওয়ারের সম্মেলনকক্ষে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্ট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো) ও প্রযুক্তি সাংবাদিকদের সংগঠন টেকনোলজি মিডিয়া গিল্ড বাংলাদেশ-টিএমজিবি আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় এ তথ্য জানানো হয়।

‘দেশের বিপিও খাতের গতি-প্রকৃতি : সামনের দিনের চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ’ শীর্ষক ওই গোলটেবিল বৈঠকে আলোচনা অংশ নেন বাক্কোর সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন, সহসভাপতি তানভীর ইব্রাহিম, পরিচালক মুসনাদ ই আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানজিরুল বাসার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আইসিটি বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিলের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফয়সাল খান, টিএমজিবির সভাপতি মোহাম্মদ কাওছার উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক মুরসালিন হক জুনায়েদসহ ইসি ও ট্রস্টি বোর্ডের সদস্যরা।

ইন্টারনেটের ধীরগতির কারণে বিপিও খাত ক্ষতির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাক্কোর সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘খাজা টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে দেশে ইন্টারনেট সেবায় বিঘ্ন ঘটে। আমাদের ব্যবসার মূল শক্তি ইন্টারনেট। ইন্টারনেটের ধীরগতিতে আমাদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

গোলটেবিল বৈঠক উপস্থাপনা করেন বাক্কোর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানজিরুল বাসার ও টিএমজিবির সাধারণ সম্পাদক মুরসালিন হক জুনায়েদ।

গোলটেবিল আলোচনায় জানানো হয়, বিশ্ববাজারে বর্তমানে বিপিও খাতের আকার ৬০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এটি প্রতিবছর ১৮-২০% হারে বাড়ছে। এই খাতে বাংলাদেশ ১৮০ মিলিয়ন ডলারের বাজারে অংশ নিতে সক্ষম হয়েছে। যা মোট অপেক্ষমাণ কাজের ১ শতাংশেরও কম।

বিপিও খাতের বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের হিস্যা বাড়ানো গেলে বৈদেশিক আয় হতে পারে গার্মেন্টস খাতের চেয়েও বেশি। 

তৌহিদ হোসেন আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের বিপিও খাতে ২০২৫ সালের মধ্যে এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান এবং এক বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।’

আলোচনায় অংশ নিয়ে খাতটির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, দেশের অন্যতম বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের খাত হিসেবে অল্প কয়েক বছরে অনেক দূর এগিয়েছে বিপিও। বৈঠক থেকে বিপিও খাতের বিভিন্ন সমস্যা যেমন, দক্ষ কর্মীর অভাব, চাকরির দুই-তিন মাসের মাথায় ছেড়ে দেওয়া, নির্দিষ্ট শিফটে কাজ না করার মানসিকতার মতো প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে। এ ছাড়া ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়ার সংযোগ না থাকা, সামাজিকভাবে বিপিওতে কাজ করাকে ছোট হিসেবে দেখাকেও বিপিওর ক্ষেত্রে সংকট হিসেবে দেখেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের ৩০ শতাংশেরও বেশি প্রতিষ্ঠান এখন আন্তর্জাতিক বাজারে কাজ করছে। পর্যাপ্ত পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তা ৭০ শতাংশে গিয়ে পৌঁছবে। আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের কাজ যত বাড়বে, দেশের অর্থনীতিও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে ততটাই সমৃদ্ধশালী হবে।’