অর্থনৈতিক সংকট করোনার সময়কে ছাড়িয়ে যাচ্ছে ক্রাইম পেট্রোল ক্রাইম পেট্রোল News প্রকাশিত: ১২:২০ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩ সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর নিজস্ব প্রতিবেদক দেশে এখন যে অর্থনৈতিক সংকট চলছে তা করোনার সময়কেও ছাড়িয়ে গেছে। করোনার সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবেলায় বেসরকারি খাতকে প্রণোদনা দিয়েছিল সরকার। এখন তার চেয়েও খারাপ অবস্থা। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে তাই সুনির্দিষ্টভাবে এসএমই খাতকে বিশেষ সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন। মেট্রোপলিটন চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও এপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর গতকাল সোমবার রপ্তানি প্রস্তুতি তহবিল (ইআরএফ) প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। নাসিম মঞ্জুর বলেন, মূল্যস্ফীতি অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। ডলারের বড় সংকট চলছে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচকগুলো নেতিবাচক। এ অবস্থা ব্যবসা-বাণিজ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এমন পরিস্থিতি উত্তরণে সরকারের সহযোগিতা দরকার। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়িত এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবসের (ইসিফরজে) এই তহবিল প্রকল্প ২০২০ সালে শুরু হয়। রপ্তানির সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এই প্রকল্প নেওয়া হয়। এর আওতায় সম্ভাবনাময় চার রপ্তানি খাত-চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাদুকা, প্লাস্টিক, হালকা প্রকৌশল শিল্পসহ ৫৭০ উদ্যোক্তাকে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া হয়। মূলত উদ্যোক্তাদের বৈশ্বিক মানসম্পন্ন পণ্য তৈরি এবং আন্তর্জাতিক সরবরাহ কাঠামোতে অংশগ্রহণে সহায়তা করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে রপ্তানি প্রস্তুতি তহবিল বড় ভূমিকা রেখেছে। চলমান সংকট মোকাবেলায় এই সুবিধা অব্যাহত রাখা উচিত। লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় রপ্তানি প্রস্তুতি তহবিল প্রকল্প শেষ হলেও সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে এমন তহবিল গঠন করা দরকার, যাতে নতুন পণ্য উন্নয়ন করা যায়। তিনি বর্তমান ডলার সংকট মোকাবেলায় রপ্তানির জন্য নতুন পণ্য উৎপাদন ও পণ্যে মূল্য সংযোজন যারা করছে তাদের সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান। নাসিম মঞ্জুর বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সহযোগিতা মিলছে না। কর সুবিধা পেলে দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ আসবে। এই ক্ষেত্রে সুবিধা পেতে বাণিজ্য সংগঠনগুলোর সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন, যাতে তারা নীতি সহায়তা ও শুল্ক কাঠামো পরিবর্তনে ভূমিকা রাখতে পারে। অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, নতুন সংকটময় পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অন্য দেশে রপ্তানিতে বাজার সুবিধা পেতে তেমন কোনো সমস্যা নেই। আমদানি ও রপ্তানিতে আরো ভালো করতে বাণিজ্য সংগঠনগুলোর উন্নয়ন প্রয়োজন। এই সংগঠনগুলো এ ক্ষেত্রে বাস্তবানুগ ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে নীতি সহায়তার ক্ষেত্রে সরকারের সঙ্গে খাতভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান বের করা সম্ভব। পাশাপাশি রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ ও নতুন বিনিয়োগ আনতে অবদান রাখার সুযোগ আছে। তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘রপ্তানি বহুমুখীকরণের জন্য এখন বিদেশি বিনিয়োগ জরুরি। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বিদেশি বিনিয়োগ আমরা পাচ্ছি না। বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকসহ অন্য উন্নয়ন সহযোগীরা আমাদের সহায়তা করতে পারে।’ তিনি মনে করেন, ইআরএফ তহবিলের মতো কর্মসূচি দেশের রপ্তানিকারকদের প্রতিযোগিতাসক্ষম করে গড়ে তোলার পাশাপাশি রপ্তানি বহুমুখীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, রপ্তানি প্রস্তুতি তহবিলের আওতায় মোট বিনিয়োগ হয়েছে ৩৩.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংকের অনুদান সহায়তা ছিল ১৭.৫ মিলিয়ন ডলারের, বাকি প্রায় ১৭ মিলিয়ন ডলার উদ্যোক্তারা নিজেরা ব্যয় করেছেন। ইসিফরজে প্রকল্প পরিচালক মো. মনছুরুল আলমের সভাপতিত্বে বিশ্বব্যাংকের লিড কান্ট্রি ইকোনমিস্ট এবং প্রগ্রাম লিডার সোলায়মান কলিবেলি। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইআরএফ টিম লিডার ডেভ রুঙ্গানাইকালু। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র প্রাইভেট সেক্টর স্পেশালিস্ট হোসনা ফেরদৌস, ইআরএফ কর্মসূচির পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইয়াং কনসালট্যান্টসের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন ও উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের কর্নধাররা বক্তব্য দেন। প্রসঙ্গত, ইআরএফ তহবিল থেকে কম্পানিগুলোকে প্রথম ধাপে কারখানা বা পণ্য অ্যাসেসমেন্টের জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার ডলার এবং কারখানা বা পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য দ্বিতীয় ধাপে সর্বোচ্চ ৪০ হাজার ডলার দেওয়া হয়। তৃতীয় ধাপে আপগ্রেডেশন ও আধুনিকায়নের জন্য দুই লাখ ডলার এবং কভিড সুরক্ষা সামগ্রী উৎপাদনের জন্য পাঁচ লাখ ডলার পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচির সুবিধাভোগী প্রতিষ্ঠানে গড়ে ১০ শতাংশ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। SHARES অর্থনৈতিক বিষয়: অর্থনৈতিক সংকট
দেশে এখন যে অর্থনৈতিক সংকট চলছে তা করোনার সময়কেও ছাড়িয়ে গেছে। করোনার সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবেলায় বেসরকারি খাতকে প্রণোদনা দিয়েছিল সরকার। এখন তার চেয়েও খারাপ অবস্থা। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে তাই সুনির্দিষ্টভাবে এসএমই খাতকে বিশেষ সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন।
মেট্রোপলিটন চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও এপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর গতকাল সোমবার রপ্তানি প্রস্তুতি তহবিল (ইআরএফ) প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। নাসিম মঞ্জুর বলেন, মূল্যস্ফীতি অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। ডলারের বড় সংকট চলছে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচকগুলো নেতিবাচক।
এ অবস্থা ব্যবসা-বাণিজ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এমন পরিস্থিতি উত্তরণে সরকারের সহযোগিতা দরকার। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়িত এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবসের (ইসিফরজে) এই তহবিল প্রকল্প ২০২০ সালে শুরু হয়। রপ্তানির সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এই প্রকল্প নেওয়া হয়।
এর আওতায় সম্ভাবনাময় চার রপ্তানি খাত-চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাদুকা, প্লাস্টিক, হালকা প্রকৌশল শিল্পসহ ৫৭০ উদ্যোক্তাকে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া হয়। মূলত উদ্যোক্তাদের বৈশ্বিক মানসম্পন্ন পণ্য তৈরি এবং আন্তর্জাতিক সরবরাহ কাঠামোতে অংশগ্রহণে সহায়তা করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে রপ্তানি প্রস্তুতি তহবিল বড় ভূমিকা রেখেছে। চলমান সংকট মোকাবেলায় এই সুবিধা অব্যাহত রাখা উচিত। লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় রপ্তানি প্রস্তুতি তহবিল প্রকল্প শেষ হলেও সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে এমন তহবিল গঠন করা দরকার, যাতে নতুন পণ্য উন্নয়ন করা যায়।
তিনি বর্তমান ডলার সংকট মোকাবেলায় রপ্তানির জন্য নতুন পণ্য উৎপাদন ও পণ্যে মূল্য সংযোজন যারা করছে তাদের সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান। নাসিম মঞ্জুর বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সহযোগিতা মিলছে না। কর সুবিধা পেলে দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ আসবে। এই ক্ষেত্রে সুবিধা পেতে বাণিজ্য সংগঠনগুলোর সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন, যাতে তারা নীতি সহায়তা ও শুল্ক কাঠামো পরিবর্তনে ভূমিকা রাখতে পারে। অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, নতুন সংকটময় পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অন্য দেশে রপ্তানিতে বাজার সুবিধা পেতে তেমন কোনো সমস্যা নেই। আমদানি ও রপ্তানিতে আরো ভালো করতে বাণিজ্য সংগঠনগুলোর উন্নয়ন প্রয়োজন। এই সংগঠনগুলো এ ক্ষেত্রে বাস্তবানুগ ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে নীতি সহায়তার ক্ষেত্রে সরকারের সঙ্গে খাতভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান বের করা সম্ভব। পাশাপাশি রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ ও নতুন বিনিয়োগ আনতে অবদান রাখার সুযোগ আছে। তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘রপ্তানি বহুমুখীকরণের জন্য এখন বিদেশি বিনিয়োগ জরুরি। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বিদেশি বিনিয়োগ আমরা পাচ্ছি না। বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকসহ অন্য উন্নয়ন সহযোগীরা আমাদের সহায়তা করতে পারে।’ তিনি মনে করেন, ইআরএফ তহবিলের মতো কর্মসূচি দেশের রপ্তানিকারকদের প্রতিযোগিতাসক্ষম করে গড়ে তোলার পাশাপাশি রপ্তানি বহুমুখীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, রপ্তানি প্রস্তুতি তহবিলের আওতায় মোট বিনিয়োগ হয়েছে ৩৩.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংকের অনুদান সহায়তা ছিল ১৭.৫ মিলিয়ন ডলারের, বাকি প্রায় ১৭ মিলিয়ন ডলার উদ্যোক্তারা নিজেরা ব্যয় করেছেন। ইসিফরজে প্রকল্প পরিচালক মো. মনছুরুল আলমের সভাপতিত্বে বিশ্বব্যাংকের লিড কান্ট্রি ইকোনমিস্ট এবং প্রগ্রাম লিডার সোলায়মান কলিবেলি। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইআরএফ টিম লিডার ডেভ রুঙ্গানাইকালু। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র প্রাইভেট সেক্টর স্পেশালিস্ট হোসনা ফেরদৌস, ইআরএফ কর্মসূচির পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইয়াং কনসালট্যান্টসের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন ও উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের কর্নধাররা বক্তব্য দেন। প্রসঙ্গত, ইআরএফ তহবিল থেকে কম্পানিগুলোকে প্রথম ধাপে কারখানা বা পণ্য অ্যাসেসমেন্টের জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার ডলার এবং কারখানা বা পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য দ্বিতীয় ধাপে সর্বোচ্চ ৪০ হাজার ডলার দেওয়া হয়। তৃতীয় ধাপে আপগ্রেডেশন ও আধুনিকায়নের জন্য দুই লাখ ডলার এবং কভিড সুরক্ষা সামগ্রী উৎপাদনের জন্য পাঁচ লাখ ডলার পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচির সুবিধাভোগী প্রতিষ্ঠানে গড়ে ১০ শতাংশ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে।