মির্জা ফখরুল-আমীর খসরুর রিমান্ড আবেদন নাকচ, জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি

প্রকাশিত: ১২:৪৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিনিধি

নাশকতার এক মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে রিমান্ডে নিতে পুলিশের আবেদন নাকচ করে তাদের কারা ফটকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী এ আদেশ দেন। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশের দিন দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর রাজধানীর পল্টন থানায় এ মামলা করে পুলিশ। এ মামলায় গত ১৪ ডিসেম্বর মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরুকে গ্রেপ্তায় দেখায় পুলিশ।

পরে ওইদিনই তাদের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক-এসআই সুমিত কুমার সাহা। আবেদনে এ দুই বিএনপি নেতার ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছিল। 

এ আদেশের আগে নাশকতার নয় মামলায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন আবেদন গ্রহণ করে তা আইন অনুযায়ী নিষ্পত্তি করতে ঢাকার সিএমএম-কে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বিএনপির মহাসচিবের রিটে প্রাথমিক শুনানির পর এ আদেশ দেন বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও কায়সার কামাল, সগির হোসেন লিয়ন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।

আইনজীবী সগির হোসেন লিয়ন বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশের নির্দেশনা উল্লেখ করে বাকি নয় মামলায় আবার নতুন করে জামিন আবেদন করা হবে।’ তবে সিএমএম আদালতে নতুন করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জামিন আবেদন করা হবে কিনা, তা পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান বিএনপির আইন সম্পাদক, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কায়সার কামাল।

সরকার পতনের এক দফা দাবিতে গত ২৮ অক্টোবর সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। ২০ শর্তে দলটিকে সমাবেশের অনুমতি দেয় পুলিশ। ওই দিন আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরুর আগেই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় দলটির নেতাকর্মীরা। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের ফটক ভেঙে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। সংঘর্ষের মধ্যে পণ্ড হওয়া সমাবেশ থেকেই পরদিন সারা দেশে হরতালের ডাক দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

২৯ অক্টোবর সেই হরতালের সকালে গুলশানের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার অভিযোগের মামরায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

এদিকে সমাবেশের দিন পুলিশ কনস্টেবল আমিনুল পারভেজ হত্যায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে প্রধান আসামি করে পল্টন থানায় মামলা করে পুলিশ। এ মামলায় গত ২ নভেম্বর রাতে গুলশানের বাসা থেকে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সমাবেশের দিন হামলা- সংঘর্ষের পর রাজধানীর পল্টন ও রমনা থানায় মোট ১১টি মামলা করে পুলিশ। দুই মামলায় দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করলেও বাকি ১০ মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখাচ্ছিল না পুলিশ। এ অবস্থায় গত ১৩ ডিসেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম -সিএমএম আদালতে বিএনপির এ দুই নেতার জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। কিন্তু সিএমএম তাদের জামিন আবেদন গ্রহন না করায় পরদিন হাইকোর্টে রিট করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ১০ মামলায় জামিন আবেদন গ্রহণ করে সিএমএম যেন তা নিষ্পত্তি করেন, সে নির্দেশনা চাওয়া হয় রিটে। সে রিটে প্রাথমিক শুনানির পর সোমবার আদেশ দেন উচ্চ আদালত।