১৪টি বাড়ির খবর সঠিক নয় যুক্তরাষ্ট্রে

প্রকাশিত: ৬:২৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১১, ২০২৩
USA flag, united states

১১ জানুয়ারি ২০২৩

নিজস্ব প্রতিনিধি

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা (এমডি) পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে তার ১৪টি বাড়ির যে খবর পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, তার কোনো সত্যতা নেই। উচ্চ আদালত তদন্তের আদেশ দেওয়ার পরদিন মঙ্গলবার রাজধানীর কাওরান বাজারে ঢাকা ওয়াসা ভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রকৌশলী তাকসিম বলেন, যে ১৪টি বাড়ির কথা বলা হয়েছে, তার মধ্যে পাঁচটি বাড়িতে আমার পরিবার বিভিন্ন সময় ভাড়া থেকেছেন। আর একটি বাড়ি আমার স্ত্রীর নামে। আমি, আমার স্ত্রী, সন্তান সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। আমি জীবনে হারাম পয়সা খাইনি, খাব না। ঢাকা ওয়াসার এমডি পদের চাকরি ছেড়ে দিতে চেয়েছি বহুবার। আমাকে অনুরোধ করে রাখা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সোমবার একটি জাতীয় দৈনিক ‘ওয়াসার তাকসিমের যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ বাড়ি!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদটি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের নজরে আনলে বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ ওই ঘটনা তদন্ত করতে দুদককে আদেশ দেয়। ওই আদেশে তাকসিম এ খান দুর্নীতি করে বাড়ি করেছেন কিনা, সে বিষয়ে অনুসন্ধান করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

তাকসিম এ খান বলেন, তার স্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি চাকরি করেন। ১৯৯৫ সাল থেকে তার পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। বাড়ি ও অর্থনৈতিক লেনদেন নিয়ে আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করছে বলে যে খবর গণমাধ্যমে এসেছে, সেটা ‘স্টান্টবাজি’।

তিনি বলেন, আমার স্ত্রী-সন্তান সেখানে সুপ্রতিষ্ঠিত, তাই সেখানে একটি বাড়ি কেনায় খুব অসুবিধার কিছু নেই। আমার স্ত্রীর নামে ওই একটা বাড়ি আছে। সেটাকে বাড়ি বলা যাবে না, এটা একটা অ্যাপার্টমেন্ট। আমি সেখান (যুক্তরাষ্ট্র) থেকেই ঢাকা ওয়াসায় চাকরি করতে এসেছি। এমন নয় যে, এখানে চাকরি করে আমার সম্পদ ওখানে গড়েছি। আমার স্ত্রী সেখানে সরকারি চাকরি করে। আমার সন্তানও সেখানে খুব ভালোমানের চাকরি করে। আমি যে ইনকাম করি, তা থেকে ওদের কিছুই দিতে হয় না। তারা ওখানে অনেক ভালো আছে; যে কারণে আমার স্ত্রীর নামে একটি অ্যাপার্টমেন্ট থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়।

তিনি আরও বলেন, এর মধ্যে ৫টি বাসার যে ঠিকানা দেওয়া হয়েছে সেগুলোতে আমার পরিবার বিভিন্ন সময় ভাড়া থেকেছে। কিন্তু মিথ্যা একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে দেওয়া হলো। আমার ছেলেও এক সময় সেখানে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল, কিন্তু তা অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছে। সেখানে অভিভাবক হিসাবে আমার নাম আছে। এই নামগুলো ইন্টারনেট থেকে নিয়ে প্রতিবেদন করা হয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার ঢাকা ওয়াসার সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক প্রবেশে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম, বাংলাদেশ (ইউডিজেএফ)। সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক ইয়াছিন রানার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইউডিজেএফ’র সভাপতি অমিতোষ পাল ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল মামুন জানিয়েছেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের সংবাদ সংগ্রহ ও সংবাদ সম্মেলনের অধিকার সব সাংবাদিকেরই রয়েছে। কিন্তু ঢাকা ওয়াসার এমডি বরাবরই মূল ধারার সাংবাদিকদের এড়িয়ে সভা-সেমিনার করে থাকেন। পছন্দের কিছু সাংবাদিককে নিয়ে সভা-সেমিনার করেন। মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনের ক্ষেত্রেও তার কোনো ব্যত্যয় হয়নি। এই ধরনের কর্মকাণ্ড স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকি। ভবিষ্যতে এই ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহবান জানান তারা।