‘দায়’ থেকে অব্যাহতি পেলেন বিচারক সোহেল রানা ক্রাইম পেট্রোল ক্রাইম পেট্রোল News প্রকাশিত: ৬:০৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৪ নিজস্ব প্রতিনিধি আদালত অবমাননার দায় থেকে কুমিল্লার সাবেক মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিজেএম) সোহেল রানাকে অব্যাহতি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সোহেল রানার আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে সোহেল রানার আপিলের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও শাহ মঞ্জুরুল হক। তাঁদের সহযোগিতা করেন আইনজীবী রাফিউল ইসলাম ও মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ খান। আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘হাইকোর্টের একটি আদেশে সোহেল রানা যে লিখিত জবাব দিয়েছিলেন, সেখানে আদালত অবমাননাকর কিছু মন্তব্য ছিল বিধায় হাইকোর্ট তাঁকে জরিমানাসহ কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে তাঁর আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এ রায়ে আদালত অবমাননার দায় থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁর বাকি বিচারিক জীবনের জন্য কিছু নির্দেশনা থাকবে। সে নির্দেশনাগুলো আপিল বিভাগ উন্মুক্ত আদালতে বলেননি। রায় প্রকাশ হলে জানা যাবে।’ আদালত অবমাননার দায় থেকে যে কারণে সোহেল রানার সাজা ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১(ক) ধারা অনুসারে ভিওআইপি (ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল) সংক্রান্ত একটি মামলার কার্যক্রম ২০১৯ সালের ৬ মার্চ স্থগিত করেন হাইকোর্ট। রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু কুমিল্লার তখনকার সিজেএম সোহেল রানা সে স্থগিতাদেশ উপেক্ষা করে গত বছর ১০ এপ্রিল মামলাটির অভিযোগ গঠন করেন। অভিযোগ গঠন করেই ক্ষান্ত ছিলেন না, এ মামলায় একাধিক আদেশও দেন তিনি। মামলার এক আসামি বিষয়টি নজরে আনলে গত বছর ১৪ আগস্ট হাইকোর্ট সোহেল রানার কাছে তাঁর বিচারিক কাজের ব্যাখ্যা চান। ২১ আগস্ট আদালতে হাজির হয়ে তাঁকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। নির্দেশমতো ওই দিন তিনি হাজির হয়ে রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে হাইকোর্টে ব্যাখ্যা দাখিল করেন। কিন্তু লিখিত ব্যাখ্যার ভাষা, শব্দ চয়ন আদালতের কাছে অবমাননাকর মনে হওয়ায় ২৮ আগস্ট হাইকোর্ট তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার স্বপ্রণোদিত রুল জারি করেন। আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে তাঁর বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। সেই সঙ্গে তাঁকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। রুল জারির পর সোহেল রানা মামলার অভিযোগ গঠনের আদেশ প্রত্যাহার করে হাইকোর্টের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন করেন। পরে গত বছর ১২ অক্টোবর আদালত অবমাননার রুলটি যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন গ্রহণ না করে উচ্চ আদালত তাঁকে অবমাননার দায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। সাত দিনের মধ্যে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিজিএম) আদালতে সোহেল রানাকে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। রায়ের দিনই জামিনের পর রায় স্থগিত ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬(২-ক) ধারা অনুসারে এক বছরের কম সাজা হলে দণ্ড বা সাজা প্রদানকারী আদালতই আপিল করার শর্তে দণ্ডিতকে জামিন দিতে পারেন। এমনকি দণ্ডের কার্যকারিতাও স্থগিত করতে পারেন। এ বিধান অনুসরণ করে রায়ের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হাইকোর্টের ওই বেঞ্চেই জামিন আবেদন করেন সোহেল রানা। রায়ের বিরুদ্ধে ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করার শর্তে হাইকোর্ট তাঁকে জামিন দেন। পরে জামিন পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন সোহেল রানা। ওই দিনই বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন সোহেল রানা। আপিলের সঙ্গে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েও আবেদন করেন তিনি। পরে গত বছর ১২ ডিসেম্বর তাঁর আপিলের শুনানি শেষ হলে হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ চলমান রেখে বিষয়টি রায়ের জন্য রাখেন আপিল বিভাগ। SHARES জাতীয় বিষয়: #সোহেল রানা
আদালত অবমাননার দায় থেকে কুমিল্লার সাবেক মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিজেএম) সোহেল রানাকে অব্যাহতি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সোহেল রানার আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে সোহেল রানার আপিলের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও শাহ মঞ্জুরুল হক।
তাঁদের সহযোগিতা করেন আইনজীবী রাফিউল ইসলাম ও মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ খান। আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘হাইকোর্টের একটি আদেশে সোহেল রানা যে লিখিত জবাব দিয়েছিলেন, সেখানে আদালত অবমাননাকর কিছু মন্তব্য ছিল বিধায় হাইকোর্ট তাঁকে জরিমানাসহ কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে তাঁর আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এ রায়ে আদালত অবমাননার দায় থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু তাঁর বাকি বিচারিক জীবনের জন্য কিছু নির্দেশনা থাকবে। সে নির্দেশনাগুলো আপিল বিভাগ উন্মুক্ত আদালতে বলেননি। রায় প্রকাশ হলে জানা যাবে।’ আদালত অবমাননার দায় থেকে যে কারণে সোহেল রানার সাজা ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১(ক) ধারা অনুসারে ভিওআইপি (ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল) সংক্রান্ত একটি মামলার কার্যক্রম ২০১৯ সালের ৬ মার্চ স্থগিত করেন হাইকোর্ট।
রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু কুমিল্লার তখনকার সিজেএম সোহেল রানা সে স্থগিতাদেশ উপেক্ষা করে গত বছর ১০ এপ্রিল মামলাটির অভিযোগ গঠন করেন। অভিযোগ গঠন করেই ক্ষান্ত ছিলেন না, এ মামলায় একাধিক আদেশও দেন তিনি। মামলার এক আসামি বিষয়টি নজরে আনলে গত বছর ১৪ আগস্ট হাইকোর্ট সোহেল রানার কাছে তাঁর বিচারিক কাজের ব্যাখ্যা চান। ২১ আগস্ট আদালতে হাজির হয়ে তাঁকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
নির্দেশমতো ওই দিন তিনি হাজির হয়ে রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে হাইকোর্টে ব্যাখ্যা দাখিল করেন। কিন্তু লিখিত ব্যাখ্যার ভাষা, শব্দ চয়ন আদালতের কাছে অবমাননাকর মনে হওয়ায় ২৮ আগস্ট হাইকোর্ট তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার স্বপ্রণোদিত রুল জারি করেন। আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে তাঁর বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। সেই সঙ্গে তাঁকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। রুল জারির পর সোহেল রানা মামলার অভিযোগ গঠনের আদেশ প্রত্যাহার করে হাইকোর্টের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন করেন। পরে গত বছর ১২ অক্টোবর আদালত অবমাননার রুলটি যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন গ্রহণ না করে উচ্চ আদালত তাঁকে অবমাননার দায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। সাত দিনের মধ্যে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিজিএম) আদালতে সোহেল রানাকে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। রায়ের দিনই জামিনের পর রায় স্থগিত ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬(২-ক) ধারা অনুসারে এক বছরের কম সাজা হলে দণ্ড বা সাজা প্রদানকারী আদালতই আপিল করার শর্তে দণ্ডিতকে জামিন দিতে পারেন। এমনকি দণ্ডের কার্যকারিতাও স্থগিত করতে পারেন। এ বিধান অনুসরণ করে রায়ের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হাইকোর্টের ওই বেঞ্চেই জামিন আবেদন করেন সোহেল রানা। রায়ের বিরুদ্ধে ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করার শর্তে হাইকোর্ট তাঁকে জামিন দেন। পরে জামিন পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন সোহেল রানা। ওই দিনই বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন সোহেল রানা। আপিলের সঙ্গে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েও আবেদন করেন তিনি। পরে গত বছর ১২ ডিসেম্বর তাঁর আপিলের শুনানি শেষ হলে হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ চলমান রেখে বিষয়টি রায়ের জন্য রাখেন আপিল বিভাগ।