১৩ শিশুকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে

প্রকাশিত: ৬:১১ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৮, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিনিধি

‘ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটর’ নামের একটি মানবাধিকার সংস্থা অভিযোগ করেছে, মাত্র এক সপ্তাহে ইসরায়েলি বাহিনী আল-শিফা হাসপাতালে এবং এর কাছাকাছি ১৩ শিশুকে সরাসরি গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে। আলজাজিরার লাইভ প্রতিবেদনে এবং মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থাটি তাদের একটি দলের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, আল-শিফা হাসপাতালে ইসরায়েলের অভিযান অব্যাহতভাবে চলছে। স্থানীয় কিছু পরিবার তাদের বাড়ির ভেতরেই অবস্থান করছে।

কিন্তু কিছু পরিবার নিরাপদ হিসেবে মনোনীত রাস্তা ধরে পালানোর চেষ্টা করছিল। তখন সেখানে মারাত্মক এ গুলির ঘটনা ঘটেছে। সেই হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। 

ইসলাম আলি সালোহা নামের এক ফিলিস্তিনি ইউরো-মেডকে বলেছেন,  ইসরায়েলি বাহিনী গত রবিবার (২৪ মার্চ) আল-শিফার কাছে তার দুই ছেলেকে গুলি করে হত্যা করেছে।

তারা হলো ৯ বছর বয়সী আলী এবং ছয় বছর বয়সী সাইদ মুহাম্মদ শেখা। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী পালিয়ে যাওয়ার জন্য ওই রাস্তাকে নিরাপদ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু সেই রাস্তায়ই ওই দুই শিশুকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে। ইসলাম আলি সালোহা আরো বলেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনী আমার ছেলেদের লক্ষ্য করেই গুলি চালিয়েছিল।’
সালোহা বলেন, ‘তার ছেলেরা এবং প্রতিবেশীরা বাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছিল, কারণ ইসরায়েলি বাহিনী তাদের বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলেছিল। তারা বলেছিল ভবনটিতে বোমা হামলার হতে পারে।’

এদিকে মিডল ইস্ট মনিটরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটর জানিয়েছে, আল-শিফা হাসপাতাল এবং এর আশপাশে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী ১৩ শিশুকে হত্যা করেছে। এনজিওটি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, ৪ থেকে ১৬ বছর বয়সী গাজার শিশুদের হত্যার বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য এবং সাক্ষ্য পেয়েছে।’

মিডল ইস্ট মনিটরের প্রতিবেদনেও নিহত ওই দুই শিশুর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের পরিবার এবং এলাকার বাসিন্দাদের সামনে ইচ্ছাকৃতভাবে শিশুদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয় এবং হত্যা করা হয়। 

ইউরো-মেড জানিয়েছে, পরিবারের সঙ্গে বাড়ির ভেতরে থাকা অবস্থায় কিছু শিশুকে হত্যা করা হয়। দখলদার সেনাবাহিনী তখন তাদের বাড়িটি ঘিরে রেখেছিল। অন্যরা বাস্তুচ্যুত হয়েছিল এবং দখলদার সেনাবাহিনীর দেখানো নিরাপদ রাস্তা ধরে যাওয়ার সময় তাদের সরাসরি গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই এনজিও আরো উল্লেখ করেছে, ‘গাজার শিশুদের এভাবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ঘটনা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনসহ আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধ। এর অর্থ মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ঘটানো, এটা গণহত্যা। গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি জনগণ ছয় মাস ধরে নির্যাতিত হয়ে আসছে।’

তারা আরো জানিয়েছে, ‘দখলদার বাহিনী আল-শিফা হাসপাতালের ভেতরে এবং আশপাশে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সামরিক অভিযান চালানোর সময় ভয়ংকর অপরাধ করছে এবং তা চালিয়ে যাচ্ছে। এই অপরাধের মধ্যে রয়েছে পূর্বপরিকল্পিত হত্যা এবং ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড।’

সূত্র : আলজাজিরা, মিডল ইস্ট মনিটর