আশায় বুক বেঁধে মাঠে নামছেন কৃষক ক্রাইম পেট্রোল ক্রাইম পেট্রোল News প্রকাশিত: ১১:৪১ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৪ বীজতলাজুড়ে প্রস্তুত ছিল ঘন সবুজ আমন ধানের চারা। কয়েক দিন পরই খেতে সে চারা লাগানোর কথা ছিল কৃষক শহীদুল ইসলামের। কিন্তু বন্যার ঘোলা পানিতে বীজতলা ডুবে পচে গেছে সব চারা। বন্যার পর বাজারে ধানবীজের তীব্র সংকটে এ মৌসুমে আমন আবাদের আশা ফিকে হয়ে গিয়েছিল তাঁর। এবাজার–ওবাজার ঘুরে শেষ পর্যন্ত বীজ সংগ্রহ করেছেন শহীদুল। আবার আশায় বুক বেঁধে মাঠে নেমেছেন তিনি। শহীদুলের মতো চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার অন্তত ১২ হাজার ৮০০ কৃষক এখন আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের হিসাবমতে, মিরসরাইয়ে এবারের ১ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের বীজতলা তৈরি হয়েছিল। বন্যায় এসব বীজতলার মধ্যে ৯০০ হেক্টর আক্রান্ত হয়েছে। পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫০০ হেক্টর জমির আমন বীজতলা। উপজেলায় বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন কৃষকের সংখ্যা ১২ হাজর ৮০০ জন। গত সোমবার সরেজমিনে উপজেলার মঘাদিয়া, মিঠানালা ও ইছাখালী ইউনিয়ন তিনটি ঘুরে দেখা যায়, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত আমন খেতে আবার নতুন করে ধানের বীজ ফেলছেন কৃষকেরা। আবার কিছু কৃষক বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি এমন এলাকা থেকে চারা সংগ্রহ করে জমিতে রোপণ করছেন। এলাকায় বড় কৃষক হিসেবে পরিচিত মিরসরাই উপজেলার মিঠানলা ইউনিয়নের শেখটোলা গ্রামের কৃষক মো. শহীদুল ইসলাম। গত সোমবার সঙ্গে একজন শ্রমিক নিয়ে বাড়িসংলগ্ন মাঠে ধানের বীজ ছিটাচ্ছিলেন তিনি। জানতে চাইলে এ কৃষক প্রথম আলোকে বলেন, ‘বন্যায় সব মিলিয়ে আমার এক বিঘা জমির আমন চারা নষ্ট হয়ে গেছে। বাজারে এখন বীজের তীব্র সংকট। অনেক কষ্টে বীজ জোগাড় করে আবার মাঠে নেমেছি। সব ঠিক থাকলে এ বীজতলার চারায় সব জমি আবাদ করব। চাষের সময় পিছিয়ে যাওয়ায় ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা আছে। বন্যায় এত বড় ক্ষতি হলো আমাদের অথচ কেউ এখনো খবরই নিল না।’ এ বিষয়ে মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, বন্যায় বীজতলায় ধানের চারা নষ্ট হওয়ার পর অনেক কৃষক আবার বীজতলা তৈরির উদ্যোগ নিচ্ছেন। কৃষি বিভাগ ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন কৃষকদের ধানের চারা উৎপাদনে সহযোগিতা করছে। মিরসরাইয়ে এবার বন্যায় দুই দফায় বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বাজারে কিছু জাতের ধানবীজের সংকট তৈরি হয়েছে। এখন যেসব কৃষক বীজতলায় চারা তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাঁদের বিআর-২২, বিআর-২৩, ব্রি ধান-৩৪, ব্রি ধান-৪৬ ও হাইব্রিড ধানি গোল্ড জাতের চারা তৈরির পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আর যেসব কৃষক ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জমিতে ধানের চারা লাগাতে পারবেন না, তাঁদের এ মৌসুমে আর ধান চাষ না করে সেসব জমিতে আগাম শাকসবজি, শর্ষে, গমজাতীয় ফসল চাষ করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। SHARES জাতীয় বিষয়: কৃষকবন্যা