আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখতে সারজিসসহ তিনজনের রিট

প্রকাশিত: ৬:২৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৮, ২০২৪

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলকে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে অনুমতি না দিতে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা চেয়ে রিট হয়েছে। এ বিষয়ে আইনসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, নির্বাচন কমিশন ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের প্রতি নির্দেশনা দেওয়ার আরজি জানানো হয়েছে রিটে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সারজিস আলমসহ তিনজন আবেদনকারী হয়ে আজ রোববার রিটটি করেছেন। অপর দুজন হলেন মো. আবুল হাসনাত ও মো. হাসিবুল ইসলাম। দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে অপর একটি রিটও করেছেন তাঁরা।

সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের আজকের কার্যতালিকায় রিট দুটি ২৮৩ ও ২৮৪ নম্বর ক্রমিকে ছিল। বিকেলে ফলাফলের ঘরে দেখা যায়, রিট দুটির বিষয়ে ‘আউট’ লেখা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট আইনজীবী বলেছেন, রিট দুটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অবশ্য আগামীকাল মঙ্গলবার হাইকোর্টের অপর একটি দ্বৈত বেঞ্চে রিটের ওপর শুনানি হতে পারে।

আওয়ামী লীগ ছাড়া অপর ১০টি দল হচ্ছে জাতীয় পার্টি (এরশাদ), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, জাতীয় পার্টি (মঞ্জু), বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন, গণতন্ত্রী দল, কমিউনিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, মার্ক্সিস্ট-লেনিনিস্ট (বড়ুয়া) ও সোশ্যালিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ।

১১টি দল নিয়ে করা রিটের (রিট নম্বর–১২৫৯৯/২৪) প্রার্থনায় দেখা যায়, নির্বিচার মানুষ হত্যা, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা, বেআইনি প্রক্রিয়ায় অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের জন্য আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। ১১টি দলের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের পাশাপাশি ভবিষ্যতে সব ধরনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে দলগুলোকে বিরত রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে বিষয়েও রুল চাওয়া হয়েছে রিটে। রুল হলে বিচারাধীন অবস্থায় আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলকে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর অনুমতি না দিতে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

দুটি রিট করার কথা জানিয়ে নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ।

গত তিনটি জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অপর রিট

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সারজিস আলমসহ তিনজনের করা অপর রিটের (রিট নম্বর–১২৫৯৮/২৪) প্রার্থনায় দেখা যায়, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের গেজেট কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না, সে বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে।

এ রিটে আইনসচিব, নির্বাচন কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি (এরশাদ), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, জাতীয় পার্টি (মঞ্জু), বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন, গণতন্ত্রী দল, কমিউনিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, মার্ক্সিস্ট-লেনিনিস্ট (বড়ুয়া) ও সোশ্যালিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশকে বিবাদী করা হয়েছে।

রিটের প্রার্থনায় দেখা যায়, ওই দলগুলো থেকে মনোনয়ন নিয়ে যেসব ব্যক্তি দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার সূত্রে তাঁদের বিরুদ্ধে কেন রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হবে না, সে বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। ওই তিনটি নির্বাচনে দলগুলোর মনোনয়ন নিয়ে তথাকথিত সংসদ সদস্যদের প্লট বরাদ্দ বাতিল, শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা গাড়ির কর ও শুল্ক আদায় এবং পারিশ্রমিক–ভাতাদি ফিরিয়ে নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে বিষয়েও রুল চাওয়া হয়েছে রিটে।