ক্ষমতার অপপ্রয়োগ না করার জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

প্রকাশিত: ১০:০৬ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২৭, ২০২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারের বহুমুখী কার্যক্রম সমন্বয় ও তত্ত্বাবধানকারী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপপ্রয়োগ যাতে না হয় তা নিশ্চিত করার জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ‘জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০২৩’-এর তৃতীয় ও শেষ দিনে বঙ্গভবনে জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে এ নির্দেশনা দেন তিনি।
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘নিজে দুর্নীতিমুক্ত থাকবেন . . . এবং অন্যরাও যাতে দুর্নীতির সুযোগ না পায় সেদিকেও খেয়াল রাখবেন।’
দুর্নীতিকে দেশের উন্নয়নের সবচেয়ে বড় অন্তরায় উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, দুর্নীতির কারণে টেকসই উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই মাঠ প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। আশা করি আপনারা কর্মক্ষেত্রে দায়িত্ব ও ক্ষমতার পার্থক্য সচেতনভাবে বজায় রাখবেন।
জনকল্যাণে ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে ডিসিদের তাদের মেধা ও দক্ষতা ব্যবহার করারও নির্দেশনা দেন আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, জেলা প্রশাসকরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে দেশাত্মবোধ ও একাগ্রতার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে যাবেন।
বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত হয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি প্রত্যাশা করেন, ২০৩০-এর মধ্যেই বাংলাদেশ এসডিজির সব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হবে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ‘আধুনিক ও স্মার্ট বাংলাদেশে’ পরিণত হবে।
জেলা প্রশাসনের কর্ণধার ও সেবক হিসেবে জনগণের দোরগোড়ায় সরকারি সেবা পৌঁছে দেওয়ার অর্পিত এই গুরুদায়িত্ব আরও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করার আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের কাছ থেকে পাওয়া পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে ডিসিদের আন্তরিক হওয়ার পরামর্শ দেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ‘জনগণের সেবা দেওয়া আপনাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। . . . এটাকে দয়া বা অনুগ্রহ মনে করার কিছু নেই।’

করোনাকালে ও পরবর্তীতে করোনার অভিঘাত মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন আর্থিক ও প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য জেলা প্রশাসকদের ধন্যবাদ জানান তিনি। রাষ্ট্রপতি চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে খাদ্যদ্রব্য, ভোজ্যতেল ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিসহ জাতীয় জীবনে নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাদের সবসময়ই জনগণের পাশে থাকার নির্দেশনা দেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বৈশ্বিক পরিস্থিতি মাথায় রেখে সরকারি সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার, ব্যয় সংকোচন এবং সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে আপনাদের আরও যত্নশীল হওয়ার অনুরোধ করছি।’
পরিবেশবান্ধব গ্রামোন্নয়নে আবাসন, শিক্ষা, কৃষিনির্ভর শিল্পের প্রসার, চিকিৎসা সেবা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানীয় জল ও পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থার মাধ্যমে উপজেলা সদরে ও বর্ধিষ্ণু শিল্পকেন্দ্রগুলোকে আধুনিক শহর-উপশহর হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারি উদ্যোগের সঙ্গে বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বয় ঘটাতে জেলা প্রশাসকদেরও কার্যকর ভূমিকা রাখার নির্দেশ দেন রাষ্ট্রপতি।