৮০ বছর আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকান সাবমেরিনের আঘাতে ডুবে যাওয়া জাপানি পরিবহন জাহাজ “মন্টেভিডিও মারু”র ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।

প্রকাশিত: ৭:০৩ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৩, ২০২৩

বিশেষ প্রতিনিধি : ফিলিপাইনের উপকূলে বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক বিপর্যয়ের একটি রহস্যের সমাধান হয়েছে। প্রায় ৮০ বছর আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকান সাবমেরিনের আঘাতে ডুবে যাওয়া একটি জাপানি পরিবহন জাহাজ মন্টেভিডিও মারুর ধ্বংসাবশেষ অবশেষে খুঁজে পাওয়া গেছে।

মন্টেভিডিও মারু ৮৫০ জন যুদ্ধবন্দী এবং প্রায় ২০০ বেসামরিক নাগরিককে বহন করছিল, যারা ১৯৪২ সালে পাপুয়া নিউ গিনিতে জাপানিদের দ্বারা বন্দী হয়েছিল।

জাহাজে থাকা বেশিরভাগ মানুষের পরিচয় চূড়ান্তভাবে প্রকাশ করার আগে, এটির ডুবে যাওয়াকে মিত্রবাহিনীর সাফল্য হিসাবে ঘোষণা করা হয়।

তবে, জাহাজটির অবস্থান ঠিক কোথায় ছিল, তা এখন পর্যন্ত একটি রহস্যের বিষয়।

এই সপ্তাহের শুরুতে, ফিলিপাইনের দক্ষিণ চীন সাগরে ধ্বংসাবশেষটির সন্ধান পাওয়া যায়। মিশনটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা বিভাগ, অস্ট্রেলিয়ার সাইলেন্টওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশনের সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিক এবং ডাচ গভীর-সমুদ্র জরিপ সংস্থা ফুগ্রোর বিশেষজ্ঞদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা।

এর আগে, এই মাসের শুরুতে ফিলিপাইনের উপকূলে অনুসন্ধান কাজ শুরু হয়। প্রায় দুই সপ্তাহের মধ্যে, জাহাজটির পরিচয় আনুষ্ঠানিকভাবে যাচাই করার আগে, মন্টেভিডিও মারুর একটি দৃশ্যকল্প তৈরি করা হয়েছিল। এটি ছিল অনুসন্ধান দলের দ্বারা বছরের পর বছর ধরে গবেষণা এবং প্রস্তুতির চূড়ান্ত পর্ব।

প্রায় হাজার খানেক অস্ট্রেলিয়ান ওই দুর্যোগে মারা যায়, যা দেশটির সামুদ্রিক ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্যোগ।

ক্যাথি প্যারি ম্যাকলেনানের দাদা আর্থার পেরি মন্টেভিডিও মারুতে ডুবে যাওয়ার সময় ছিলেন।

তিনি শনিবার অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনকে বলেন, খবরটি শুনে তার প্রায় দম বন্ধ হবার মতো দশা হয়েছিল।

তিনি বলেন, “আমি দুঃখিত, আমি আসলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছিলাম, এবং এরপর সারাদিন ধরেই প্রচণ্ড আবেগে ভাসছিলাম।”

ধ্বংসাবশেষটি সাইলেন্ট ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশন দ্বারা একত্রিত একটি মিশনে আবিষ্কৃত হয়, মিশনটি অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা বিভাগের সহায়তায় সামুদ্রিক প্রত্নতত্ত্ব এবং ইতিহাস এবং ফুগ্রোর জন্য কাজ করে থাকে।

ওই ভয়াবহতা এক ডজনেরও বেশি দেশকে প্রভাবিত করেছিল। ডেনমার্ক, নিউজিল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি জাপানও এর শিকার হয়েছিল।

মন্টেভিডিও মারুতে থাকা মানুষের দেহাবশেষ, এমনকি কোনো কিছুই সরানো হবে না।