ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত মানুষের পাশে পিএনআরএফআর

প্রকাশিত: ৮:০০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪,

ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত মানুষের পাশে পিএনআরএফআর গৃহ নির্মাণে ১৫৪ পরিবারকে ২০ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান

২০২৪ সালের ২১ আগস্ট ভারী বর্ষণ এবং ভারতের ত্রিপুরা প্রদেশ থেকে নেমে আসা ঢলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে ফেনী ও নোয়াখালীসহ দেশের এগারো জেলার ৭৩টি উপজেলা।

আকস্মিক বন্যায় কেউ হারিয়েছেন ঘর। কারও আবার ঘরের সঙ্গে ভিটেমাটিও ভেসে গেছে বন্যার পানিতে। অনেকের ঘরবাড়ি হয়েছে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত। দিশেহারা হয়ে পড়া কুমিল্লার বুড়িচং, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর অঞ্চলের দেড় শতাধিক পরিবারের পুনর্বাসনের জন্য আর্থিক অনুদান দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে প্রফেসর নজরুল রিউমাটোলজি ফাউন্ডেশন অ্যান্ড রিসার্চ (পিএনআরএফআর)।

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল মিলনায়তনে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বুড়বুড়িয়া, বেড়াজাল, খাড়াতাইয়া, ইন্দ্রবতী, মহিষমারা, শিকারপুর সহ আরও একাধিক গ্রাম এবং নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুরের ক্ষতিগ্রস্ত মোট ১৫৬টি পরিবার, পিএনআরএফআর এর ৩ জন সদস্যের হাতে নগদ অনুদান তুলে দেওয়া হয়।

আয়োজকরা জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৫৬টি পরিবারের পাশাপাশি ট্রাস্টের ৩ জন সদস্য, ২ জন দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত রোগী ও মোহাম্মদপুরের একটি মসজিদের উন্নয়ন কাজের জন্য মোট ২০ লাখ টাকার অনুদান দেয়া হয়।

‘পিএনআরএফআর’ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান, বাতরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, ট্রাস্টের উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক চিকিৎসাবিজ্ঞানী অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলি, মেজর জেনারেল কাজী ইফতেখারুল আলম, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আমিনুল ইসলাম ও সাবেক যুগ্ম সচিব আনোয়ারা বেগম।

অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, বন্যা পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসন খুব বেশি প্রয়োজন। সেই চিন্তা থেকেই এই উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়। এই কাজে ট্রাস্টের কার্যনির্বাহী সদস্য এম এম আমিনুর রহমান সাব্বির, সাউথইস্ট ব্যাংকসহ যেসব সদস্য সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি আমাদের অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, এই ট্রাস্ট সূচনালগ্ন হতেই বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। বাত রোগীদের চিকিৎসা সহায়তার পাশাপাশি, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, ফ্রি ওষুধ বিতরণ, বাতরোগী ছাড়াও অন্যান্য দূরারোগ্য রোগীদের জন্য এককালীন চিকিৎসা সহায়তা প্রদান, গরীব ও মেধাবী ছাত্রদের এককালীন সহায়তা ও বাৎসরিক বৃত্তি প্রদান, অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, শীতবস্ত্র ও পঙ্গু রোগীদের হুইলচেয়ার বিতরণ, ধর্মীয় উপাসনালয় তৈরি ও মেরামতের কাজ নিয়মিত করছে, যা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরা এমন উদ্যোগের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি আগামী দিনে এমন দুর্যোগে যাতে আরও বড় পরিসরে কার্যক্রম পরিচালনা করা যায় সেজন্য স্থায়ী কোনো পরিকল্পনা নেওয়ারও পরামর্শও দেন।

অনুষ্ঠানে ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান ডা. নীরা ফেরদৌস, সেক্রেটারি জেনারেল ড. পীযুষ কান্তি বিশ্বাস, ডেপুটি সেক্রেটারি ডা. বর্ষা ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ আব্দুস সোবহান, কার্যনির্বাহী সদস্য মো. এনামুল হক, এম এফ ইসলাম মিলন, সামিউল হক, জোবায়ের আহমেদ, মো. বোরহান উদ্দিন, মো. ইউসুফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উক্ত এলাকাগুলোতে সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহের কাজে ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সদস্য জনাব মোঃ এনামুল করিম ও এম এফ ইসলাম মিলন এর নেতৃত্বে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক খাড়াতাইয়া গ্রামের মোঃ নেয়ামত উল্লাহ (স্বাধীন), মোঃ আবদুল মান্নান মাস্টার, ইন্দ্রবতী গ্রামের মোঃ খলিল মাস্টার, বুড়বুড়িয়া গ্রামের মোঃ আরিফ হোসেন এবং
কুমিল্লা সদরের ধনুয়াখলা বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জনাব মোঃ আলম হোসেন প্রমুখ ২ দিনব্যাপী সময় দিয়ে যাচাই-বাছাই সহ তালিকা তৈরীতে সাহায্য করেন।