কুমিল্লার বরুড়ায় এবারের “এসএসসি” পরীক্ষায় নকল সরবরাহ নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচিত

প্রকাশিত: ৯:৪৯ পূর্বাহ্ণ, মে ১০, ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার ঃ এবারের এসএসসি পরীক্ষায় নকল সরবরাহ নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচিত উপজেলা বরুড়া। নকল সরবরাহসহ নানান অনিয়মের দায়ে এপর্যন্ত এই উপজেলার ২৩ জন শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেয়ার পাশাপাশি কারো কারো বিরুদ্ধে নেয়া হয়েছে আইনী পদক্ষেপও। এছাড়া চার জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার বরুড়া উপজেলার হাজী নোয়াব আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে নকল করতে বাঁধা দেয়া ও কড়া পাহাড়ার অভিযোগ এনে কেন্দ্রে হামলা ও পরীক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় পরীক্ষার্থীদের সাথে নকল সরবরাহকারীদের সাথে বহিরাগতরাও অংশ গ্রহন করে বলে জানা গেছে। একই দিনে মহেশপুর আজিজিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব সহ ১০ শিক্ষককে অব্যহতি দেয়ার জন্য নির্দেশনা জানিয়ে চিঠি দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কুমিল্লা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বরুড়া অঞ্চলে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় নকল প্রবণতা আগেও দেখা গেছে। তবে এবছর এসএসসি পরীক্ষায় নকলের ঘটনায় পরীক্ষার্থী ও শিক্ষদের শাস্তি দেয়ার ঘটনা ফলাও ভাবে উঠে এসেছে। পরীক্ষায় শিক্ষকদের নকলের সাথে সরাসারি জড়িত থাকার অভিযোগেও শাস্তি দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকার প্রভাব প্রতিপত্তি দেখিয়ে একশ্রেণীর অসাধু অভিভাবকরাও এই নকলকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করে পরিস্থিতি বিশৃঙ্খল করে তুলছে। কিছু সংখ্যক উঠতি বয়সী রাজনৈতিক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাও এর সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। সব মিলিয়ে কিছু অসাধু ব্যক্তির কারণে পুরো উপজেলার বিভিন্ন কেন্দ্রগুলোতে নকলের প্রবণতা বাড়ছে। সেসব কেন্দ্রে নকলে বাঁধা দিতে গেলে হামলার শিকার হচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
এবিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড-কুমিল্লার চেয়ারম্যান প্রফেসর জামাল নাছের বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক বরুড়া উপজেলায় নকলের প্রবণতার খবর প্রায়ই পাওয়া যাচ্ছে। আমরা সবাই জানি এবছরও সংশোধিত সিলেবাসে পরীক্ষা হচ্ছে। তারপরও  পরীক্ষার্থীরা নকলের আশ্রয় নিতে চেষ্টা করছে। এই অসাধু কাজে শিক্ষক অভিভাবকসহ অনেকেই জড়িয়ে যাচ্ছেন- একটি প্রজন্মকে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মত। আমরা খুবই সতর্ক আছি, কেউ যেন নকল করে বা নকলের সাথে জড়িয়ে পার পেতে না পারে।
বরুড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা নকল প্রতিরোধের চেষ্টা করছি বলেই এসব ঘটনা গুলো ঘটছে। নকলরোধের চেষ্টায় শিক্ষার্থীরা যেমন বহিষ্কার হচ্ছে তেমনি শিক্ষকদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আগামী পরীক্ষাগুলোতেও যেন কেউ নকল করার সুযোগ না পায় সে ব্যবস্থা করা হবে।
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, আমরা সচেষ্ট আছি নকলের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকার। বরুড়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এসিল্যান্ড ছাড়াও অতিরিক্ত একজন ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োগ করা আছে। ম্যাজিষ্ট্রেটগণ চেষ্টা করবেন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় পরীক্ষা যেন পরিচালনা করা হয় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে।