সম্প্রতি বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান বিদ্রোহী ইয়েভগেনি প্রিগোজিন। তাঁর মৃত্যু নিয়ে রহস্যের পাশাপাশি বিতর্ক তৈরি হচ্ছে। নানা গুঞ্জনের মাঝেই প্রকাশ্যে আসলো ওয়াগনার প্রধানের একটি পুরনো ভিডিও। যেখানে তিনি বিমান ভেঙে পরা নিয়ে আশঙ্কা করছিলেন।

রুশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ২৩ আগস্ট মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গগামী এক বেসরকারি সংস্থার এমব্রেয়ার লিগ্যাসি বিমান তেভর এলাকার কুজেনকিনো গ্রামের কাছে ভেঙে পড়ে। ওই বিমানে পাইলট, ক্রু, যাত্রী-সহ মোট ১০ জন ছিলেন। মৃতদের তালিকায় প্রিগোজিন রয়েছেন বলে ধারণা করা হয়েছিল। দুর্ঘটনার চারদিন পর ২৭ আগস্ট রাশিয়ার তদন্তকারী কমিটির পক্ষ থেকে প্রিগোজিনের মৃত্যু সংবাদ পাওয়া যায়।

কমিটির মুখপাত্র জানান, তেভর এলাকায় ভেঙে পড়া বিমান থেকে দশজনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। আণবিক-জেনেটিক পরীক্ষার মাধ্যমে মৃতদের পরিচয় সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা গিয়েছে। বিমানে যতজন যাত্রী ও ক্রু ছিলেন তাঁদের সকলের মৃতদেহের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।

এরপরেই সামনে এলো ওয়াগনার প্রধানের একটি পুরনো ভিডিও।

৪০ সেকেন্ডের ক্লিপটিতে প্রিগোজিন যুদ্ধের ময়দানে রাশিয়ার সঙ্গে বিমানের প্রসঙ্গ টেনেছেন। যেখানে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে রাশিয়া। আজ যদি এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করা না হয় তাহলে মাঝ আকাশে ভেঙে পড়বে বিমানটি। আমি সততার সঙ্গে বলছি। রাশিয়ার মানুষদের মিথ্যা বলা হচ্ছে।

আমার বেঁচে থাকার কোনও অধিকার নেই। এর থেকে আমাকে মেরে ফেলা শ্রেয়।’

এবছরের জুন মাসে রুশ সামরিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে গোটা বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন প্রিগোজিন।  লড়াই থামিয়ে বেলারুশে ঘাঁটি স্থাপন করেছিলেন ওয়াগনার প্রধান। শোনা গিয়েছিল, পুতিনের সঙ্গে বোঝাপড়া হয়েছে তাঁর। কিন্তু বিদ্রোহ ঘোষণার ঠিক দুইমাস পরে মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনাটি ঘটে। অনেকে দাবি করেন, রুশ সরকার এই বিমান দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে ক্রেমলিন এ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বলে ছড়িয়ে পড়া জল্পনা অস্বীকার করেছে। প্রিগোজিনের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, প্রিগোজিন বেঁচে রয়েছেন। অন্য কোথাও লুকিয়ে রয়েছেন তিনি। কোনও একদিন প্রকাশ্যে এসে অন্য কোন বার্তা দিয়ে সকলকে চমকে দেবেন বিদ্রোহী ওয়াগনার প্রধান।

সূত্র : রয়টার্স