দেশের আবাদযোগ্য নিট আবাদি জমির পরিমাণ কমছে। ২০০৮ সালের তথ্য অনুযায়ী নিট আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার হেক্টর। কমছে আবাদযোগ্য নিট জমির পরিমাণ ক্রাইম পেট্রোল ক্রাইম পেট্রোল News প্রকাশিত: ১০:০৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৭, ২০২২ ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ দেশের আবাদযোগ্য নিট আবাদি জমির পরিমাণ কমছে। ২০০৮ সালের তথ্য অনুযায়ী নিট আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে পল্লী এলাকায় ছিল ১ কোটি ৮৮ লাখ ১৫ হাজার হেক্টর এবং শহর এলাকায় ছিল ২ লাখ ৮২ হাজার হেক্টর। কিন্তু ২০১৯ সালের শুমারির তথ্যে দেখা গেছে, নিট আবাদি জমির পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৮৬ লাখ ৮১ হাজার হেক্টরে। এর মধ্যে পল্লী এলাকায় আবাদি জমি আছে ১ কোটি ৭৮ লাখ ৫২ হাজার হেক্টর এবং শহরে আছে ৮ লাখ ২৯ হাজার হেক্টর। ফলে তুলনামূলক নিট আবাদি জমির পরিমাণ ১১ বছরে কমেছে ৪ লাখ ১৬ হাজার একর। এছাড়া প্রতিবছর আবাদি জমির পরিমাণ কমছে শূন্য দশমিক ০২ শতাংশ হারে। তবে মানুষের ধারণা ছিল বছরে ১ শতাংশ হারে কমছে। সেটি ঠিক নয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) কৃষি শুমারি-২০১৯ এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিভাবে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। রাজধানী আগারগাঁওয়ে বিবিএস অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন- পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন। বিবিএস’র মহাপরিচালক মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন কৃষি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) শুমারি প্রকল্পের পরিচালক আলাউদ্দিন আল আজাদ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. দীপঙ্কর রায়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে মোট খানা (পরিবার) রয়েছে ৩ কোটি ৫৫ লাখ ৫২ হাজার। ২০০৮ সালে এ সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৮৬ লাখ ৯৫ হাজার। এর মধ্যে কৃষি খানা হচ্ছে ১ কোটি ৬৮ লাখ ৮১ হাজার, ২০০৮ সালে যা ছিল ১ কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার। ফলে দেখা যাচ্ছে, সার্বিক পরিবারের সংখ্যা যে হারে বেড়েছে সেই হারে কৃষি পরিবারের সংখ্যা বাড়েনি। এছাড়া ২০১৯ সালের হিসাবে কৃষি মজুর খানার সংখ্যা ৯২ লাখে উন্নীত হয়েছে। আগে যা ছিল ৮৮ লাখ ৪৪ হাজার। মৎস্যজীবী খানা ১২ লাখ ১৮। দেশের কৃষি পরিবারে পরিচালনাধীন জমি ২ কোটি ২৯ লাখ ৭৫ হাজার একর। যা ২০০৮ সালে ছিল ২ কোটি ৩৫ লাখ ৫ হাজার। এক্ষেত্রে জমির পরিমাণ কমেছে। শস্যের নিবিড়তা ২১৪ শতাংশ, যা ২০০৮ সালে ছিল ১৭৩ শতাংশ। অর্থাৎ একই জমিতে একাধিক সময় ফসল উৎপাদন করা হচ্ছে। যেমন আগে দুই ফসলি থাকলে এখন ৩ বা ৪ ফসলি হয়ে গেছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দেশে মোট মোরগ-মুরগির সংখ্যা ১৯ কোটি ৯৪ লাখ ৩ হাজারে উন্নীত হয়েছে। আগে যা ছিল ৯ কোটি ৭৮ লাখ ১০ হাজারে। তবে এ হিসাবে বাণিজ্যিকভাবে মুরগি বা যে কোনো পশুপালনের চিত্র তুলে আনা হয়নি। শুধু পরিবারভিত্তিক মুরগি বা পশুপালনের সংখ্যাটি দেখানো হয়েছে। হাঁসের সংখ্যা রয়েছে ৭ কোটি ৪৪ লাখ ৯৩ হাজার, ২০০৮ সালে ছিল ৩ কোটি ৯৪ লাখ ৩৩ হাজার। এছাড়া দেশে গরু রয়েছে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৫২ হাজার, যা ২০০৮ সালে ছিল ২ কোটি ৫৬ লাখ ৭৮ হাজার। অন্যদিকে ছাগলের সংখ্যা ১ কোটি ৬৩ লাখ ১৮ হাজার থেকে উন্নীত হয়ে ১ কোটি ৯৪ লাখ ৪৪ হাজারে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, আউশ ধানের জমির পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ২৪ লাখ ৫৯ হাজার হেক্টরে, ২০০৮ সালে এটি ছিল ২৫ লাখ ৫৩ হাজার হেক্টর। আমন চাষর জমি বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ ৭ হাজার হেক্টর, যা আগে ছিল ৯৩ লাখ ৬১ হাজার হেক্টর। বোরো চাষের জমি বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ১০ লাখ হেক্টর, যা আগে ছিল ১ কোটি ১ লাখ ১১ হাজার হেক্টর। গমের জমি বেড়ে হয়েছে ৮ লাখ ২ হাজার হেক্টর, আগে ছিল ৬ লাখ ৪৪ হাজার হেক্টর। এছাড়া পাট চাষের জমির পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ১৬ লাখ ৯৯ হাজার হেক্টর, যা আগে ছিল ১০ লাখ ১১ হাজার হেক্টর। দেশে আম ও কাঁঠাল চাষের জমির পরিমাণ বেড়েছে। কৃষিতে বেড়েছে পাওয়ার টিলার ও ফসল মাড়াই যন্ত্রসহ অন্যান্য যন্ত্রের ব্যবহার। অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশের এত দিন পর চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করাটা ঠিক হয়নি। এছাড়া ১০ বছর অন্তর এ শুমারি হওয়ার কথা থাকলেও সেটি কখনও হয়নি। এটি একটি সিস্টেমে আনতে হবে। কৃষি, অর্থনৈতিক ও জনশুমারি ২ বছর অন্তর হওয়া উচিত। এতে হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যাবে। এছাড়া লেবার ফোর্স সার্ভেটি প্রতিবছরই করা দরকার। সেই সঙ্গে এসব শুমারি প্রকল্প থেকে না করে রাজস্ব বাজেট থেকেই নিয়মিত করা দরকার। পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, জিডিপির হিসাবে কৃষির অবদান কমলেও প্রকৃতপক্ষে আর্থিক কাঠামোর মধ্যে কৃষি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। কৃষি যে কোনো দুর্যোগে আমাদের স্বস্তির জায়গায় রেখেছে। বক্তব্যে তিনিও সময়ের মধ্যে এবং দ্রুত প্রতিবেদন প্রকাশ করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন। SHARES জাতীয় বিষয়: