রাশিয়ায় পৌঁছলেন কিম জং উন

প্রকাশিত: ৩:৫৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিনিধি

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন রাশিয়ায় পৌঁছেছেন। কিম রেলপথে বন্দর শহর ভ্লাদিভোস্টক যাচ্ছেন। তবে কিম এখনো তার গন্তব্য থেকে কয়েক ঘণ্টা দূরে রয়েছেন। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এখন কিমের আগমনের প্রতিবেদন করছে।

পূর্ব রাশিয়ার এক সংবাদদাতার উদ্ধৃতি দিয়ে ‘আরআইএ’ রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা গাঢ় সবুজ এবং ধূসর রঙের গাড়িসহ একটি ট্রেনের ভিডিও পোস্ট করেছে। যেটি উত্তর কোরিয়ার নেতাকে বহন করছে।এখন থেকে তিনি প্রায় দুই ঘণ্টা আগে খাসান সীমান্ত স্টেশনে প্রবেশ করেন। প্রিমর্স্কি ক্রাই অঞ্চলের স্টেশনে উত্তর কোরিয়ার নেতার জন্য একটি স্বাগত অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়।

খাসান থেকে ভ্লাদিভোস্টক যেতে আরো পাঁচ-ছয় ঘণ্টা সময় লাগতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। 

কিম রবিবার তার ব্যক্তিগত ট্রেনে রাশিয়ার উদ্দেশে পিয়ংইয়ং ত্যাগ করেন। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, কিম তার সঙ্গে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে এসেছেন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে দুই নেতার মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

ক্রেমলিন নিশ্চিত করেছে, কিম ‘আগামী দিনে’ রাশিয়া সফর করবেন। পুতিনের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠক যদি এগিয়ে যায়, তবে এটি হবে উত্তর কোরিয়ার নেতার চার বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথম আন্তর্জাতিক ভ্রমণ এবং মহামারির পর প্রথম ভ্রমণ। 

এর আগে একজন মার্কিন কর্মকর্তা বিবিসির মার্কিন অংশীদার সিবিএসকে বলেছিলেন, এ দুই নেতা সম্ভবত ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোকে উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র সরবরাহের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করবেন। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ আলোচনা ভেঙে যাওয়ার পর কিমের ২০১৯ সালে শেষবারের মতো বিদেশ সফরও ভ্লাদিভোস্টকে ছিল। সেখানে পুতিনের সঙ্গে তার প্রথম শীর্ষ বৈঠক হয়।

কিম ২০১৯ সালেও ট্রেনে ভ্লাদিভোস্টক ভ্রমণ করেছিলেন। এদিকে কিমের ভ্রমণে অন্তত ২০টি বুলেটপ্রুফ গাড়ি অন্তর্ভুক্ত করার গুজব রয়েছে। এতে সাধারণ ট্রেনের চেয়ে কিমের ট্রেন ভারী হবে। ফলে সেটি ঘণ্টায় ৫৯ কিলোমিটারের বেশি গতি তুলতে পারবে না।

হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যে অস্ত্র সমঝোতা ‘সক্রিয়ভাবে অগ্রসর’ হওয়ার নতুন তথ্য পাওয়ার পরে সম্ভাব্য বৈঠকটি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি এর আগে বলেছিলেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু সাম্প্রতিক উত্তর কোরিয়া সফরের সময় ‘পিয়ংইয়ংকে রাশিয়ার কাছে আর্টিলারি গোলাবারুদ বিক্রি করতে রাজি করার’ চেষ্টা করেছিলেন। কভিড মহামারির পর এই প্রথম কিম বিদেশি অতিথিদের জন্য দেশের দরজা খুলে দিয়েছিলেন।

ওয়াশিংটনের সতর্কতার মধ্যেই উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন রাশিয়ায় পৌঁছেছেন। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এই দুই দেশের অস্ত্র চুক্তিতে একমত হওয়া উচিত নয়।
রাশিয়ার কাছে অস্ত্র বিক্রি করলে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞাগুলো ‘আক্রমণাত্মকভাবে’ কার্যকর করার হুমকিও দিয়েছে দেশটি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানে সহায়তাকারী সবাইকে ‘জবাবদিহি’ করতে হবে।

সূত্র : বিবিসি