ডিএনসিসির হিসাবে দোকান পুড়েছে ২১৭, ব্যবসায়ীরা বলছেন ৪০০

প্রকাশিত: ১২:২৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিনিধি

রাজধানীর অন্যতম বড় মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে বুধবার শেষরাতে আগুন লাগে। এতে সর্বস্বান্ত হয়েছেন এই বাজারে ব্যবসা ও দোকান চালানো হাজারো মানুষ। রাত সাড়ে ৩টার দিকে আগুন লেগে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় পর আগুন যতক্ষণে নিভেছে, ততক্ষণে দোকানগুলোর ভেতর থেকে উদ্ধার করে আনার মতো অবশিষ্ট কিছু ছিল না।

আগুনে চার শতাধিক দোকান পুড়ে গেছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলেছেন, মার্কেট ও কাঁচাবাজারে বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে ৭০০ থেকে ৮০০ দোকান ছিল। তবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন আগুনে ২১৭টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার তথ্য দিয়েছে।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মার্কেটে মুদি, স্টেশনারি, কনফেকশনারি, জুয়েলারি, প্লাস্টিকের সামগ্রী, চাল, মসলা, ক্রোকারিজ, কাপড় ও জুতার দোকান ছিল।

আগুনে মার্কেটের তিন ভাগের দুই ভাগ পুরোপুরি ভস্মীভূত হলেও ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিটসহ অন্যান্য সংস্থার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রক্ষা পেয়েছে পূর্ব প্রান্তের কাঁচাবাজার, মুরগির বাজার ও মাংসপট্টির দোকানগুলো। ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তায় যোগ দেয় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর বিশেষ দল। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সাতজন এবং ব্যবসায়ীদের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।

ফায়ার সার্ভিস বৈদু্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগতে পারে বলে ধারণা করছে। কারণ অনুসন্ধানে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সংস্থাটি। তবে ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ বলেছেন, এ আগুন নাশকতার কারণেও হতে পারে। কারণ হিসেবে তাঁরা বলেন, প্রতিদিন রাত ১০টার পর মার্কেট বন্ধ থাকে। সেই সঙ্গে মার্কেটের বৈদ্যুতিক সংযোগও বিচ্ছিন্ন থাকে।

তাহলে শর্টসার্কিট ঘটবে কিভাবে। তাঁরা জানান, রাতে মার্কেটের ভেতরে কেউ থাকেন না। বাইরে নিরাপত্তাব্যবস্থাও রয়েছে।
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, তখনো দাউদাউ আগুন জ্বলছে। শত শত ব্যবসায়ী মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়ে অসহায় আহাজারি করছিলেন। বুক চাপড়ে কাঁদতে কাঁদতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ছিলেন। অনেকে চেষ্টা করছিলেন আগুন না লাগা দোকান থেকে মালামাল সরাতে। পুলিশ ও  র‌্যাবের সদস্যরাও তাঁদের সাহায্যে হাত লাগান। সাধারণ মানুষ তখন আশপাশে ভিড় করে। আগুন নেভাতে ‘হিজড়া’দেরও দেখা যায়।

ব্যবসায়ী মামুনুর রহমান বলেন, ‘মার্কেটের মালামাল গুছিয়ে গত রাত ১০টায় বাসায় গেছি। আমার তিন শ বস্তা চাল পুড়ে গেছে। এখন পরিবার নিয়ে কী খামু আমি।’ এ সময় তাঁর পাশে কাঁদতে কাঁদতে ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম মোবাইল ফোনে কাউকে বলছিলেন, ‘আমার সব শ্যাস, পরিবার নিয়ে আমি কিভাবে চলমু।’