নিকলীতে ৪৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টি কি দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ? ক্রাইম পেট্রোল ক্রাইম পেট্রোল News প্রকাশিত: ৬:০৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৭, ২০২৩ নিজস্ব প্রতিনিধি শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ৪৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। অক্টোবর মাস বিবেচনায় নিংসন্দেহে বৃষ্টির পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম দেশের ইতিহাসে এক দিনে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের রেকর্ড বলছে এটিকে। কিন্তু আসলেই কি তাই? এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক শুক্রবার রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এটি চলতি বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। কিন্তু দেশের ইতিহাসে এক দিনের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত নয়। এক দিনে ৫০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টির রেকর্ডও আছে। তবে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত কবে কোথায় হয়েছে তা এই মুহূর্তে পুরনো রেকর্ড দেখা ছাড়া বলা সম্ভব নয়।’আবহাওয়া অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, ১৯৮৩ সালের আগস্টে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় এক দিনে ৫১১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০১০ সালের জুন মাসে কক্সবাজারের টেকনাফে এক দিনে ৪৮১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়।দেশের ইতিহাসে অক্টোবর মাসে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে নোয়াখালীর হাতিয়ায়, ৪০৩ মিলিমিটার। ২০১৬ সালের ১১ অক্টোবর হাতিয়ায় এই বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। আর শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ৪৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। নিকলীর বৃষ্টিপাতের এই পরিমাণকে তাহলে দেশের ইতিহাসে অক্টোবর মাসের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত বলা সম্ভব কি না―এমন প্রশ্নে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এবং আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক গবেষক মো. বজলুর রশিদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সাধারণত আমরা সকাল ৬টা থেকে পরদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার রিপোর্ট হিসাব করি। আগের দিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরেরদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার হিসাবটাকে এখানে কনসিডার না করাই ভালো। বা এটা দিয়ে কম্পেয়ার (তুলনা) হয় না। সন্ধ্যার হিসাবটা সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার জন্য দরকার তাই করা হয়। মূলত ডাটা (উপাত্ত) হিসাব করা হয় সকাল ৬টা থেকে পরের দিন সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার।’ তবে এই বৃষ্টি দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ বৃষ্টি না হলেও চলতি অক্টোবরের গত দুই দিন ধরেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিভাগভিত্তিক অক্টোবর মাসের স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ হিসাব করলে দেখা যায়, এ মাসে গড় স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত ১৫৮ থেকে ১৫৯ মিলিমিটার। সে হিসাবে ২৪ ঘণ্টায় নিকলীতে স্বাভাবিকের চেয়ে তিন গুণ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কিশোরগঞ্জের নিকলীর পর সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ময়মনসিংহে, ৩৪০ মিলিমিটার। নেত্রকোনায় ৩১১ ও সিলেটে ১৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ঢাকায় এ সময় ৮০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে মৌসুমি বায়ু বিদায় নেওয়ার আগে পশ্চিমা লঘুচাপের সাথে যুক্ত হয়ে এ রকম অতিভারি বৃষ্টিপাত ঘটিয়েছে। অক্টোবর মাস বিবেচনায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি হলেও এ রকম ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগেও কখনো কখনো অক্টোবর মাসে এ রকম বা এর চেয়ে বেশি বৃষ্টিও হয়েছে। আজও ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় বৃষ্টি থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। দেশের অন্য বিভাগগুলোতে তুলনামূলক কম থাকতে পারে বৃষ্টি। আগামীকাল থেকে ক্রমেই কমে আসতে পারে বৃষ্টি। সামান্য বাড়তে পারে তাপমাত্রা। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, চলতি মাসে কোনো নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড় তৈরি না হলে মৌসুমি বায়ুর বিদায়ের আগে এটাই হতে পারে সর্বশেষ বড় বৃষ্টিপাত। SHARES জাতীয় বিষয়: #বৃষ্টি
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ৪৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। অক্টোবর মাস বিবেচনায় নিংসন্দেহে বৃষ্টির পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম দেশের ইতিহাসে এক দিনে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের রেকর্ড বলছে এটিকে। কিন্তু আসলেই কি তাই? এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক শুক্রবার রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এটি চলতি বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত।
কিন্তু দেশের ইতিহাসে এক দিনের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত নয়। এক দিনে ৫০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টির রেকর্ডও আছে। তবে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত কবে কোথায় হয়েছে তা এই মুহূর্তে পুরনো রেকর্ড দেখা ছাড়া বলা সম্ভব নয়।’আবহাওয়া অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, ১৯৮৩ সালের আগস্টে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় এক দিনে ৫১১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
এ ছাড়া ২০১০ সালের জুন মাসে কক্সবাজারের টেকনাফে এক দিনে ৪৮১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়।দেশের ইতিহাসে অক্টোবর মাসে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে নোয়াখালীর হাতিয়ায়, ৪০৩ মিলিমিটার। ২০১৬ সালের ১১ অক্টোবর হাতিয়ায় এই বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। আর শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ৪৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
নিকলীর বৃষ্টিপাতের এই পরিমাণকে তাহলে দেশের ইতিহাসে অক্টোবর মাসের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত বলা সম্ভব কি না―এমন প্রশ্নে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এবং আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক গবেষক মো. বজলুর রশিদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সাধারণত আমরা সকাল ৬টা থেকে পরদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার রিপোর্ট হিসাব করি। আগের দিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরেরদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার হিসাবটাকে এখানে কনসিডার না করাই ভালো। বা এটা দিয়ে কম্পেয়ার (তুলনা) হয় না। সন্ধ্যার হিসাবটা সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার জন্য দরকার তাই করা হয়। মূলত ডাটা (উপাত্ত) হিসাব করা হয় সকাল ৬টা থেকে পরের দিন সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার।’
তবে এই বৃষ্টি দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ বৃষ্টি না হলেও চলতি অক্টোবরের গত দুই দিন ধরেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিভাগভিত্তিক অক্টোবর মাসের স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ হিসাব করলে দেখা যায়, এ মাসে গড় স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত ১৫৮ থেকে ১৫৯ মিলিমিটার। সে হিসাবে ২৪ ঘণ্টায় নিকলীতে স্বাভাবিকের চেয়ে তিন গুণ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কিশোরগঞ্জের নিকলীর পর সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ময়মনসিংহে, ৩৪০ মিলিমিটার। নেত্রকোনায় ৩১১ ও সিলেটে ১৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ঢাকায় এ সময় ৮০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে মৌসুমি বায়ু বিদায় নেওয়ার আগে পশ্চিমা লঘুচাপের সাথে যুক্ত হয়ে এ রকম অতিভারি বৃষ্টিপাত ঘটিয়েছে। অক্টোবর মাস বিবেচনায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি হলেও এ রকম ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগেও কখনো কখনো অক্টোবর মাসে এ রকম বা এর চেয়ে বেশি বৃষ্টিও হয়েছে। আজও ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় বৃষ্টি থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। দেশের অন্য বিভাগগুলোতে তুলনামূলক কম থাকতে পারে বৃষ্টি। আগামীকাল থেকে ক্রমেই কমে আসতে পারে বৃষ্টি। সামান্য বাড়তে পারে তাপমাত্রা। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, চলতি মাসে কোনো নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড় তৈরি না হলে মৌসুমি বায়ুর বিদায়ের আগে এটাই হতে পারে সর্বশেষ বড় বৃষ্টিপাত।