খোলাবাজারে ডলার : ন্যায্য দামে মিলছে না, বাড়তি টাকায় দিচ্ছে ক্রাইম পেট্রোল ক্রাইম পেট্রোল News প্রকাশিত: ৩:০৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৬, ২০২৩ নিজস্ব প্রতিবেদন দেশের বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচার প্রতিষ্ঠানগুলোতে ন্যায্য দামে মার্কিন ডলার মিলছে না। তবে তালিকায় প্রদর্শিত মূল্যের চেয়ে বেশি দাম দিলে পাওয়া যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ডলারপ্রতি দাম পড়ছে ১১৯ থেকে ১২০ টাকা। দেশের রিজার্ভ কমে যাওয়া বা বৈদেশিক মুদ্রা ঘাটতির প্রেক্ষাপটে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর মতিঝিলের দিলকুশা এলাকায় বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচার অন্তত ছয়টি প্রতিষ্ঠানে (মানি এক্সচেঞ্জ হাউস) গিয়ে দেখা যায়, সরকার নির্ধারিত দামে কেউ ডলার বিক্রি করছে না। সবাই ৭ থেকে ৯ টাকা বেশি দরে বিক্রি করছে। ডলার চাইলে প্রথমে জানানো হয় নেই, কিন্তু বেশি দাম দিলে পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদক ক্রেতা সেজে ডলার কিনতে যান দোহার মানি এক্সচেঞ্জ কোং নামের একটি দোকানে। ডলার পাওয়া যাবে কি না—এমন প্রশ্নে দোকানি জানতে চাইলেন, ‘কত ডলার লাগবে?’ দেড় হাজার ডলার চাইলে তিনি বলেন, ‘দেওয়া যাবে। তবে প্রতি ডলার ১২০ টাকা। এক দাম।’ সামান্য কম নেওয়ার অনুরোধ জানালে তিনি বলেন, ‘কম হবে না। তা-ও অন্তত এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে।’ অথচ ওই দোকানের তালিকায় লেখা আছে ‘মার্কিন ডলার ক্রয় ১১১ টাকা ৯০ পয়সা, বিক্রয় ১১৩ টাকা ৪০ পয়সা।’ একই ভবনের দোতলায় ভাই ভাই মানি চেঞ্জার নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ডলার চাইলে কাউন্টারে বসা ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘আমার কাছে ডলার নাই।’ পরে তিনি জানতে চান, ‘কত ডলার লাগবে?’ তখন এই প্রতিবেদক বলেন, ‘দেড় হাজার ডলার।’ তখন তিনি বলেন, ‘দেড় হাজার ডলার নিতে পারবেন। দাম পড়বে ১১৯ টাকা ৮০ পয়সা। কম রাখা যাবে না। এটা আরো বাড়বে। কয়েক দিন আগে দাম কম ছিল। যখন ডলার লাগে অফিসে চলে আসবেন। ডলার খুব একটা থাকে না। তবে দেওয়া যাবে। অফিসে আইসেন।’ সোনালী ব্যাংকের দিলকুশা শাখার সামনে দাঁড়িয়ে আজিজ নামের এক বয়স্ক ব্যক্তি অন্য এক ব্যক্তির কাছ থেকে সিঙ্গাপুরি ডলার কিনছিলেন। তাঁর কাছে গিয়ে মার্কিন ডলারের খোঁজ করলে তিনি বলেন, ‘ডলার আছে। দেড় হাজার ডলারই দেওয়া যাবে। তবে দাম প্রতি ডলার ১২০ টাকা।’ তিনি জানান, ১১৮ টাকা ৫০ পয়সা দরে ডলার কিনেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন অমিত সরকার। স্ত্রীকে নিয়ে এসেছেন দিলকুশার সোনালী ব্যাংকের শাখায়। সেখান থেকে এক পরিচিত কর্মকর্তার মাধ্যমে ৫০০ ডলার কিনে নিলেন। তাঁর প্রয়োজন মোট এক হাজার ডলার, কিন্তু পেলেন ৫০০ ডলার। বাকি ডলার মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান থেকে নেবেন। অমিত সরকার বলেন, ‘ওরা প্রতি ডলার ১২০ টাকা করে চাইছে। বাধ্য হয়ে বেশি দামে নিতে হবে।’ বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়কারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ডলার বিক্রির সর্বোচ্চ দাম ১১৩ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু এ দামে কেউ ডলার বিক্রি করছে না। ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে গত ৩১ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক ও সিআইডি যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় মতিঝিল, আসাদগেট, নিউ এলিফ্যান্ট রোড ও আশকোনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আটটি অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ কার্যালয় সিলগালা করে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে একজনকে আটক করা হয়। এর পরও সরকার নির্ধারিত দামে মিলছে না ডলার। ব্যাংকসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, হুন্ডি বন্ধ না করা গেলে খোলাবাজারে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামেই কেনাবেচা হবে। কারণ যাদের অবৈধ টাকা রয়েছে, তারা মূলত খোলাবাজার থেকে বেশি ডলার কেনে। অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেন, ডলারের বিনিময় হার ১৩০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও দেখা যাবে হুন্ডিওয়ালারা ১৪০ টাকা দেবে। যারা বিদেশে টাকা পাচার করে, তাদের কাছে বিনিময় হার কোনো বিষয় নয়। যেকোনো মূল্যে তারা ডলার নেবে। এসব তো কালো টাকা। ফলে টাকা পাচারকারীরা যেকোনো দামে ডলার কিনে বিদেশে পাচার করবে। SHARES অর্থনৈতিক বিষয়: খোলাবাজারে ডলার
নিজস্ব প্রতিবেদন দেশের বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচার প্রতিষ্ঠানগুলোতে ন্যায্য দামে মার্কিন ডলার মিলছে না। তবে তালিকায় প্রদর্শিত মূল্যের চেয়ে বেশি দাম দিলে পাওয়া যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ডলারপ্রতি দাম পড়ছে ১১৯ থেকে ১২০ টাকা। দেশের রিজার্ভ কমে যাওয়া বা বৈদেশিক মুদ্রা ঘাটতির প্রেক্ষাপটে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
ডলার চাইলে প্রথমে জানানো হয় নেই, কিন্তু বেশি দাম দিলে পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদক ক্রেতা সেজে ডলার কিনতে যান দোহার মানি এক্সচেঞ্জ কোং নামের একটি দোকানে।
ডলার পাওয়া যাবে কি না—এমন প্রশ্নে দোকানি জানতে চাইলেন, ‘কত ডলার লাগবে?’ দেড় হাজার ডলার চাইলে তিনি বলেন, ‘দেওয়া যাবে। তবে প্রতি ডলার ১২০ টাকা। এক দাম।’ সামান্য কম নেওয়ার অনুরোধ জানালে তিনি বলেন, ‘কম হবে না।
তা-ও অন্তত এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে।’ অথচ ওই দোকানের তালিকায় লেখা আছে ‘মার্কিন ডলার ক্রয় ১১১ টাকা ৯০ পয়সা, বিক্রয় ১১৩ টাকা ৪০ পয়সা।’ একই ভবনের দোতলায় ভাই ভাই মানি চেঞ্জার নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ডলার চাইলে কাউন্টারে বসা ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘আমার কাছে ডলার নাই।’ পরে তিনি জানতে চান, ‘কত ডলার লাগবে?’ তখন এই প্রতিবেদক বলেন, ‘দেড় হাজার ডলার।’ তখন তিনি বলেন, ‘দেড় হাজার ডলার নিতে পারবেন।
দাম পড়বে ১১৯ টাকা ৮০ পয়সা। কম রাখা যাবে না। এটা আরো বাড়বে। কয়েক দিন আগে দাম কম ছিল। যখন ডলার লাগে অফিসে চলে আসবেন। ডলার খুব একটা থাকে না। তবে দেওয়া যাবে। অফিসে আইসেন।’ সোনালী ব্যাংকের দিলকুশা শাখার সামনে দাঁড়িয়ে আজিজ নামের এক বয়স্ক ব্যক্তি অন্য এক ব্যক্তির কাছ থেকে সিঙ্গাপুরি ডলার কিনছিলেন। তাঁর কাছে গিয়ে মার্কিন ডলারের খোঁজ করলে তিনি বলেন, ‘ডলার আছে। দেড় হাজার ডলারই দেওয়া যাবে। তবে দাম প্রতি ডলার ১২০ টাকা।’ তিনি জানান, ১১৮ টাকা ৫০ পয়সা দরে ডলার কিনেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন অমিত সরকার। স্ত্রীকে নিয়ে এসেছেন দিলকুশার সোনালী ব্যাংকের শাখায়। সেখান থেকে এক পরিচিত কর্মকর্তার মাধ্যমে ৫০০ ডলার কিনে নিলেন। তাঁর প্রয়োজন মোট এক হাজার ডলার, কিন্তু পেলেন ৫০০ ডলার। বাকি ডলার মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান থেকে নেবেন। অমিত সরকার বলেন, ‘ওরা প্রতি ডলার ১২০ টাকা করে চাইছে। বাধ্য হয়ে বেশি দামে নিতে হবে।’ বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়কারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ডলার বিক্রির সর্বোচ্চ দাম ১১৩ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু এ দামে কেউ ডলার বিক্রি করছে না। ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে গত ৩১ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক ও সিআইডি যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় মতিঝিল, আসাদগেট, নিউ এলিফ্যান্ট রোড ও আশকোনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আটটি অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ কার্যালয় সিলগালা করে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে একজনকে আটক করা হয়। এর পরও সরকার নির্ধারিত দামে মিলছে না ডলার। ব্যাংকসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, হুন্ডি বন্ধ না করা গেলে খোলাবাজারে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামেই কেনাবেচা হবে। কারণ যাদের অবৈধ টাকা রয়েছে, তারা মূলত খোলাবাজার থেকে বেশি ডলার কেনে। অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেন, ডলারের বিনিময় হার ১৩০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও দেখা যাবে হুন্ডিওয়ালারা ১৪০ টাকা দেবে। যারা বিদেশে টাকা পাচার করে, তাদের কাছে বিনিময় হার কোনো বিষয় নয়। যেকোনো মূল্যে তারা ডলার নেবে। এসব তো কালো টাকা। ফলে টাকা পাচারকারীরা যেকোনো দামে ডলার কিনে বিদেশে পাচার করবে।