অক্সফামের প্রতিবেদন

বিশ্বের ১% ধনী ৬৬% দরিদ্রের সমান কার্বন নিঃসরণ করে

প্রকাশিত: ১১:৫৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২০, ২০২৩
প্রতীকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী, একই পরিমাণ কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ১ শতাংশ মানুষ। গত রবিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য দিয়েছে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান অক্সফাম ইন্টারন্যাশনাল।

সংস্থাটি বলেছে, মাত্র ১ শতাংশ ধনী বা সাত কোটি ৭০ লাখ মানুষ ২০১৯ সালে যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ করেছে, সেই পরিমাণ কার্বণ নিঃসরণ করেছে বিশ্বের ৬৬.৬৬ শতাংশ বা ৫০০ কোটি দরিদ্র মানুষ।

অতি ধনী ব্যক্তিদের লাইফস্টাইল এবং দূষণকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানে তাদের বিনিয়োগ নিয়ে একটি গবেষণা করে অক্সফাম।

এই গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য। 

সাম্প্রতিক সময়ে বৈশ্বিক উষ্ণতা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বাড়তি উষ্ণতা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পূর্ব আফ্রিকা ও বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাধারণ মানুষের জীবনের ওপর বিপর্যয়কর প্রভাব ফেলছে। আর এমন সময় অক্সফামের প্রতিবেদনে উঠে এলো এই ভয়ানক চিত্র।

চলতি বছরের নভেম্বরে বিশ্বে শিল্পপূর্ব যুগের তাপমাত্রার চেয়ে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি রেকর্ড করা হয়। যদিও ২০১৫ সালে বৈশ্বিক নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, শিল্পপূর্ব যুগের তাপমাত্রার চেয়ে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ শতাংশের মধ্যে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন তাঁরা।

অক্সফাম বলেছে, ‘অতি ধনীরা বিশ্বকে ধ্বংসের কাছাকাছি নেওয়ার মতো দূষিত করছে। তাদের কারণে মানবসভ্যতা অত্যন্ত উষ্ণতা, দমবন্ধকর পরিস্থিতি, বন্যা এবং খরায় পড়েছে।’

 

অক্সফামের এই প্রতিবেদনে আরো উঠে এসেছে ২০১৯ সালে বিশ্বের সব গাড়ি এবং যোগাযোগের অন্যান্য বাহন যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ করেছে, তার চেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী ১ শতাংশ ধনী ব্যক্তি। এ ছাড়া সে বছর বিশ্বে যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ হয়েছে, তার অর্ধেক হয়েছে বিশ্বের ১০ শতাংশ ধনীর কারণে।

ব্রিটিশ বেসরকারি সংস্থা অক্সফাম আহ্বান জানিয়েছে, ধনীরা বিশ্বের যে ক্ষতি করেছে, সেটির ক্ষতিপূরণ হিসেবে তাদের ওপর যেন বিশেষ কর আরোপ করা হয় এবং সেই করের অর্থ দিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ করা হয়।

সংস্থাটি বলেছে, বিশ্বের ১ শতাংশ অতি ধনীর আয়ের ওপর যদি ৬০ শতাংশ আয়কর আরোপ করা হয়, তাহলে যুক্তরাজ্যে প্রতিবছর যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ হয়, সেই পরিমাণ নিঃসরণ কমে যাবে। এ ছাড়া তাদের ওপর আরোপিত কর থেকে আসবে ৬.৪ ট্রিলিয়ন ডলার।

যেটি জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বিশ্বকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরিত করতে কাজে দেবে। সূত্র : এএফপি