এবার বিলকিস বানোকে পর্দায় আনছেন কঙ্গনা রানাওয়াত!

প্রকাশিত: ১১:১১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৯, ২০২৪
কঙ্গনা রানাওয়াত এবং বিলকিস বানো (ডানে)

বিনোদন প্রতিবেদক

২০০২ সালে গোধরাকাণ্ডের পর গুজরাটে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চলাকালীন গণধর্ষণের শিকার হওয়া বিলকিস বানোর জীবনী নিয়ে এবার সিনেমা বানাতে চলেছেন বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত। সামাজিক মাধ্যমে তেমনটাই ইঙ্গিত দিলেন অভিনেত্রী। এমনকি বিলকিস বানোকে নিয়ে চিত্রনাট্যও তৈরি রয়েছে তাঁর কাছে!

গত ৮ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে বিলকিস বানোকে নিয়ে। শাস্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ২০২২ সালের ১৫ অগস্ট ৭৬তম স্বাধীনতা দিবসে বিলকিসকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গুজরাট সরকার।

ধর্ষকদের মুক্তির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গুজরাট সরকার, গত ৮ জানুয়ারি তা খারিজ করে দেন শীর্ষ আদালত। আদালতের এই বড় জয়ের পর ইতিমধ্যে বলিউডে বিলকিসকে নিয়ে সিনেমা তৈরির আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। সেই আলোচনায় এগিয়ে রয়েছেন অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত। সম্প্রতি কঙ্গনা জানান, বিলকিসকে নিয়ে একটি চিত্রনাট্য নাকি তৈরিই আছে তাঁর।
কাজ শুরু হওয়ার অপেক্ষা শুধু! 

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে এক অনুরাগী কঙ্গনাকে প্রশ্ন করেন, বিলকিসকে নিয়ে তিনি কোনো কাজ করতে চান কি না। সেই অনুরাগীর প্রশ্নের উত্তর দিয়ে অভিনেত্রী লেখেন, ‘আমি অবশ্যই তাঁর গল্প নিয়ে সিনেমা করতে চাই। আমি গত তিন বছর ধরে বিষয়টা নিয়ে কাজ করেছি, আমার কাছে চিত্রনাট্যও তৈরি আছে। কিন্তু কোনো ওটিটি প্ল্যাটফরম এটি করতে চাইছে না, কারণ তারা কেউই রাজনীতি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে চায় না।’

 

কঙ্গনা আরো জানান, জনপ্রিয় এক ওটিটি প্ল্যাটফরম নাকি তাঁর সঙ্গে কাজ করতেই রাজি নয়, কারণ তাকে নাকি তাঁরা ভারতীয় জনতা পার্টির সমর্থক বলে উপাধি দিয়েছেন।

1
বিলকিস বানো

২০০২ সালে গোধরাকাণ্ডের পর গুজরাটে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চলাকালীন ৩ মে দাহোড় জেলার দেবগড় বারিয়া গ্রামে হামলা চালানো হয়। গ্রামের বাসিন্দা পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিসকে গণধর্ষণ করা হয়। বিলকিসের চোখের সামনেই তাঁর তিন বছরের মেয়েকে পাথরে আছড়ে ফেলেন হামলাকারীরা। ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে।

তাঁর পরিবারের আরো কয়েকজন সদস্যকে হত্যা করা হয়। এই অপরাধকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ আখ্যা দিয়ে মুম্বাইয়ের সিবিআই আদালতে কঠোর সাজার পক্ষে আবেদন করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছিল ওই বিশেষ আদালত। জেলে ওই ১১ জন ধর্ষক এবং খুনি ভালো আচরণ করেছেন, সে কারণেই তাদের সাজার মেয়াদ কমানো হয়েছে- এই যুক্তিতে তাদের ছাড়ার সিদ্ধান্ত জানায় গুজরাট আদালত। মুক্তির পর স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব ওই অপরাধীদের সংবর্ধনা দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তবে ধর্ষকদের মুক্তির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গুজরাট সরকার, তা খারিজ করে দেন দেশের শীর্ষ আদালত। মুক্তি পাওয়া ওই ১১ জন ধর্ষককে আবার ফেরত যেতে হবে জেলে। 

সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে স্বাভাবিকভাবেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন বিলকিস। নিজের আইনজীবী শোভা গুপ্তের মাধ্যমে একটি বিবৃতি দিয়ে বিলকিস বলেন, ‘রায় ঘোষণার পর আমি স্বস্তিতে চোখের জল মুছেছি। গত দেড় বছরে এই প্রথমবারের জন্য আমি হেসেছি। আমি আমার সন্তানদের আলিঙ্গন করেছি। মনে হচ্ছে যেন একটা পর্বত বুক থেকে নেমে গেল। আমি আবার শ্বাস নিতে পারব।’

এদিকে বিজেপি শিবিরের কড়া সমর্থক কঙ্গনা রানাওয়াত বিলকিসকাণ্ড নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করলে কেমন হবে তাঁর অবস্থান, তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন দর্শক ও অনুরাগীরা।