স্থানীয়দের চাপে হল ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ৭:৫০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিনিধি

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে বাধ্য করছে ক্যাম্পাসের আশপাশের স্থানীয় লোকজন। তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও এতে যোগ দিয়েছেন।

সোমবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে স্থানীয় লোকজন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং পরে শিক্ষার্থীদের বিকাল ৫টার মধ্যে হল ছাড়ার জন্য সময় বেঁধে দিয়ে হল ত্যাগ করতে বলে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিকাল ৩টা থেকে শাহ পরান হলের সামনে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকে। এক পর্যায়ে হলের শিক্ষার্থীরা হল ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হলে অবস্থানরত এক শিক্ষার্থী বলেন, পারিবারিক সমস্যা থাকাতে ক্যাম্পাসে ভর্তি হওয়ার পর ছাত্রলীগের অধীনে হলে থাকতে হয়েছে। কখনো কোনো উচ্ছৃঙ্খল কাজ ও কারো কখনো ক্ষতি করিনি। এমনকি কখনো ছাত্রলীগকে মনে ধারণও করিনি। সরকার পতনের সময় আমিসহ হলের অনেক শিক্ষার্থী আন্দোলনে অংশ নিয়েছি। এখন আমাদের ছাত্রলীগের বি টিম নাম দিয়ে হল থেকে বের করে দিচ্ছে। আমরা এখন কোথায় যাব?

ইংরেজি বিভাগের রায়হান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমার বাড়ি কুমিল্লায়। আমি এ মুহূর্তে হল ছেড়ে দিয়ে কোথায় যাব কিছুই জানি না। আমার বাড়িতে এখন পানি, যাওয়ার মতো অবস্থাও নেই।

নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাসেল শেখ বলেন, যারা কোনো অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল না, সরকার পতন আন্দোলনের পক্ষে ছিল এবং পাশাপাশি যারা হলের বৈধ শিক্ষার্থী হিসেবে হলে ভর্তি আছে, তাদের কোন যুক্তিতে হল ত্যাগে বাধ্য করছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগের বি টিম ট্যাগ দিয়ে হল থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা চাই, সরকার দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দায়িত্ব দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সচল করুক এবং হলে মেধা, যোগ্যতা এবং পারিবারিক সমস্যার কথা চিন্তা করে ভর্তির নোটিশ দেওয়া হোক। কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বা রাজনৈতিক দল যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হল দখল করতে না পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সচেতন থাকতে হবে।

এদিকে বিকালের দিকে শিক্ষকদের একটি দল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে হলে আসেন। এ সময় তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে কোনো প্রশাসনিক ব্যক্তি নেই। এ মুহূর্তে আমরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে পারব না।

প্রশাসনিক দায়িত্বে না আসা পর্যন্ত হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করতে বলেন। শিক্ষার্থীদের মালামালের কোনো ক্ষতি হবে না।