আবাসন প্রকল্পে জলাধার ভরাট!! নষ্ট হচ্ছে ঢাকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য

প্রকাশিত: ৭:৪৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৩, ২০২৫

 

বিশেষ প্রতিনিধি
ক্রাইম পেট্রোল ইনস্টিগেশন

রাজধানী ঢাকা সহ এর আশেপাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য আবাসন প্রকল্প। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আইন থাকলেও ভরাট কারীদের বিরুদ্ধে কোনরকম ব্যবস্থা নেয়নি দায়িত্বরত প্রতিষ্ঠান রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। বেশিরভাগ জলাধার নষ্ট হওয়ায় ক্ষতি হচ্ছে ঢাকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য। তবে বর্তমানে অন্তবর্তী কালীন সরকার এই বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার হতে অভিযান শুরু করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। রাজউক এর সূত্র মতে জানা যায় , ডিটেইন্ড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) অনুসারে ঢাকার বাইরে ও মোট ৫৯০ বর্গমাইল অর্থাৎ ১৫৮০ বর্গ কিলোমিটার এলাকার তত্ত্বাবধায়ন করছে রাজউক।আর এই ৫৯০ বর্গমাইলের মধ্যে রয়েছে এক বিশাল আকারের জলাশয়। দেব তো ভাবে উল্লেখ করা আছে জলাধার নষ্ট করা যাবে না। এতে ভারসাম্য হারাবে প্রকৃতি। তারপরও এতদিন সব আইন উপেক্ষা করে আবাসন প্রকল্প গুলোর জন্য একের পর এক জলাধার ভরাট শুরু হয়। ফলে এদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতেই অভিযান শুরু করেছে রাজউক। গত বুধবার দিনব্যাপী মিরপুর বেরিবাদ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে নগর পরিকল্পনা শাখা। মিরপুর বেরিবাদ সংলগ্ন তুরাগ নদীর পশ্চিম পাশে উত্তর কাউন্দিয়া ও বেরিবাদের রাজউক উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে। চিহ্নিত জলাশয় ও কৃষি জমি ভরাট বন্ধে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল ইসলাম। অভিযান কালে ড্যাপের ব্যত্যয় ঘটিয়ে অবৈধভাবে বালুভরাট ও প্লটের নির্মাণ কাজ করায় দুই প্লট মালিক ওয়ালিদ হোসেন ও নুরুল ইসলামকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ভেঙে দেয়া হয় ছয়টি প্লটের সীমানা প্রাচীর। চারটি ড্রেজিং মেশিনের পাইপলাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়। ওই এলাকায় সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধসহ ড্রেজিং মেশিন সারানোর নির্দেশনা দেয়া হয়। অভিযান বিষয়ে জানতে চাইলে রাজউকের পরিকল্পনাবিদ মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেন ইতিমধ্যে জলাশয় ও কৃষিজমি ভরাট কারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে।তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে রাজউক। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মিরপুর বেরিবাদ এলাকার অভিযান চালনা করা হয়। এবং স্থাপনা ভেঙ্গে দেয়া হয়। রাজউকের জোন ভিত্তিক এ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। উপশহর প্রকল্প ঘিরে ভরাটকৃত জলাধার সহ পর্যায়ক্রমে সব জলাধার উদ্ধার করা হবে বলেও তিনি জানান। নগর পরিকল্পনাবিদরা বলেছেন, রাজধানীতে জলা বদ্ধতার অন্যতম কারণ জলাধার ভরাট।এক সময় ঢাকার অসংখ্য পুকুর জলাশয় ছিল। ক্রমে এগুলো ভরাট করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করায় বর্ষায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। শহর নিয়ন্ত্রনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ না করে বরং নীরব থাকায় ভরাট হতে হতে ঢাকা শহর থেকে পুকুর জলাশয় এখন বিলুপ্তির পথে। এজন্য জলাশয় গুলো উদ্ধারে অভিযান শুরু করেছে রাজউক।ফলে অভিযান যাতে বন্ধ না হয় সেদিকে সরকারকে নজর রাখারও আহ্বান জানিয়েছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।