টিসিবি’র অতিরিক্ত পরিচালক লীগ সরকারের পৃষ্ঠপোষক আবুল হাসনাত’র বিরুদ্ধে সীমাহীন দূরনিতীর অভিযোগ

প্রকাশিত: ৫:৫৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৬, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) অতিরিক্ত পরিচালক (প্রশাসন) আবুল হাসনাত চৌধুরীর বেপরোয়া দূর্নীতির কারণে ধ্বংসের দাড়প্রাপ্তে। শুধুমাত্র তার আর্থিক দূর্নীতির কারণে ডুবতে বসেছে সকল কার্যক্রম। সূত্রে জানা যায়, পতিত লীগ সরকারের আমলে টিসিবি’র আতঙ্কের আরেক নাম অতিরিক্ত পরিচালক (প্রশাসন) আবুল হাসনাত চৌধুরী।

স্বৈরাচার সরকার পতন হলেও রয়ে গেছেন সকল ধরা ছোয়ার বাইরে আবুল হাসনাত। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিরব ভূমিকা এখন প্রশ্নবৃদ্ধ। বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন মন্ত্রী এমপিদের সাথে ছবি তুলে সেই সকল ছবি টিসিবি’র সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে দেখিয়ে নিজেকে আওয়ামীলীগের বড় নেতা দাবীদার ছিলেন তিনি।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দামের সাথে ছবি তুলে সকল কে প্রকাশ্য জানান দিতেন, সাদ্দাম ছিলেন নাকি তার একান্ত বন্ধু। এভাবেই টিসিবি’তে দীর্ঘ দিন কর্মরত থেকে লীগ সরকারের আমলে ত্রাসের রাজ্যত্ব কায়েম করেছে চলেছিলেন দেদারচ্ছে। একই কর্মস্থলে তিন বছরের বেশী কর্মরত থাকতে পারবেন না অথচ উক্ত দপ্তরে চৌদ্দ বছর যাবৎ কর্মরত থেকে ঘুষ, দূর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যাচ্ছেন হরহামেসেই। লীগ সরকার পতন হলে এখনও দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন বহাল তরিয়াতে।

সূত্রে জানা যায়, উক্ত অফিসের ডিলার নিয়োগ, বিভিন্ন কর্মকর্তাদের পদোন্নতি সহ বিভিন্ন ফাইলে তাকে মোটা অংকের ঘুষ না দিলে বেশ বেগ পেতে হয়, এক কথায় হয়রানি ও জিম্মি হয়ে পড়েছেন পরিচালক (প্রশাসন) আবুল হাসনাত চৌধুরীর নিকট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। টিসিবি’র টেন্ডার বিহীন সকল উন্নয়ন কাজ করে থাকেন তিনি নিজেই, সম্প্রতি অফিসের টাইলস লাগানো ও অফিস রুম ডেকোরেশন বাবদ নাম মাত্র কাজ করে দুই কোটি টাকার বিল ভাউচার করে টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। পাঁচ লক্ষ টাকার অধিক হলে টেন্ডার ছাড়া কাজ করার নিয়ম না থাকলে তার বিষয়ে ব্যতিক্রম।

শুধুমাত্র আওয়ামীলীগ সরকারের বড় মন্ত্রীদের দাপট দেখিয়ে এই ধরনের সীমাহীন ঘুষ, দূর্নীতি করে গেছেন তিনি। নারী কেলেঙ্ককারীতেও পিছিয়ে নেই তিনি। টিসিবি’র নারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তার অনৈতিক দাবীর অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আজকের সংবাদকে জানান। লীগ সরকারের আমলে দাপিয়ে বেড়ানো আবুল হাসনাত এখন বিএনপি’র কঠোর পন্থী বলে দাবী করেন। অথচ তারই এক চাচা তার নিজ এলাকার লীগ সরকারের এমপি ছিলেন। তার পরিবার স্বৈরাচার সরকারের দোসর ছিলেন এবং তার নিজ এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছিলেন পতিত সরকারের দাপট দেখিয়ে।

আবুল হাসনাত চৌধুরী লীগের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আবুল হাসনাত কর্মকর্তা উন্নয়ন ও সেবার নামে প্রতিনিয়ত দূর্নীতির আশ্রয় নিয়ে নিজের আঁখের গুছিয়েছেন, বনে গেছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। টিসিবি’র উন্নয়নের নামে, স্বার্থে বিভিন্ন ক্রয় সংক্রান্ত নিজের লোক দিয়ে থেকে ঐ দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তার অর্থ আত্মসাৎ করছেন কোটি কোটি টাকা বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। দূর্নীতিবাজ আবুল হাসনাত যে, এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই তাদেরকে চাকুরীচ্যুত বদলীসহ কোনো শাস্তি দিয়ে হেস্তনেন্ত করা হয়েছিল বিগত সময়ে, য়ার ফলে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পান নাই। দূর্নীতির প্রতিবাদ করায় অনেক কর্মচারীকে চাকুরী হারানোর হুমকী দেওয়া হয়।

বিগত সময় তাকে খুলনা অঞ্চলে বদলী করা হলে লীগ সরকারের মন্ত্রী ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দামের প্রভাব খাটিয়ে সেই বদলী আদেশ বাতিল করেন। টিসিবি’র দুই জন কর্মচারীকে দিয়ে তার বাসায় কাজ করানো হয় এবং দুই জন ড্রাইভার কে দিয়ে দুইটি গাড়ী ব্যবহার করেন পারিবারিক কাজে, এভাবেই রাম রাজত্ব কায়েম করে চলেছেন।

পতিত স্বৈরাচারীর সরকারের আমলে রংপুর নিজ জেলায় বদরগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে ছিলেন লীগের টিকেট নিয়ে তারই ভাই হাসান তবিকুল চৌধুরী পলিন। তার নির্বাচনের সময় সরকারী দলের প্রভাব খাটিয়ে আপন বড় ভাই হাসনাত তবিকুল চৌধুরী পলিন পক্ষে উপজেলা পরিষদে নির্বাচনের প্রকাশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার ও জোর পূর্বক নির্বাচনে জয়ী করার লক্ষে প্রচার প্রচারণা করার অভিযোগে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও রির্টানিং অফিসার (বদরগঞ্জ তারাগঞ্জ) টিসিবি’র পরিচালক (প্রশাসন) আবুল হাসনাত চৌধুরী কে শোকজ করেন এবং লিখিত জবাবের ব্যাখ্যা সুষ্পষ্ট না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে পত্র প্রেরণ করলে লীগ সরকারের ক্ষমতার দাপটে সেই পত্রের বিষয়ে আমলে আসেনি।

উক্ত অভিযোগের সত্যতা জানার জন্য আবুল হাসনাত মোবাইলে ফোন দিলে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবী করেন। মতামত নেওয়ার কয়েক মিনিট পরেই বাংলাদেশ প্রতিদিন এর নিউজ এডিটর পরিচয়দানকারী মাহবুব খন্দকার এই প্রতিবেদক কে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন এবং আবুল হাসনাত তার বোন জামাই বলে দাবী করেন এবং আবুল হাসনাতের পরিবার’রা নাকি বিএনপি’র বড় মাপের নেতা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের মোবাইলে ফোন দিলে ফোন রিসিভ না করায় ক্ষুদ্রে বার্তা পাঠানো হলেও সচিবের পক্ষ থেকেও আবুল হাসনাত এর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়ে কোন মতামত পাওয়া যায়নি।