কুমিল্লার দেবিদ্বারে একই স্থানে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ সভায় ডাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন।

প্রকাশিত: ১০:০০ অপরাহ্ণ, মে ২০, ২০২৩
কুমিল্লা প্রতিনিধি : কুমিল্লার দেবিদ্বারে একই স্থানে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ সভায় ডাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে দেবিদ্বার উপজেলা প্রশাসন। পরে ১৪৪ ধারা জারি ভঙ্গ করে কর্মীসভা করেছে ৬নং ফতেহাবাদ ইউনিয়ন ছাত্রলীগ। এ সময় সভাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিলো। শনিবার বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ সমর্থিত উপজেলা ছাত্রলীগের নির্দেশে শনিবার বিকেলে চান্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক কর্মীসভা আহবান করে ফতেহাবাদ ইউনিয়ন ছাত্রলীগ। অপরদিকে, একই স্থানে এইদিন একই সময়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের সমর্থিত উপজেলা যুবলীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আরও একটি আলোচনা সভা ডাকা হয়। এ নিয়ে সকাল থেকে উত্তেজনা দেখা দিলে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই বিরোধপূর্ণ স্থানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এর আগে মো. আবুল কালাম আজাদ সমর্থিত ছাত্রলীগের আয়োজনে তৈরী মঞ্চ ও সভাস্থলের চেয়ার ভাঙচুর করে যুবলীগ কর্মীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা, দেবিদ্বার সার্কেল এএসপি আমিরুল্লা ও থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) খাদেমুল বাহার এর নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ যেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
পরে উভয় পক্ষের সংঘর্ষ এড়াতে স্থানীয় প্রশাসন সভাস্থলে ১৪৪ ধারা জারি করলেও দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা উত্তর  জেলা আওয়ামীলীগ এর সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদের সমর্থিত ৫/৬শ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ওইস্থানে কর্মীসভা করেন। এ ব্যাপারে উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক আসাদুর রহমান রনি জানান, আমরা চারদিন আগে নির্ধারিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে আমরা চান্দপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ছাত্রলীগের কর্মীসভা আহবান করি। পরে একই স্থানে স্থানীয় এমপি সমর্থিত যুবলীগও একটি সভা ডাকে। আমাদের কর্মী সভা শুরুর আগেই এমপি সমর্থকরা আমাদের মঞ্চ, পেন্ডেল ও চেয়ার ভাঙচুর করে পালিয়ে যায়। আমাদের ছাত্রলীগ কর্মীদের বাঁধভাঙ্গা-স্রোতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেই কর্মীসভা চালাতে বাধ্য হই। এ ব্যাপরে স্থানীয় এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল সমর্থক যুবলীগ উপজেলা সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবুল কাসেম ওমানী জানান, শনিবার (২০ মে) বিকেল ৩টায় চান্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে যুবলীগের কর্মীসভা হওয়ার কথা ছিল, উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল  কালাম আজাদ সমর্থকরা আমাদের কর্মীদের সভাস্থলে জমায়েত হতে দেয়নি। তারা আমাদের লোকদেরকে স্কুল মাঠ থেকে বের করে দেয়। প্রশাসন সভাস্থলে ১৪৪ ধারা জারি করায় আমরা কর্মসূচী বাতিল করি। ওরা নিজেরা নিজেদের মঞ্চ, পেন্ডেল, চেয়ার ভাঙচুর করে আমাদের উপর দোষ  দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি তদন্ত) খাদেমুল বাহার আবেদ জানান, ছাত্রলীগ এবং যুবলীগ একই স্থানে একই সময়ে কর্মীসভা ডেকেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর নির্দেশে ঘটনাস্থল ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। ছাত্রলীগ বিশাল কর্মী বাহিনী নিয়ে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সভা করেছে। ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা মো. আরেফিন ফয়সাল তুহিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম রুবেল। বিশেষ অতিথি ছিলেন, ৯নং গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক ছাত্রনেতা মো. মোকবল হোসেন মুকুল, ফতেহাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ কামরুজ্জামান মাসুদ,জাফরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জাহিদুল আলম, সাবেক ছাত্রনেতা মো. হাবিবুর রহমান, হুসাইন আহমেদ, শয়ন দাস। বিশেষ বক্তা ছিলেন, দেবিদ্বার উপজেলা ছাত্রলীগ আহবায়ক, মো আসাদুর রহমান রনি, দেবিদ্বার উপজেলা ছাত্রলীগ যুগ্ম আহবায়ক মো. সারোয়ার হোসেন রাকিব, মো. গোলাম মহিউদ্দিন সবুজ, মো. ইমরান হোসেন ইমু, মো: গাজী আসিফ বিন লতিফ, মো. দিদারুল আলম ফয়েজ প্রমুখ।