পর্দা নামল ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের

প্রকাশিত: ১১:৫৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৮, ২০২৪
জাতীয় জাদুঘরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব মিলনায়তনে শুরু হয় সমাপনী অনুষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিবেদক

পর্দা নেমেছে ৯ দিনব্যাপী দ্বাবিংশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের। আজ রবিবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব মিলনায়তনে শুরু হয় সমাপনী অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। বিশেষ অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইরানি নির্মাতা মাজিদ মাজিদি এবং ভারতের প্রখ্যাত অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর।

এবারের উৎসবে এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, ট্রিবিউট, বাংলাদেশ প্যানারোমা, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড, চিলড্রেনস ফিল্ম, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস, শর্ট অ্যান্ড ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্ম এবং উইমেন্স ফিল্ম সেকশনে বাংলাদেশসহ ৭৪টি দেশের ২৫২টি চলচ্চিত্র দেখানো হয়। ২০ জানুয়ারি অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী উৎসবের উদ্বোধন করেন।

আজ সমাপনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। এবার শিশুতোষ চলচ্চিত্র শাখায় বাদল রহমান পুরস্কার পেয়েছে ভারতীয় নির্মাতা বিপুল শর্মা নির্মিত ছবি ‘প্রবাস দ্য ট্যুর’, অডিয়েন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনার শ্যাম বেনেগাল নির্মিত ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’।

স্পেশাল অডিয়েন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ভারতের অভিজিৎ শ্রীদাস নির্মিত ছবি ‘বিজয়ের পরে’। স্পিরিচুয়াল ফিল্ম শাখায় সেরা ফিচার ফিল্ম হয়েছে রাশিয়ার ‘দেয়ার অ্যান্ড ব্যাক’, সেরা তথ্যচিত্রের পুরস্কার পেয়েছে কিউবার হ্যানসেল লেইভা ফ্যানেগো নির্মিত ‘কুনানফিন্দা: দ্য ল্যান্ড অব ডেথ’ এবং স্পেশাল মেনশন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে গোলাম রব্বানী নির্মিত ‘সুরত’। 

চলচ্চিত্র

নারী নির্মাতা শাখার সেরা ফিচার ফিল্ম ইরানের নির্মাতা মানিজেহ হেকমত নির্মিত ‘জাঙ্কস অ্যান্ড ডলস’। এই শাখায় সেরা তথ্যচিত্র যুক্তরাষ্ট্রের ন্যান্সি স্যাভেন্ডসেন নির্মিত ‘প্যাসাঙ্গ ইন দ্য শ্যাডো অব এভারেস্ট’।

সেরা নির্মাতা দক্ষিণ কোরিয়ার গিয়ঙমু নোহ ‘হাউ টু গেট ইয়োর ম্যান প্রেগনেন্ট’। এ শাখায় বিশেষ পুরস্কার পেয়েছে চৈতালী সমাদ্দারের ‘মুক্তি’। 

বাংলাদেশ প্যানারমায় পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র শাখায় ফিপরেসি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে পান্থ প্রসাদের ‘সাবিত্রী’, স্বল্পদৈর্ঘ্যে বৈশাখী সমাদ্দারের ‘লায়লা’। স্বল্পদৈর্ঘ্যে প্রথম রানার আপ হয়েছে সুভাশিষ সিনহার ছবি ‘ইনাফি’, দ্বিতীয় রানার আপ হয়েছে জিয়াউল হক রাজুর ছবি ‘অন্তহীন পথে’।

এশিয়ার চলচ্চিত্র শাখায় সেরা চিত্রনাট্য পুরস্কার পেয়েছে কাজাখিস্তানের মুহিউদ্দিন মুজাফফরের ‘ফরচুন’, সেরা সিনেমাটোগ্রাফির পুরস্কার পেয়েছে অ্যাঞ্জেলোস রালিসের ‘মাইটি আফরিন’।

সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন বাদেমা, ‘দ্য কর্ড অব লাইফ’ ছবির জন্য। ‘চালচিত্র এখন’ ছবির জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন অঞ্জন দত্ত। ‘হুইসপারিং মাউন্টেন্স’ ছবির জন্য সেরা নির্মাতার পুরস্কার পেলেন জগৎ মানুওয়ারনা। সেরা চলচ্চিত্র চীনের কোয়াইও সিক্সু নির্মিত ‘দ্য কর্ড অব লাইফ’। বিশেষ জুরি পুরস্কার পেয়েছে কাজাখিস্তানের আসকার ওজাবায়েভ নির্মিত ‘হ্যাপিনেস’। বিশেষ জুরি পুরস্কার পেয়েছেন ‘মাইটি আফরিন’ ছবির অভিনেত্রী আফরিন খানম। 

চলচ্চিত্র ১

অতিথিরা চলচ্চিত্রের নির্মাতা, প্রযোজক ও প্রতিনিধিদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। পুরস্কার গ্রহণ করে অঞ্জন দত্ত বলেন, ‘তিনি একজন সার্বক্ষণিক অভিনেতা। তাকে অভিনেতা হিসেবে পুরস্কৃত করায় সম্মানিত বোধ করেছেন।’

বাংলাদেশ প্যানারোমা শাখার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়ে মাজিদ মাজিদি জানান, এই উৎসবে থাকতে পেরে তাঁর চমৎকার অনুভূতি হয়েছে। এ সময় তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্র সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চলচ্চিত্র বঞ্চিতদের কথা বলে। এই উৎসবে অনেক তরুণ নির্মাতা অংশগ্রহণ করেছেন দেখে খুবই আনন্দিত। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুনাম কুড়াবে আশাকরি।’

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, ‘আমি মনে করি, এই উৎসবে নানারকম সংস্কৃতির প্রগতিশীল উপস্থাপন হয়েছে। আমরা যে ধরনের সমাজ নির্মাণের স্বপ্ন দেখি, এই ধরনের উৎসব সে ধরনের সমাজ গঠনে সহায়ক।’

ব্যাপক দর্শক এবারের উৎসব উপভোগ করেছেন বলে জানান উৎসবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম। উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল জানান, ২০২৫ সালের ১১ থেকে ১৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ২৩তম আসর।