আড়াই হাজার কোটি টাকা জরিমানা এক বছরে

প্রকাশিত: ৬:২১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১১, ২০২৩

১১ জানুয়ারি ২০২৩

নিজস্ব প্রতিনিধি

গত এক বছরে (২০২২) দুর্নীতির বিভিন্ন মামলার আসামিদের প্রায় আড়াই হাজার কোটি (২ হাজার ৬৩২ কোটি ৪১ লাখ) টাকা জরিমানা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই সঙ্গে প্রায় ১৪ কোটি টাকার সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। দুদকের দায়ের করা মামলায় আদালতের নির্দেশনায় এসব অর্থ এসেছে। এছাড়া একই সময়ে প্রায় ৫৮৬ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদ ক্রোক করা হয়েছে।

দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) মো. মোজাম্মেল হক খান মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজদের দুর্নীতির টাকা ভোগ করতে দেওয়া হবে না। দুর্নীতি করলে পার পাওয়া যাবে না। করোনা মহামারির কারণে দুদকের কর্মকাণ্ড কিছুটা মন্থর মনে হলেও শিগগিরই গ্রেফতার অভিযান জোরদার করা হবে।

দুদক থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, ২০২২ সালে দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা বিভিন্ন মামলায় দুর্নীতিবাজ আসামিদের ২ হাজার ৬৩২ কোটি ৪১ লাখ ৪৩ হাজার ৭৮৩ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ওই একই সময়ে রাষ্ট্রের অনুকূলে আদালতের নির্দেশনায় ১৩ কোটি ৯৬ লাখ ১৯ হাজার ১৬৭ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

এছাড়া ২০২২ সালের পুরো বছরে দুর্নীতিবাজদের মোট ৫৮৫ কোটি ৯২ লাখ ৫৮ হাজার ১৫৬ টাকার স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের ১৪৪ দশমিক ২৪ হাজার ৪৫৬ একর জমি, ২৭টি বাড়ি, ১৯টি ফ্ল্যাট, ১১টি গাড়ি ও ৪টি নৌযান। অন্যদিকে অবরুদ্ধ বা ফ্রিজ হওয়া অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ১৪৪৮টি ব্যাংক হিসাব ও ১১টি এফডিআর। যেগুলোতে জমা আছে ১৪৪ কোটি ৫৮ লাখ ৩৯ হাজার ৭০৬ টাকা, ২৭ হাজার ৯৫৪ মার্কিন ডলার ও ৭৯ কোটি ২১ লাখ ৩৫ হাজার ৪৬০ টাকার শেয়ার। মোট অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ হলো ২২৪ কোটি ৭৯ লাখ ৭৫ হাজার ১৬৬ টাকা। আরও জানা গেছে, ক্রোক ও অবরুদ্ধ হওয়া সম্পদের মধ্যে আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদারের জমি ও ভবন, রাজউকের সম্পত্তি ও সাউথ-বাংলা এগ্রিকালচারের সাবেক চেয়ারম্যান এসএম আমজাদ হোসেনের সম্পত্তি রয়েছে।

২০১৯ সাল থেকে কমিশনের স্বতন্ত্র ইউনিট হিসাবে সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইউনিট যাত্রা শুরু করে। এর আগে ওই ইউনিটের অধীনে ২০২০ সালে আদালতের আদেশে ১৮০ কোটি ১১ লাখ ৯১ হাজার ৭৪৬ টাকার সম্পত্তি ক্রোক করা হয় এবং ১৫২ কোটি ৯২ লাখ ৮৬ হাজার ৪৯৬ টাকা অবরুদ্ধ করা হয়।

আর ২০২১ সালে ৩২৬ কোটি ৭১ লাখ ৪৬ হাজার ৬২৮ টাকার সম্পত্তি ক্রোক করা হয়েছিল এবং ১ হাজার ১৬১ কোটি ৫৮ লাখ ১৪ হাজার ৪৮০ টাকার পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা (পাউন্ড, কানাডিয়ান ডলার, অস্ট্রেলিয়ান ডলার) অবরুদ্ধ করা হয়েছে। সবমিলিয়ে ওই দুই বছরে ৫০৬ কোটি ৮৩ লাখ ৩৮ হাজার ৩৭৪ টাকার সম্পদ ক্রোক এবং ১ হাজার ৩১৪ কোটি ৫১ লাখ ৯৭৬ টাকার সম্পদ অবরুদ্ধ করা হয়।