কুমিল্লায় উৎসব-আনন্দের মধ্যে পালিত হলো পহেলা বৈশাখ

প্রকাশিত: ৯:৪০ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৫, ২০২৪

 

এটিএম মাজহারুল ইসলাম,
ক্রাইম রিপোর্টার, কুমিল্লা।

কুমিল্লায় উৎসব মুখর পরিবেশে পহেলা বৈশাখের সকল অনুষ্ঠানিকতা পালিত হয়। নববর্ষ উদযাপনের প্রস্তুতিতে বৈশাখের রঙে সেজে উঠছে কুমিল্লা। বাঙালি সংস্কৃতির মেলবন্ধনে আঁধার কাটিয়ে আলোর পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে বর্ষবরণে নানা কর্মসূচি নিয়েছে প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠন। কুমিল্লা সাংস্কৃতিক কর্মী ও আয়োজকেরা জানান, বাংলা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে কুমিল্লা শহরসহ ১৭ উপজেলাজুড়ে উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ব্যাপক আয়োজন শুরু হয়।
নববর্ষ ঘিরে দিনব্যাপী কর্মসূচি নিয়েছে জেলা, জেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন, সাংস্কৃতিক কমিটি বলয় ও কচিকাঁচার মেলাসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন।
এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা। সকাল সাড়ে আটটায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ মাঠ থেকে পোস্টার ফেস্টুন ব্যানার সহ রংবেরঙের সাজে সজ্জিত হয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেয় বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও সংগঠনের কর্মীরা। রেলিটি জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়ে শেষ হয়। সকালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ মাঠে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, সিটি মেয়র তাহসিন বাহার সূচনা, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান, পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান সহ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশে পালিত হয়ে আসছে আদিকাল থেকেই। এই উৎসব সকলের। সবাই সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি শান্তিপূর্ণ – আয়োজনের মধ্য দিয়ে এই দিনটিকে আপন করে নেয়।
কুমিল্লায় বাংলা সংস্কৃতি বলয়ের সভাপতি কাজী মাহাতাব সুমন জানান, জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে তাদের আয়োজনে থাকছে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, রাখি বন্ধন, নানান মিষ্টান্ন সহকারে খাবারের আয়োজন।
জেলা প্রশাসক খন্দকার মু: মুশফিকুর রহমান জানান, বর্ষবরণে আমরা সাংস্কৃতিক কর্মীরা পুরোদমে ব্যস্ত। নাচ, গান, অভিনয়, আবৃত্তি, চিত্রাংকন থাকছে। আশা করছি ভাল পরিবেশনা হবে। নতুন বছর সবার জন্যে মঙ্গলময় হোক এটাই আমাদের চাওয়া। এবার বর্ষবরণে মুক্তিযুদ্ধ, জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী বিষয় নানাভাবে কমসূচির মাধ্যমে তুলে ধরা হবে।
এর আগে নববর্ষ ঘিরে শুক্রবার থেকে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মাঝে ‘বাংলা নববর্ষ, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও বঙ্গবন্ধু’ বিষয়ে রচনা প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সকাল দশ টায় স্টেশন ক্লাবে গ্রাম বাংলার লোকজ ঐতিহ্যের লাঠি খেলা, সাপের নাচ ও মোরগ লড়াই অনুষ্ঠিত হয়। বাংলার ঐতিহ্য এইসব আয়োজন দেখতে সেখানে ভিড় করেন নানান শ্রেণী পেশার মানুষ। বিকাল চারটায় কুমিল্লা শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ঘুড়ি উৎসব প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভাসহ নানা আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে আয়োজন করা হয়েছে বৈশাখী মেলার। তিন দিন ব্যাপী এই মেলায় অংশগ্রহণ করছে অন্তত ৫০টি স্টল। নাগরদোলা, নৌকা দোলনা, রেলগাড়িসহ নানান আয়োজনও আছে এই মেলায়।