ঢাকা বংশাল মি‌রনজিল্লা হ‌রিজন ক‌লোনী‌তে ঢাকা দ‌ক্ষিন সি‌টি ক‌র্পো‌রেশনের উচ্ছেদের প্রতিবা‌দে  মানব বন্ধন

প্রকাশিত: ১১:৪৪ অপরাহ্ণ, জুন ৬, ২০২৪

শ্রী সুক‌দেব লাল(শুভ), ঢাকা জেলা প্রতি‌নি‌ধি।

৭০০ প‌রিবারের ম‌ধ্যে ৬৯ প‌রিবার‌কে পূর্নবাসন কর‌তে চায় ঢাকা দক্ষিন সি‌টি ক‌র্পো‌রেশন। ৩ হাজার হরিজন প‌রিবা‌রের বসবাস অ‌নি‌‌শ্চিয়তা, মি‌রন‌জিল্লা হ‌রিজন ক‌লোনী‌তে বহুতল ভব‌নের প‌রিকল্পনা ঢাক‌া দ‌ক্ষিন সি‌টি ক‌র্পো‌রেশ‌নের। রাজধানীর বংশালের ৩৩নং ওয়ার্ডের মি‌রিন‌জিল্লা হ‌রিজন ক‌লোনীবা‌সি‌কে উচ্ছে‌দের সিদ্ধান্ত নি‌য়ে‌ছে ঢাকা দ‌ক্ষিন সি‌টি ক‌র্পো‌রেশন।

এ ঘটনার কার‌নে হ‌রিজন সম্প্রদা‌য়ের মানু‌ষের ভিত‌রে আতংক বিরাজ কর‌ছে, তারা বর্তমা‌নে ভ‌য়ে তা‌দের জীবন বিরাজ করে‌ছে, এই উচ্ছেদ অ‌ভিযা‌নের আতং‌কে অ‌নেক হ‌রিজন প‌রিবা‌রের বৃদ্ধ নারী, পুরুষকে অসুস্থতার কার‌নে হাসপাতা‌লে ভ‌র্তি করা হ‌য়ে‌ছে। ১৯৪১ সালে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় হরিজন সেবক সমিতি।বর্তমানে বাংলাদেশ হরিজন সেবক সমিতি নামে পরিচিত। এটা একটি সামাজিক সংগঠন। সংগঠনটির কার্যালয় মিরনজিল্লায়। এই সংগঠনের ইতিহাস বলার অর্থ হলো মিরনজিল্লা কলোনিটি কতটা পুরতন, সেটা বলার কারণ । এই হরিজন সেবক সমিতির সাথে জড়িত আছে ৩৩ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত মিরনজিল্লা হরিজন কলোনির ইতিহাস। ১৮৬৪সালে  ঢাকা মিউনিসিপ্যাল প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৭ সালের পৌরসভা অধ্যাদেশ জারি হবার পর হতেই চেয়ারম্যানের সাথে সাথে ওয়ার্ড কমিশানার নির্বাচিত হবার পদ্ধতি চালু হয়।  ১৯৭৮ সালে ঢাকা মিউনিসিপ্যালিটি ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে পরিবর্তিত হয়।
সেই সময় থেকে এইসব জনগোষ্ঠী সিটি করপোরেশনের সাথে ওতপ্রোতভাবে  পরিচ্ছন্নতা পেশার সাথে জড়িত হয়ে পরে।

আজকে মিরনজিল্লা হরিজন কলোনি উচ্ছেদ হুমকীর মুখে।
আজকে মিরনজিল্লা কলোনী বাসীর চোখে ঘুম নেই। নেই স্বস্তি। একটা ভয়ংকর বাস্তবতার ভিতর দিয়ে যাচ্ছে তারা এর মূল কারণ হলে ১০ তারিখে কলোনীর একপাশের ১০০ ফিটের মত ভেঙে সেখানে মার্কেট করা হবে। দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ৩৩ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত সিটি কলোনি উচ্ছেদের একটি নোটিশ জারি করেছে। নোটিশে বলা হয়েছে অবৈধ বসবাসরতদের অপসারণ করা হবে? কীভাবে সিটি কলোনির বসবাসরতরা অবৈধ হয়?। এই উচ্ছেদের মূলে রয়েছে স্থানীয় রাজনীতিবীদ, কাউন্সিলের, এটা মূলত দখল করার দখল করার চক্রান্ত আর কিছুনা। গত ৬/ ৫/২০২২ সালে হরিজন সেবক সমিতি দক্ষিণ সিটি করপোরেশন  মেয়র ম‌হোদয়, বরাবর একটি আবেদন করেন যেখানে উল্লেখ করা হয় কলোনীর মানুষের দুঃখ কষ্টের কথা এবং প্রস্তাব করা হয় টিনের ঘরগুলো ভেঙ্গে ১০তলা বিশিষ্ট ৫টি নতুন ভবন নির্মাণের জন্য। সেই আবেদনে মেয়র ম‌হোদয় পর্যালোচনা করে পেশ করুন বলে সহি করেন। তাহলে ২ বছরে সিটি করপোরেশন কি পর্যালোচনা করল যে আজকে এই উচ্ছেদের নোটিশ দিতে হয়েছে। এই উচ্ছেদ করার মূল কারন হল কলোনীর পাশে থাকা কাঁচাবাজার সম্প্রসারণ করা। এই উচ্ছেদের ফলে লাভবান হবে স্থানীয় রাজনীতিবিদ, কাউন্সিলর ও ব্যবসায়ীদের।

বলা হচ্ছে ১০০ ফিটের মতো ভাঙ্গা হবে। বুলডোজার দিয়ে ভাঙ্গা শুরু করলে সেটা আর ১০০ ফিটে সীমাবদ্ধ থাকবেনা। এই ভাঙ্গার আদেশ মৌখিকভাবে দেওয়া হয়েছে। এই আদেশের কপি ডিসি, প্রশাসনের কাছে গেছে এমন কথা শোনা যাচ্ছে। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনে কর্মকর্তাদের কাছে জানতে  মিরিনজিল্লা স্থানীয় সংগঠন হরিজন সেবক সমিতির নেতৃবৃ‌ন্দদের সা‌থে অন‌্যান‌্য হ‌রিজন সংগঠ‌নের নেতারা সাক্ষাত কর‌তে যায়। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানান এসব মেয়র ম‌হোদয় জানেন।  তিনি বিদেশে গেছে ৭ তারিখে দেশে ফির‌বেন। আজ এই উচ্ছেদের বিরুদ্ধে মিরিনজিল্লা ক‌লোনীর প্রধান সড়‌কে মানববন্ধন ক‌রে‌ছে স্থানীয় হ‌রিজন বা‌সিরা। মানববন্ধনে শতশত নারী পুরুষ‌দের সাথে ছোট শিশুরা বিভিন্ন প্লাকার্ড নিজ হা‌তে লেখা উচ্ছেদ নোটিশের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়। মানববন্ধন হরিজন ঐক্য পরিষদের ব্যানারে অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে কৃষ্ণা লালের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন
রানা দাশগুপ্ত হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা কাজল দেবনাথ,
মহেন্দ্র কুমার পদ্মাবতী দেবী,
তাপস কুন্ডু, ঢাকা মহানগর পুজা কমিটির সাধারন সম্পাদক, ও ঢাকা বিশ্ব‌বিদ‌্যাল‌য়ের শিক্ষক ফেরদৌস রুবায়েত, মানববন্ধনে সমর্থন জানিয়ে আরো উপস্থিতি ছিলেন হেমন্ত দাষ, সম্পাদক, বাংলাদেশ জয় ভীম ছাত্র যুব ফেডারেশন।
ছাত্রও যুব পরিষদের পংকজ বাঁশফোর ও হৃদয় কুমার হেলা, ও আরো উপ‌স্থিত ছি‌লেন শ্রী সুক‌দেব লাল, সাধারন সম্পাদক, ও অন‌্যান সম্পাদকগন, বাংলা‌দেশ দ‌লিত হিউম‌্যান রাইটস(বি‌ডিএইচআর) এর কে‌ন্দ্রিয় ক‌মি‌টির, মানববন্ধন শেষে শতশত নারী পুরুষ সিটি করপোরেশন ভবনে যান। সেখানে চার সদস্যের একটি দল মেয়র ম‌হোদয় না থাকায় সচিব সা‌হে‌বের সাথে দেখা করেন। সচিব সা‌হেব হ‌রিজন‌দের সমস‌্যা সু‌নে আস্বস্ত করে বলেন তিনি এ বিষয়ে মেয়র ম‌হোদয়‌কে অবগত কর‌বেন যেন এই সমস‌্যা সমাধান ক‌রে‌দেন, তারপর ভুক্তভু‌গি হ‌রিজন বা‌সিরা সুষ্ঠ প‌রি‌বে‌শে নগর ভবন ত‌্যাগ ক‌রে সবাই মিরনজিল্লা ‌নিজ ক‌লো‌নি‌তে ফিরে আসেন।