বেরোবিতে অনিয়মের মাধ্যমে আসাদ মন্ডলকে ‘সহযোগী অধ্যাপক’ পদে নিয়োগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ ইউজিসির

প্রকাশিত: ৬:৫৭ অপরাহ্ণ, জুন ২৪, ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার : বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হাসিবুর রশীদ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে সহযোগী অধ্যাপক পদের বাছাই বোর্ডের তারিখ নির্ধারণ করেন। বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে বোর্ড স্থগিত করতে বাধ্য হন উপাচার্য।

পরবর্তী সময়ে আবার গত ১৩ জুলাই ২০২৩ তারিখে লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নিয়োগের বাছাই বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নিয়োগ-বাছাই বোর্ডে অযোগ্য প্রার্থী মোঃ আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদকে মাত্র আট বছর এক মাসের চাকুরির অভিজ্ঞতায় সহযোগী অধ্যাপকের শুন্য পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। সুপারিশটি গত ২০ জুলাই ২০২৩ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ৯৬তম সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হলে প্রার্থীর চাহিত যোগ্যতা না থাকায় বাছাই বোর্ডের সুপারিশ অনুমোদন দেয় নি সিন্ডিকেট। ওই সভার সিদ্ধান্ত-০৫ মোতাবেক সুপারিশটি পুনরায় বাছাই বোর্ডে প্রেরণ করা হয়।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর আইন-২০০৯ এর প্রথম সংবিধি ৫(৪) ধারায় বলা হয়েছে ‘কোন বাছাই বোর্ডের সুপারিশের সহিত সিন্ডিকেট একমত না হইলে বিষয়টি উক্ত বোর্ড কর্তৃক চ্যান্সেলরের নিকট প্রেরণ করা হইবে এবং এই ব্যাপারে তাহার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলিয়া গন্য হইবে’। কিন্ত উক্ত আইন অমান্য করে উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হাসিবুর রশীদ গত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে পুনরায় ওই বিষয়ে বাছাই বোর্ড আহবান করেন। উপাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত নিয়োগ-বাছাই বোর্ডের মাধ্যমে অযোগ্য প্রার্থী মোঃ আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদকে সহযোগী অধ্যাপকের শুন্য পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয় এবং ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ অনুষ্ঠিত ৯৮তম সিন্ডিকেট সভায় তা অনুমোদন করে ঐ দিনই তড়িঘড়ি করে যোগদান করানো হয়। অভিযোগ আছে, উক্ত নিয়োগের জন্য সিন্ডিকেটের ৯৬তম সভায় অযোগ্য প্রার্থীকে সুপারিশের বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপনকারী সিন্ডিকেট সদস্যগণের ৯৮তম সভায় অনুপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত হয়েই উপাচার্য মহোদয় তড়িঘড়ি করে সিন্ডিকেটের সভার আগের দিন পুনরায় বাছাই বোর্ড আহ্বান করেন এবং পরদিন সিন্ডিকেটে অনুমোদন করেন।

এদিকে আইন ভঙ্গ করে অযোগ্য প্রার্থী হিসেবে মোঃ আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদকে সহযোগী অধ্যাপক পদে দেয়া নিয়োগপত্রে ৯৬তম সিন্ডিকেট সভায় অনঅনুমোদনের বিষয়টিও গোপন করা হয়েছে।
অযোগ্য ও জুনিয়র একজন শিক্ষককে সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগ প্রদান করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক তাঁদের জ্যেষ্ঠতা হারিয়েছেন।

লোকপ্রশাসন বিভাগের এই অনিয়ম ও আইন ভঙ্গের মাধ্যমে নিয়োগের বিষয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাবিউর রহমান প্রধান গত ১০ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে ইউজিসিতে অভিযোগ করলে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা তলব করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাওয়া হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে। এছাড়া অভিযোগকারী তাবিউর রহমানকেও চিঠি দিয়ে যথাযথ মাধ্যমে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগ করার নির্দেশ দিয়েছিল ইউজিসি। তাবিউর রহমান প্রধান ইউজিসির নির্দেশনা মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে ১০ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে অভিযোগের সকল তথ্য-উপাত্ত পাঠালে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেটি ইউজিসিতে পাঠায়নি বলে জানা গেছে।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আলমগীর চৌধুরী দেশের বাইরে থাকায় এ বিষয়ে তাঁর সাথে কথা বলা সম্ভব হয় নি।

বেরোবি’র উপাচার্য  অধ্যাপক ড. মোঃ হাসিবুর রশীদের সাথে কথা হলে তিনি জরুরী মিটিং এ আছেন বলে ফোন কেটে দেন।