বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রুটিপূর্ণ বাছাইবোর্ড ও পদোন্নতি বাতিলের দাবি ক্রাইম পেট্রোল ক্রাইম পেট্রোল News প্রকাশিত: ১২:৩৩ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ৪, ২০২৪ স্টাফ রিপোর্টার : বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) নীতিমালা ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ৯ কর্মকর্তাকে ৪র্থ গ্রেডভুক্ত অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার ও সমমানের পদে পদোন্নতি দিতে না দিতেই এ সংক্রান্ত বাছাইবোর্ড বিষয়ে আপত্তি তুলে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু কর্মকর্তা। আজ ৩ জুলাই, বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় জন কর্মকর্তা বাছাইবোর্ড গঠনে বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন করেছেন। আবেদনের কপি উপাচার্য, ট্রেজারার ও সকল অনুষদের ডিনগণকেও দেয়া হয়েছে। এছাড়াও একই বিষয়ে বেরোবি রংপুরের সকল সিন্ডিকেট সদস্য এবং ইউজিসির সচিবের কাছেও আবেদন করেছেন তারা। আবেদনপত্র পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী। তিনি বলেন, এ বিষয়ে ইউজিসি পদক্ষেপ নিবে। আবেদনপত্রে অভিযোগকারী কর্মকর্তারা বলেন, গত ৩১.০৫.২০২৪ তারিখে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর-এর ৫ম গ্রেডভুক্ত ৩১ জন ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও সমমানের কর্মকর্তার ৪র্থ গ্রেডভুক্ত অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার ও সমমানের পদে পদোন্নতি/আপগ্রেডেশন প্রদানের জন্য নিয়োগ ও বাছাই বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর আইন-২০০৯ এর প্রথম সংবিধির ধারা-৬ এর ২ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কর্মকর্তাগণের নিয়োগের জন্য গঠিত বাছাই বোর্ডে সদস্য হলেন ভাইস চ্যান্সেলর (বোর্ডের সভাপতি), প্রো- ভাইস চ্যান্সেলর (যদি থাকেন), ট্রেজারার, একাডেমিক কাউন্সিল কর্তৃক মনোনীত ০১(এক) জন ডীন, সিন্ডিকেট কর্তৃৃক মনোনীত একজন সদস্য যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন চাকুরীতে নিয়োজিত নহেন এবং সিন্ডিকেট কর্তৃক মনোনীত একজন বিশেষজ্ঞ। উল্লিখিত ক্যাটাগরির সদস্যবৃন্দের সমন্বয়ে বাছাইবোর্ড গঠিত হওয়ার বিধান থাকলেও গত ৩১.০৫.২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত বাছাই বোর্ডের ক্ষেত্রে তা অনুসরণ করা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সংবিধির ধারা-৬ এর ২ (ঙ) ধারা মোতাবেক ৪৫তম সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত-৫, ৫৪তম সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত-৯ এবং ৮২তম সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত-৯ অনুযায়ী সরকারের একজন অতিরিক্ত সচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তাকে নিয়োগ বাছাই বোর্ডের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করা হলেও ১০২তম সিন্ডিকেটে অর্থ মন্ত্রণলায়ের ৫ম গ্রেডের উপসচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তা এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকারকে কর্মকর্তা নিয়োগ বাছাই বোর্ডের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করা হয়েছে। সংবিধির ধারা ৬। (২) (ঘ) অনুযায়ী একাডেমিক কাউন্সিল কর্তৃক একজন ডীনকে মনোনয়ন প্রদানের কথা বলা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় জন ডীনের মধ্য থেকে কাউকেই সেই মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। অথচ, একই ব্যক্তি পৃথক ২টি প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়োগ-বাছাই বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সংবিধির ৬। (২) (চ) অনুযায়ী ৮২তম (৩০.১০.২০২১ তারিখে অনুষ্ঠিত) সিন্ডিকেটে প্রফেসর ড. মজিব উদ্দিন আহমদ, অধ্যাপক, টুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কে সিন্ডিকেট কর্তৃক মনোনীত বিশেষজ্ঞ সদস্য হিসেবে কর্মকর্তা নিয়োগ-বাছাই বোর্ডের সদস্য করা হয়েছে, যিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২৩.৮.২০২২ তারিখের প্রজ্ঞাপনমূলে এই বিশ^বিদ্যালয়ে ট্রেজারার হিসেবে যোগদান করেছেন এবং সংবিধির ৬। (২) (গ) ধারা অনুযায়ী ট্রেজারার কর্মকর্তা নিয়োগ-বাছাই বোর্ডের একজন সদস্য। ৩১.০৫.২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত কর্মকর্তা নিয়োগ-বাছাই বোর্ডে ট্রেজারার প্রফেসর ড. মজিব উদ্দিন আহমদ পৃথক ২টি প্রতিষ্ঠান থেকে বোর্ডের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, যা আইনের গুরুতর ব্যত্যয়। আবেদনকারী কর্মকর্তারা আরো বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২৩.০৫.২০২৩ তারিখের পরিপত্র অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন এর আওতা বহির্ভূত মন্ত্রণালয়/বিভাগের আওতাধীন এবং স্বশাসিত সংস্থার ৪র্থ, ৫ম ও ৬ষ্ঠ গ্রেডের পদে নিয়োগ/পদোন্নতি প্রদানের কমিটিতে ন্যূনতম যুগ্মসচিব পর্যায়ের প্রতিনিধি থাকেন। অতীতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল কর্মকর্তা নিয়োগ ও বাছাই বোর্ডে ধারা-৬ এর ২ (ঙ) অনুযায়ী অতিরিক্ত সচিব/যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কিন্তু, গত ৩১.০৫.২০২৪ তারিখে ৪র্থ গ্রেডভুক্ত অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার পদোন্নতি/আপগ্রেডেশন বাছাই বোর্ডে ৫ম গ্রেডের কর্মকর্তা অর্থ মন্ত্রণলায়ের উপ-সচিব এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার এর উপস্থিতিতে পদোন্নতি বাছাই বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখানে ৫ম গ্রেডের কর্মকর্তাকে দিয়ে ৪র্থ গ্রেডের কর্মকর্তার পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়েছে, যা নজিরবিহীন। এ অবস্থায় ত্রুটিপূর্ণ কর্মকর্তা নিয়োগ-বাছাই বোর্ড নয় জন কর্মকর্তাকে ৪র্থ গ্রেডের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার ও সমমানের পদে আপগ্রেডেশনের মাধ্যমে পদোন্নতির সুপারিশ করেছে, যা সিন্ডিকেটের ১০৫তম সভায় অনুমোদন করা হয়েছে। এছাড়াও আবেদনকারী কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, ত্রুিটপূর্ণ নিয়োগ-বাছাই বোর্ডের কারণে প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা, কর্মকালীন অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও তারা পদোন্নতি বঞ্চিত হয়েছেন। এসব কারনে উক্ত কর্মকর্তা নিয়োগ-বাছাই বোর্ডের সুপারিশ ও এসংক্রান্ত সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত বাতিল এবং বোর্ড পুনর্গঠন করে অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার ও সমমানের পদে আপগ্রেডেশন মাধ্যমে পদোন্নতির বোর্ড আহ্বানের দাবি জানিয়েছেন তারা। ট্রেজারার প্রফেসর ড. মজিব উদ্দীন আহমদকে মুঠোফোনে কল করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হাসিবুর রশীদ কল ধরেননি। SHARES অপরাধ/দূর্নীতি বিষয়: