কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে যৌথ কর্মসূচি দুই মন্ত্রণালয়ের

প্রকাশিত: ১:০৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ১১, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিনিধি

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা কিশোর গ্যাং এখন সর্বমহলের উদ্বেগের কারণ। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হলেও নিয়ন্ত্রণে আসছে না কিশোর অপরাধীরা। এই অবস্থায় কিশোর গ্যাংসহ অন্যান্য অপরাধ নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় যৌথ কর্মসূচি নিয়েছে। কর্মসূচিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে গুরুত্বারোপ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সারা দেশে অন্তত ২০০ কিশোর গ্যাং রয়েছে। এসব গ্যাংয়ের সদস্য ১০ থেকে ৫০ জন পর্যন্ত। যারা ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক কারবার, জমি দখলে সহায়তা, ইন্টারনেট সংযোগ, কেবল টিভি (ডিশ) ব্যবসা ও ময়লা-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ, মেয়েদের উত্ত্যক্ত ও যৌন হয়রানি, হামলা, মারধরসহ নানা অপরাধে জড়িত।

তাই কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। এমনকি সংসদীয় কমিটির বৈঠকে আলোচনা শেষে বিষয়টি নিয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো কাঙ্ক্ষিত সুফল মেলেনি। সদ্যঃসমাপ্ত সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যৌথ কর্মসূচিসহ গৃহীত পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

সংসদে দেওয়া প্রতিবেদনে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন নির্দেশনা পাঠিয়েছে। শ্রেণিকক্ষে নিয়মিত উপস্থিতির ওপর নির্দিষ্ট নম্বর প্রদান, পর পর কয়েক দিন অনুপস্থিত থাকলে জরিমানাসহ বিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্রের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়মিত পরিদর্শন কার্যক্রম চলছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রম যেমন-খেলাধুলা, চিত্রাঙ্কন, বিতর্ক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতি নিয়মিত আয়োজন করতে বলা হয়েছে।

অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে তাদের অভিভাবকদের জানানো এবং অভিভাবক সমাবেশের আয়োজন করতে বলা হয়েছে। বছরের প্রথমে শিক্ষার্থীর হাতে বিনা মূল্যে পাঠ্য বই ও শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের প্রতি আকৃষ্ট করতে উপবৃত্তি বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রতিবছর ‘জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ’ উদযাপন ও প্রাথমিক শিক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষা পদক বিতরণ করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপের বিষয়ে বলা হয়েছে, বিপথগামী কিশোরদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জন্য জেলা ও উপজেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে; গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।