মহানবী (সা.) যেসব খাদ্য পছন্দ করতেন ক্রাইম পেট্রোল ক্রাইম পেট্রোল News প্রকাশিত: ৯:৫৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ১১, ২০২৪ মহানবী (সা.) ছিলেন মানবজাতির জন্য সর্বোত্তম আদর্শ। তিনি মুমিনের ইহকালীন ও পরকালীন উভয় জীবনের জন্য আদর্শ। যেমন খাদ্য ও পানীয়। নবীজি (সা.) পরিমিত ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করতেন। তিনি সাহাবিদেরও উপকারী ও স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে উদ্বুদ্ধ করতেন। তিনি তা করেছেন সুষম, সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর খাবারের প্রশংসা করে। খাদ্যের গুণাগুণ বর্ণনায় নবীজির নীতি খাদ্যের গুণাগুণ বর্ণনা করার সময় নবীজি (সা.) সর্বদা ভারসাম্য রক্ষা করেছেন। আল্লামা ইবনুল কায়্যিম (রহ.) লেখেন, খাদ্যের ব্যাপারে মহানবী (সা.)-এর নির্দেশনা ও আদর্শ হলো তিনি উপস্থিত খাবার ফিরিয়ে দিতেন না এবং যা নেই তা নিয়ে ভাবতেন না। কোনো হালাল ও উপাদেয় খাবার তাঁর সামনে উপস্থিত করা হলে তিনি তা গ্রহণ করতেন। খাবার রুচিসম্মত না হলে তা হালাল হলেও গ্রহণ করতেন না। তিনি কখনো খাবারের নিন্দা করতেন না। ভালো মনে হলে খেয়েছেন, না হলে এমনভাবে রেখে দিয়েছেন যেন সেটা তিনি অনভ্যাসবশতই রেখে দিয়েছেন। নিজের অপছন্দ হলেই তিনি তা উম্মতের জন্য হারাম করেননি। (যাদুল মাআদ, পৃষ্ঠা-৯৫) যেসব খাবারের প্রশংসা করেছেন মহানবী (সা.) যেসব খাবারের প্রশংসা করেছেন তার কয়েকটি হলো— ১. খেজুর : রাসুলুল্লাহ (সা.) খেজুর খেতে পছন্দ করতেন। তিনি চাইতেন মুমিনের ঘরে খেজুর থাকুক। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, যে ঘরে খেজুর নেই সে ঘরের লোকেরা অভুক্ত। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৮৩১) খেজুরের ভেতর ‘আজওয়া’ প্রজাতির খেজুরের বিশেষ প্রশংসা করেছেন নবীজি (সা.)। তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকালে সাতটি আজওয়া খাবে, সেদিন বিষ ও জাদু তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২০৪৭) ২. সিরকা : খাদ্য ও তরকারি হিসেবে মহানবী (সা.) সিরকার প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘সিরকা কতই না উত্তম তরকারি।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৩৮২০) ৩. জাইতুনের তেল : জাইতুনের তেলের প্রশংসা করেছেন নবী (সা.)। তিনি বলেন, ‘তোমরা জাইতুনের তেল খাও এবং তা মালিশ করো। কেননা তা বরকতময় বৃক্ষ থেকে উৎপাদিত।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৮৫১) ৪. দুধ : রাসুলে আকরাম (সা.) দুধকে মানব প্রকৃতির অনুকূল খাদ্য বলেছেন। হাদিসে এসেছে, নবী (সা.) মিরাজের রাতের ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, ‘অতঃপর আমার সামনে দুটি পেয়ালা আনা হলো। একটিতে দুধ, অপরটিতে শরাব। আমাকে বলা হলো, আপনি যেটি ইচ্ছা গ্রহণ করতে পারেন। আমি দুধের পেয়ালাটি গ্রহণ করলাম আর তা পান করলাম। তখন আমাকে বলা হলো, আপনি ফিতরাত বা স্বভাবকেই গ্রহণ করে নিয়েছেন। আপনি যদি শরাব গ্রহণ করতেন, তবে আপনার উম্মত পথভ্রষ্ট হয়ে যেত।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৪৩৭) ৫. সারিদ : মহানবী (সা.) সারিদ খেতে পছন্দ করতেন। তিনি সারিদের প্রশংসা করে বলেন, ‘নারীদের ভেতর আয়েশার মর্যাদা যেমন, খাদ্যের মধ্যে সারিদের মর্যাদা তেমন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৪২৮) যেসব খাদ্য পছন্দ করতেন হাদিসে এমন কিছু খাবারের বর্ণনা পাওয়া যায়। যার ব্যাপারে নবীজি (সা.) সরাসরি প্রশংসা না করলেও তিনি তা খেতে পছন্দ করতেন, যা তার প্রশংসারই শামিল। যেমন— ৬. বাহুর গোশত : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্য গোশত আনা হলো এবং তাঁকে বাহুর গোশত পরিবেশন করা হলো। তিনি বাহুর গোশতই বেশি পছন্দ করতেন। তিনি তা দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে ছিঁড়ে চিবিয়ে খেলেন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৮৩৭) ৭. পনির : আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, তাবুকের ময়দানে নবীজি (সা.)-এর সামনে পনির পেশ করা হলো। তিনি ছুরি চাইলেন এবং বিসমিল্লাহ বলে তা টুকরা টুকরা করলেন। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ১৮১৯) ৮. যবের রুটি : আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস থেকে বোঝা যায় নবীজি (সা.)-এর পরিবারের সদস্যরা যবের রুটিতে তৃপ্তিবোধ করতেন। তিনি বলেন, মুহাম্মদ (সা.)-এর পরিবার তাঁর মৃত্যুর আগে পরপর দুদিন যবের রুটিতে তৃপ্ত হয়নি। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৯৭০) ৯. মধু : আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) মিষ্টান্ন ও মধু পছন্দ করতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৪৩১) ১০. মাখন : ইবনাই বিসর আল মুসলিমাইন (রা.) থেকে বর্ণিত, তাঁরা উভয়ে বলেন, ‘একবার আমাদের ঘরে রাসুল (সা.) আগমন করেন। আমরা তাঁর সম্মুখে মাখন ও খেজুর পরিবেশন করি। তিনি মাখন ও খেজুর পছন্দ করতেন।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৮৪৩) SHARES ইসলাম বিষয়: মহানবী (সা.)
মহানবী (সা.) ছিলেন মানবজাতির জন্য সর্বোত্তম আদর্শ। তিনি মুমিনের ইহকালীন ও পরকালীন উভয় জীবনের জন্য আদর্শ। যেমন খাদ্য ও পানীয়। নবীজি (সা.) পরিমিত ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করতেন।
তিনি সাহাবিদেরও উপকারী ও স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে উদ্বুদ্ধ করতেন। তিনি তা করেছেন সুষম, সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর খাবারের প্রশংসা করে। খাদ্যের গুণাগুণ বর্ণনায় নবীজির নীতি খাদ্যের গুণাগুণ বর্ণনা করার সময় নবীজি (সা.) সর্বদা ভারসাম্য রক্ষা করেছেন। আল্লামা ইবনুল কায়্যিম (রহ.) লেখেন, খাদ্যের ব্যাপারে মহানবী (সা.)-এর নির্দেশনা ও আদর্শ হলো তিনি উপস্থিত খাবার ফিরিয়ে দিতেন না এবং যা নেই তা নিয়ে ভাবতেন না।
কোনো হালাল ও উপাদেয় খাবার তাঁর সামনে উপস্থিত করা হলে তিনি তা গ্রহণ করতেন। খাবার রুচিসম্মত না হলে তা হালাল হলেও গ্রহণ করতেন না। তিনি কখনো খাবারের নিন্দা করতেন না। ভালো মনে হলে খেয়েছেন, না হলে এমনভাবে রেখে দিয়েছেন যেন সেটা তিনি অনভ্যাসবশতই রেখে দিয়েছেন।
নিজের অপছন্দ হলেই তিনি তা উম্মতের জন্য হারাম করেননি। (যাদুল মাআদ, পৃষ্ঠা-৯৫) যেসব খাবারের প্রশংসা করেছেন মহানবী (সা.) যেসব খাবারের প্রশংসা করেছেন তার কয়েকটি হলো— ১. খেজুর : রাসুলুল্লাহ (সা.) খেজুর খেতে পছন্দ করতেন। তিনি চাইতেন মুমিনের ঘরে খেজুর থাকুক। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, যে ঘরে খেজুর নেই সে ঘরের লোকেরা অভুক্ত। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৮৩১) খেজুরের ভেতর ‘আজওয়া’ প্রজাতির খেজুরের বিশেষ প্রশংসা করেছেন নবীজি (সা.)।
তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকালে সাতটি আজওয়া খাবে, সেদিন বিষ ও জাদু তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২০৪৭) ২. সিরকা : খাদ্য ও তরকারি হিসেবে মহানবী (সা.) সিরকার প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘সিরকা কতই না উত্তম তরকারি।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৩৮২০) ৩. জাইতুনের তেল : জাইতুনের তেলের প্রশংসা করেছেন নবী (সা.)। তিনি বলেন, ‘তোমরা জাইতুনের তেল খাও এবং তা মালিশ করো। কেননা তা বরকতময় বৃক্ষ থেকে উৎপাদিত।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৮৫১) ৪. দুধ : রাসুলে আকরাম (সা.) দুধকে মানব প্রকৃতির অনুকূল খাদ্য বলেছেন। হাদিসে এসেছে, নবী (সা.) মিরাজের রাতের ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, ‘অতঃপর আমার সামনে দুটি পেয়ালা আনা হলো। একটিতে দুধ, অপরটিতে শরাব। আমাকে বলা হলো, আপনি যেটি ইচ্ছা গ্রহণ করতে পারেন। আমি দুধের পেয়ালাটি গ্রহণ করলাম আর তা পান করলাম। তখন আমাকে বলা হলো, আপনি ফিতরাত বা স্বভাবকেই গ্রহণ করে নিয়েছেন। আপনি যদি শরাব গ্রহণ করতেন, তবে আপনার উম্মত পথভ্রষ্ট হয়ে যেত।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৪৩৭) ৫. সারিদ : মহানবী (সা.) সারিদ খেতে পছন্দ করতেন। তিনি সারিদের প্রশংসা করে বলেন, ‘নারীদের ভেতর আয়েশার মর্যাদা যেমন, খাদ্যের মধ্যে সারিদের মর্যাদা তেমন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৪২৮) যেসব খাদ্য পছন্দ করতেন হাদিসে এমন কিছু খাবারের বর্ণনা পাওয়া যায়। যার ব্যাপারে নবীজি (সা.) সরাসরি প্রশংসা না করলেও তিনি তা খেতে পছন্দ করতেন, যা তার প্রশংসারই শামিল। যেমন— ৬. বাহুর গোশত : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্য গোশত আনা হলো এবং তাঁকে বাহুর গোশত পরিবেশন করা হলো। তিনি বাহুর গোশতই বেশি পছন্দ করতেন। তিনি তা দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে ছিঁড়ে চিবিয়ে খেলেন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৮৩৭) ৭. পনির : আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, তাবুকের ময়দানে নবীজি (সা.)-এর সামনে পনির পেশ করা হলো। তিনি ছুরি চাইলেন এবং বিসমিল্লাহ বলে তা টুকরা টুকরা করলেন। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ১৮১৯) ৮. যবের রুটি : আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস থেকে বোঝা যায় নবীজি (সা.)-এর পরিবারের সদস্যরা যবের রুটিতে তৃপ্তিবোধ করতেন। তিনি বলেন, মুহাম্মদ (সা.)-এর পরিবার তাঁর মৃত্যুর আগে পরপর দুদিন যবের রুটিতে তৃপ্ত হয়নি। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৯৭০) ৯. মধু : আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) মিষ্টান্ন ও মধু পছন্দ করতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৪৩১) ১০. মাখন : ইবনাই বিসর আল মুসলিমাইন (রা.) থেকে বর্ণিত, তাঁরা উভয়ে বলেন, ‘একবার আমাদের ঘরে রাসুল (সা.) আগমন করেন। আমরা তাঁর সম্মুখে মাখন ও খেজুর পরিবেশন করি। তিনি মাখন ও খেজুর পছন্দ করতেন।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৮৪৩)