বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতি!!!

প্রকাশিত: ৩:৫৫ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২১, ২০২৪

 

বিশেষ প্রতিনিধি

গত ২৪/৯/২০০৩ তারিখে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর মো:হাসিবুর রশিদ কোনরকম উচ্চতর ডিগ্রী ছাড়াই চাকুরির মাত্র আট বছর এক মাসের অভিজ্ঞতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও পদোন্নতি /আপগ্রেডেশন নীতিমালা লংঘন করে বিশ্ববিদ্যালয় এর লোক প্রশাসন বিভাগে মোঃ আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদকে সহযোগী অধ্যাপক এর শূন্য পদে (গ্রেড ৪) নিয়োগ প্রদান করেন।অনিয়মের বিষয়টি একাধিকবার উপাচার্য মহোদয় কে লিখিতভাবে জানানো হয়। কিন্তু তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। পরে গত ১০/১০/২০২৩ তারিখে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যানের নিকট একটি অভিযোগ পত্র দায়ের করা হয়।অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসি গত ১৪/১২/২০২৩ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টারের কাছে সাত কার্য দিবসের মধ্যে এ সংক্রান্ত ডকুমেন্ট চেয়ে পত্র প্রেরণ করেন। এবং সাথে সাথে অভিযোগকারীকে কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অভিযোগের বিষয়ে দফাওয়ারি ডকুমেন্টস পাঠানোর নির্দেশনা প্রদান করেন। বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বরাবর অবহিত করা হলে গত ২১/০১/২০২৪ তারিখে দৈনিক ও সাম্প্রতিক অভিযোগ সেল এর পরিচালক উত্তম কুমার মন্ডল একটি পত্র অভিযোগের ছায়া লিপির সহ বিধিমতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইউজিসি এর চেয়ারম্যান এর নিকট প্রেরণ করেন। অভিযোগকারী কর্তৃক গত ১০/০১/২০২৪ তারিখে সকল ডকুমেন্ট ইউজিসি তে পাঠানোর জন্য রেজিস্টার অফিসে প্রদান করে রেজিস্টার দপ্তরের রিসিভ কপি সহ সকল ডকুমেন্টের একটি সেট অগ্রিম কপি হিসেবে রেজিস্টার ডাকে ইউজিসি তে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অভিযোগ কারীর স্বীকৃত কপিটি ইউজিসি তে ফরওয়ার্ড করা হয় না। উপরন্ত ইউজিসি প্রদত্ত পত্রে বলা হয় “কমিশনের চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর দাখিলকৃতপত্রটি যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অথবা যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট হতে না আসায় এবং বিশ্ববিদ্যালয় হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে কি আবেদনটি নিষ্ক্রিয় করা হলো “।
এদিকে ইউজিসির বাজেট পরীক্ষক দল ২৯-৩০ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের ও ২০২৪ ২০২৫ অর্থবছরের মূল বাজেট পরিক্ষান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকট প্রেরিত পরিপত্রে লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এর শূন্য পদে আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ এর নিয়োগ অনিয়মের বিষয়টি চিহ্নিত করেন এবং উল্লেখ করেন যে –
“গত ২৭ অক্টোবর ২০২২ ইং তারিখে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত সহযোগী অধ্যাপক পদে প্রাপ্তির জন্য এমপিকিউ অনুযায়ী উক্ত পদে নিয়োগ প্রাপ্তির জন্য পিএইচডি/এমফিল ডিগ্রি ব্যথিত আবেদন করা যাবে না। পিএইচডি ডিগ্রী সম্মিলিত প্রার্থীর ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সাত বছরের অভিজ্ঞতার মধ্যে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে ন্যূনতম চার বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এমফিল ডিগ্রি সম্মলিত প্রার্থীর ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ১০ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার মধ্যে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কমপক্ষে ৫ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। অভ্যন্তরীণ প্রার্থীর ক্ষেত্রে যে কোন একটি শর্ত শিথিলযোগ্য।”
ব্যক্তিগত নথি পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, জনাব আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ এর পিএইচডি বা এমফিল ডিগ্রী না থাকায় শিক্ষক পদে শিক্ষাগত যোগ্যতার শিথিলের কোন সুযোগ নেই। অভ্যন্তরীণ প্রার্থীর ক্ষেত্রে যেকোনো একটি শর্ত শিথিলযোগ্য হিসেবে প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা শর্ত শিথিল করে আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। প্রার্থীর আবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, আবেদনের তারিখে তার সর্বমোট অভিজ্ঞতা আট বছর এক মাস নয় দিন যা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত ন্যূনতম অভিজ্ঞতার চেয়ে কম। প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় এর লোক প্রশাসন বিভাগে জনাব আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদকে সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগ দান করায় নিয়মের ব্যত্যয় ও আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে যাচাই বাছাই করে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা সত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।