কুমিল্লার চান্দিনায় সরকারি হাসপাতালে অফিস সময়ে রোগী না দেখে দরজা আগলে সন্তানকে পড়ান চিকিৎসক!

প্রকাশিত: ৯:১৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২, ২০২৪

 

বিশেষ প্রতিনিধি কুমিল্লা

সকাল সাড়ে ১০টা। চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীর উপস্থিতিতে তখন কানায় কানায় পূর্ণ হাসপাতাল। প্রতিটি বিভাগের চিকিৎসকের চেম্বারের সামনে রোগীর দীর্ঘলাইন। ওই হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক গিয়াস উদ্দিন হাসপাতাল কক্ষের দরজা আগলে নিজের সন্তানকে পড়াতে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। চেম্বারের সামনে রোগীদের উদ্ভট আচরণে কর্তব্যরত সাংবাদিক ওই কক্ষে প্রবেশ করতেই রেগে অসদাচরণ করতেও দেখা গেছে ডা. গিয়াস উদ্দিনকে।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বর্হিবিভাগের একটি কক্ষে ডা. গিয়াস উদ্দিনের সন্তানকে পড়ানোর ওই দৃশ্য চোখে পড়ে।

সরকারি বিধি মোতাবেক হাসপাতালগুলোতে সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বহির্বিভাগে রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার কথা থাকলেও ডা. গিয়াস উদ্দিন হাসপাতালে আসেন নিজের ইচ্ছেমত। নিয়মানুযায়ী ৬ ঘন্টা রোগী দেখার কথা থাকলেও তিনি কখনও ১-২ ঘন্টার বেশি রোগী দেখেন না। এমন অভিযোগ সর্ব

হাসপাতালে আগত সেবা গ্রহীতা একাধিক রোগী জানান, সকাল ৮টা থেকে বসে আছি। তিনি (ডা. গিয়াস উদ্দিন) এসেছেন ১০টার পর। এসেই দরজা বন্ধ করে রেখেছেন। কেন দরজা বন্ধ করে রেখেছেন আমরা কিছুই বুঝতে পারিনি। পরে সাংবাদিক এসে ওই কক্ষে ঢুকে দেখেন ডাক্তার গিয়াস উদ্দিন আমাদের ঘন্টার পর ঘন্টা বসিয়ে রেখে দরজা বন্ধ করে নিজের সন্তানকে পড়ান!

ইতোমধ্যে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন ঘটলেও ক্ষমতার দাম্ভিকতা কাটেনি ডা. গিয়াস উদ্দিনের। বেপরোয়া হয়ে চিকিৎসার মতো মহান পেশাকে রীতিমতো ব্যবসায় পরিণত করেছেন তিনি।

অভিযোগ রয়েছেন সকাল ৮টা থেকে নিজের প্রতিষ্ঠিত ‘মাহি ডায়াগনস্টিক এন্ড থেরাপি সেন্টারে’ রোগী দেখেন ডা. গিয়াস উদ্দিন। সকাল ১০টা পর্যন্ত নিজের ব্যক্তিগত হাসপাতালে রোগী দেখার পর যান কর্মস্থলে। সেখানে নিজের খেয়াল খুশিমতো রোগী দেখে দুপুর ১টা বাজার আগেই সরকারি হাসপাতাল ত্যাগ করেন। দুপুর ২টা থেকে আবারও নিজের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ১ হাজার টাকা ফি তে রোগী দেখেন রাত ১০ পর্যন্ত।

হাসপাতালের কক্ষে দরজা আগলে সন্তান পড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে ডা. গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘তোমার কি সমস্যা? আমি কি করবো না করবো, সেটা কি তোমার কাছ থেকে জেনে করতে হবে? আমার সন্তানকে না পড়িয়ে তোমাকে পড়াবো নাকি? আমার ওয়াইফও ডাক্তার। আমার সন্তানকে কি খালি বাসায় রেখে আসবো নাকি?

চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরিফুর রহমান এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আক্তার এর ব্যবহৃত ফোনে একাধিক বার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।